ধারাবাহিক রম্য রচনায় সংযুক্তা দত্ত – ১৯

দূগ্গা পুজা শেষ। আবার সেই দিন গোনা শুরু। আমাদের তো মোটামুটি তিনটি ভাগে ভাগ হয় বছর। পুজোর আগে, পুজোর সময় আর পুজোর পর।
তবে আরো একটা সাংঘাতিক সময় পেরিয়ে এসেছি, সেই স্মৃতি সবার মনেই এখনো তাজা, তার নাম ছিল – লকডাউন।
সে এক অদ্ভূত সময় গেছে। সবাই বাড়িতে, সেখানেই অফিস, সেখানেই স্কুল,সেখানেই কলেজ। এঘরে মিটিং তো ওঘরে ক্লাস থ্রি র অংক ক্লাস আবার আরেক ঘরে ক্লাস টুয়েলভের ইকোনমিক্স ক্লাস চলছে। প্রথম কিছু দিন বেশ মজায় কেটেছিল। তারপর শুরু হল একদিকে রোগের আতঙ্ক আরেকদিকে হতাশা।
কথায় বলে শেষ মানে শেষ নয়, এক নতুন শুরু। মন ভালো করতে সবাই যে যার পুরোনো শখ লফ্ট থেকে নামিয়ে ঝাড়াঝুড়ি করছে। কারুর হারমোনিয়াম তো কারুর কবিতার হলদে হয়ে যাওয়া খাতা তো কারুর এমব্রয়ডারির সরঞ্জামের বাক্স।
আমিও মন ভালো করতে পায়ে বেঁধে নিলাম ঘুঙুর। এবার শুধু নিজের মন ভালো করলেই তো হবে না, পাশে যারা আছে তাদের কথাও তো ভাবতে হবে। আর আমার কন‍্যারত্ন তো আমারই মত নাচ পাগল আর হবে নাই বা কেন? সে গল্প তো আগেই বলেছি জন্মাবার আগেই সে আমার সাথে নেচে নিয়েছে। আর ভিডিওটি তোলার জন‍্য ছিল বর, মানে আর তো উপায় ছিল না। ওরও পালাবার পথ ছিল না।
দুজনে মিলে ঘরের সোফা ঠেলে জায়গা করে নেচেছিলাম। কিছুই বুঝতাম না, কোন আঙ্গেল থেকে ভালো তুললে ভালো হবে, গানটা কী ভাবে জুড়তে হবে, কিছুই জানতাম না।আমার খুব পছন্দের এক গানের সঙ্গে নেচেছিলাম, “ও আলোর পথযাত্রী”। আশার আলো বড্ড প্রয়োজন ছিল যে।

Spread the love

You may also like...

error: Content is protected !!