কাব্যক্রমে শিপ্রা দে
by
·
Published
· Updated
১| দুরন্ত প্রেম
একদা দুজনে পুষ্প কাননে
ঝুলেছে বকুল ডালে
বসে পাশাপাশি কতো হাসাহাসি
সেই যৌবন কালে।
হৃদয়ের টানে নয়নে নয়নে
দুজনের বোঝাবুঝি
একটু শরম একটু শরণ
হৃদয়ের খোঁজাখুঁজি।
বসন্ত বেলা দুরন্ত খেলা
পলাশের বন ছুঁয়ে
শিমুল আগুনে মলয় ফাগুনে
আদুরে আলাপ চুয়ে।
পুকুরের পাড়ে বসে একধারে
দুজনের হাতে হাত
চোখের ভাষাতে মনের আশাতে
মাতোয়ারা দিবারাত।
চঞ্চল আঁখি প্রেম সুধা মাখি
উতলা হৃদয় প্রাণে
রাগে অনুরাগে কতো প্রেম জাগে
বুঝে নেয় তার মানে।
কাছাকাছি এসে যায় ভালোবেসে
দিগন্ত জুড়ে চাঁদ
বলে কানে কানে কথা গানে গানে
ছুঁয়ে দিতে হয় সাধ।
খুলে গেল দ্বার মন দরজার
একাত্ম হয় মন
ওষ্ঠ অধর ছুঁয়ে শশধর
কি জানি কতক্ষণ!
সময়ের সাথে নিশীথের রাতে
সে চাঁদ কখন ম্লান
শেষ হয় রাত নিভু বাঁকা চাঁদ
পাখিদের কলতান।
পুকুরের পাশে পূবালী আকাশে
সোনালী রোদের হাসি
বকুলের গাছ ভোমরের নাচ
আনন্দে যায় ভাসি।
২| কালনিশা
বসন্ত যাপনের দিন ছিল মধুময়
ফুলে ফুলে প্রজাপতি মনোহর অতি হয়
মুকুলের ঘ্রাণে ছিল মধুপের ব্যস্ততা
মৌমাছি ফুলে ফুলে করছিল সখ্যতা।
পলাশের আঙিনায় মাদলের ওঠে বোল
বলেছিল গৃহবাসী ওরে তোরা দ্বার খোল।
আচমকা সময়ের তির্যক লাল চোখ
ইশারায় বলে তাকে রোখ ভাই রোখ রোখ।
দখিনের বাতায়নে মরণের রোগ বসে
বেহিসেবি বেপরোয়া হিসাবের খাতা কষে।
বৈশাখী ঝড় এলো উঠোনের কোণে কোণে
অভিমানী পলাশের ধূসরতা এলো বনে।
কোকিলের স্তব্ধতা জানালার একাধারে
উঠোনের ঝরা পাতা আজ কেউ নাহি মাড়ে।
বেঁচে থাকার প্রবল ইচ্ছেটুকু চার দেওয়ালের আবর্তে।
বিষাদময় দিন যাপন অজানা আশঙ্কাতে
দিন কাটায় জানলা ধরে
উপেক্ষার প্রহরে।
কড়কড়ে কালো মেঘ কি ভীষণ দ্যাখো তেজ
একসাথে কাবু করে বসন্ত শেষ সেজ।
আজ সবে প্রতিপদ চাঁদ কেন অসহায়
ধীরে ধীরে মন কেন ডুবে যায় অনীহায়!
ঘুলঘুলির পায়রা বড়ো বেশি চুপচাপ
কার্নিশে কালো মেঘ সাঁঝ নামে ঝপাঝপ।
কালনিশা কেটে যাবে অগোচর নয় কারো
স্মৃতি রেখে যাবে খালি বাকি সব ছাড়ো ছাড়ো।
দেরি নেই এলো বুঝি পূর্ণিমা রাত ওই
বলে গেল কানে কানে শুভাশিষ পই পই।
কদিনের জারিজুরি অরুণের খেলা ঘরে
হেরে গিয়ে ফিরে যাবে শেষে তার পথ ধরে।
খাতা ভরে ইতিহাস লিখে রেখো আজন্ম।
হাতে পাবে ক্ষত কিছু আগামীর প্রজন্ম