• Uncategorized
  • 0

সম্পাদকীয়

বইয়ের তাক ঘেঁটে মলাটের গন্ধ আর স্টিকার

পুরোনোকে ধরে রাখা ভীষণ কষ্টকর, আবার ছেড়ে দিতেও মন চায় না। অন্ধকারে হোক, কিংবা জং-ধরা সকালের রোদের ফিকে হয়ে যাওয়া আলোর আবহে, বইয়ের তাকের বৈচিত্র ফুরোয়না, অমলিন থাকে। বইয়ের তাক ঘেঁটে কুড়িয়ে পাই তোমাদের মতোই ছোটবেলা, বাঁশি, হারিয়ে যাওয়া বইয়ের সোঁদা গন্ধের মলাট, মায়ের গানের ডায়েরি, অপটু হাতে লেখা কবিতার খসড়া আর পাইনকোন। সেই কোনো এক বছরে, যেবার মানালি শহরে দুধসাদা বরফ পড়েছিল, ঠিক সেবারের মতোই গুঁড়ো গুঁড়ো বরফের স্মৃতি খুঁজে পাই পোস্টকার্ড-কোণে। হাত রাখি ছোট ছোট সোনালী মিনারের চূড়ায়, বাবার পুরোনো রেকর্ডারে, ঘূর্ণি-সুতো ছিঁড়ে যাওয়া মনকেমনগুলো হালুমহুলুম করে ঝাঁপিয়ে পড়ে ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ আর ‘আবোল তাবোলের পাতায়।’
ছোটদের জন্যে লিখি, লিখে পড়ি, পড়ে কখনো কখনো ওই বইয়ের তাকের এক কোণায় ‘রিপ ভ্যান উইংকল’ ঘুম থেকে উঠে আড়মোড়া ভাঙে। সচক্ষে দেখে নেয় দ্রবীভূত হওয়া সন্ধ্যা, কার্টিজ পেপারের সৈনিক যুদ্ধের অস্ত্র শানায় বারংবার, কয়েকটা মলাট খসখসে, কয়েকটা দোটানায় ভোগে, যদি বা আলতো করে সাতটি তারার তিমিরে মায়াজাল বুনতে হয় ঠিক আমার মতো করেই! বইয়ের তাকেই স্টিকার খুঁজি, নীল-সাদা-কমলা-গোলাপি, ল্যাভেণ্ডার-সুগন্ধি নাইটক্রিম আর স্কুল-পালানো পোস্টারে আগুনখেকো ব্যাটসম্যান- ভাবতে থাকি, সেই যে গাড়ির বিজ্ঞাপনে স্টিকার লাগিয়েছিলাম, বাইশ গজের ঝলকানি থেকে সিন্থেসাইজারের নোটেশন- সবগুলোতেই তাক থেকে স্মৃতি ঝরে পড়ে, পোড়-খাওয়া দিদিমণি হয়েও স্মৃতির সাম্রাজ্যের বাইরে যাওয়াটা প্রায় দুর্বিসহ হয়ে ওঠে। কে জানে, বইয়ের তাকগুলো হয়তো এরকমই হয়।
তোমরা লেখা/ আঁকা পাঠাও। ছোটরা, আর বড়রা যারা ছোটদের জন্যে লেখো, তারাও লেখা, ভ্রমণ, গল্প, কবিতা পাঠাও।
মেইল করো: sreesup@gmail.com / techtouchtalk@gmail.com

শ্রীতন্বী চক্রবর্তী

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।