ক্যাফে কাব্যে সুজিত চট্টোপাধ্যায়
প্রেমের এপিটাফ
হেই পলাশবালা! কুথাকে যেছিস?
মুকে টুকদু যা বল্যে…
চল কেনে ফাঁকবাগে উ শালবীথির জঙ্গলে,
উ পটে সাদা খরগোশরা যেমন নির্ভয়ে খেলে,
তেমনই খেলবো তুর সাথকে;
তুর শরীরে এঁকে দিব হাজার চুমো।
শরীর থিক্যে রঙ চুঁয়াই চুঁয়াই পইড়ে
ভাসাই দিব্যেক মোদের,
শালপাতার বিছানায়,
পলাশ শিমুলের চাদরে শুইয়ে….
তু বইলবি মুকে
” হেই! ঘুমো, ইখন ঘুমো “।
হাজার চুমোর পরেও দিয়ে ফাউ
আরো এক চুমো…
বইলবো তুকে; ” হেই পলাশবালা!
লিশা টো খুউব জম্যে ইকখন ক্ষীর,
মোর মাথার ভিতর শব্দের কিলবিল,
বিনা ছন্দের ভীড়।
পিঠ পেত্যে শু কেনে;
তুর পিঠ্যে লিখে দিই
কিষ্ট রাধার প্রেমের মহাকাব্য।
তারপর ঘুমাই যাব্যো,
ইক্কেবারে ঘুমাই যাব্যো ।
শরীরী আরামে ঘুমিয়ে উঠার পর…
মুকে তু ডাকবি খুউব;
তখন জঙ্গলের আকাশে শাল শিমুলের ফাঁক দিয়ে
একটা গোল চাঁদ আমার শরীলটো জ্যোৎস্নার চাদরে ঢেকেছে।
মাছি আর ডাশগুলান
আমার মুখের হাড়িয়ার রসে
নৈশভোজ সেরে লিচ্ছে।
উয়ারা জেন্যে গ্যাছে….
সুর্য্যার আর কোনো প্রতিবাদ, প্রতিরোধ
আইসব্যেক না।
তু শেষবারের মতো আরো একবার
ডুকরাই অন্ধকার কাঁপিয়ে চিৎকার কইরে ডাকবি..
সূর্য্যা আ আ আ! সুর্য্যা রে!!!
রাতচড়া পাখীগুলান মাথার ওপর থিক্যে
উয়াদ্যার ভাষায় বইলবে…
” চুপ যা কেনে! দেখছিস না উ ঘুমাইছে “।
তুর পিঠের পাতায় হাড়িয়া শুকাই
লিখা হইয়ে থাইকব্যেক…
পলাশবালা আর সূর্য্যার
প্রেমের এপিটাফ ।