ধারাবাহিক রম্য রচনায় সংযুক্তা দত্ত – ২৩

 

নাচ, কত যে ঘটনা বলে বলে শেষই হবে না। ছোটবেলা, মাঝারি বেলা, বড়বেলা অনেক রকম গল্প তো হল। এবার একটু নাচ ও দুর্ঘটনার গল্প করি। সেটাও তো একখানা বড় খন্ড অভিজ্ঞতার ঝুলিতে ভরা।
লেক ক্লাবের ” নাচ বালিয়ে” নিয়ে আগেও বলেছি, তবে তা শুধু পুরষ্কারের গপ্পো। একবার ঠিক হল আমি আর কুশল কাকা( কাকা বলছি বলে ভেবো না বয়স্ক, তিনি মোস্ট ওয়ান্টেড ড‍্যান্স পার্টনার ) কিশোর কুমারের ‘ চলতি কা নাম গাড়ি ‘ সিনেমার বিখ্যাত গান ‘ পাঁচ রূপাইয়া বারা আনা” সঙ্গে পারর্ফম করব। পামলু কাকি ( কুশল কাকার বউ), তার মাথায় হরেকরকম আইডিয়ার কারখানা সে মঞ্চ সজ্জার ডিজাইন করল বিভিন্ন সাইজের ফুলের টব দিয়ে। আমার এন্ট্রি হবে সেই টবগুলির মধ‍্যে দিয়ে এঁকে বেঁকে, বেশ একখানা সিনেমা সিনেমা স্টাইল আর কি। আমিও সিফন শাড়ীতে মধুবালা সেজে রেডি। যেই না টবের মাঝে মাঝে নেচে নেচে ঢুকতে যাব, খ‍্যাঁচ করে টবের খোঁচা খেয়ে সিফন শাড়ী ছিঁড়ল সেই সঙ্গে গোড়ালির পাশটাও কেটে গেল বুঝতে পারলাম কিন্তু ওই যে আমার হাসিখানা, তা একটুও ম্লান হতে দি নি।
আর একটা ঘটনা , সেটাও নাচ বালিয়ে আর কুশলকাকা ড‍্যন্স পার্টনার। মর্জিনা আবদাল্লা সেজেছি, ‘ মার ঝাড়ু মার ঝাড়ু, দিব‍্যি ঝাড়ু হাতে নাচছি। একটা স্টেপ ছিল মর্জিনা আর আবদাল্লা ঝাড়ু নিয়ে টানাটানি করছে। সেই স্টেপ করতে গিয়ে ঢকাস্ করে মাথায় লম্বা ঝাড়ুর লাঠি পড়ল। এক মুহুর্তের জন‍্য চোখে অন্ধকার দেখলাম তবে ওই এক মুহুর্তের জন‍্যই। দর্শক কিন্তু কিছু বোঝে নি।
এছাড়াও প্রচুর বার পেরেকে পা কেটেছি, শাড়ী ছিড়েছি তবে শো কিন্তু থামেও নি বা কোন দর্শক টেরটিও পায় নি। তবে এগুলো কোন সাংঘাতিক ব‍্যাপার নয়, স্টেজে উঠলেই এ‍্যড্রিনালিন সিক্রিশনটায় এমন হয়, মনে আর কিছুই থাকে না, শুধু একটাই ইষ্ট মন্ত্র ‘ দ‍্য শো মাষ্ট গো ওন’।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।