কর্ণফুলি গল্প বলায় স্বপঞ্জয় চৌধুরী (পর্ব – ২)

পরজীবী

 

দুই.

এ বাড়িতে যে তিনটে প্রাণি আছে তা যেন সবাই ভুলে গিয়েছেন এই মুহূর্তে। রাত বাড়ছে, বাড়িতে আস্তে আস্তে নির্জনতা নেমে এসেছে। সবাই বাতি নিভিয়ে যে যার মতো শুয়ে পড়েছে। সেলিনা আস্তে করে দরজা খুলে খাবার রুমে গেল। ফ্রিজ থেকে কিছু পোলাও আর মাংসের বাটিটি নিয়ে নিজেদের গুদাম ঘরে প্রবেশ করলো। ছেলে-মেয়ে দুটো ক্ষুধায় কোঁকাতে কোঁকাতে ঘুমিয়ে পড়েছে। সেলিনা আস্তে আস্তে ঝাঁকুনি দিয়ে ছেলে-মেয়েকে ডাকছেন- ‘এই সাদিব বাবা ওঠ’ ‘আম্মু সুকন্যা উঠো মা’। চোখ কচলে কচলে সাদিব ঘুম থেকে ওঠে মা মাংসের ঝোলের সাথে ভাত মাখিয়ে লোকমা পাকিয়ে একবার সাদিবকে আর একবার সুকন্যার মুখে পুড়ে দেন। সাদিব মায়ের কান্নারত মুখ থেকে চোখের জল মুছে দেন। কাইদোনা মা, আ-আমি তোমাকে এ-এত্তো বড় একটা বাড়ি বানিয়ে দেব। আব্বা ভালো না, ওরা কেউ ভালোনা। দরজা ঠেলে সেলিনার শাশুড়ি প্রবেশ করে ঘড়ে। এই যে সেলিনা শুনো। বাড়িতে নতুন বউ এসেছে। খুব সকাল সকাল উঠে কাজে হাত লাগাবে। আর এই বানরমুখো দুটো যেন এ ঘর থেকে বাহিরে না যায়। খুব সকাল সকাল উঠে কাজে হাত লাগাতে হবে। নতুন বউয়ের সামনে কোনো প্রকার সিনক্রিয়েট করবে না। অথবা তোমার আচরণে যাতে ওরা কোনো সন্দেহ না করে। আমরা বলেছি আগের বউ অন্য লোক নিয়ে পালিয়েছে। তাই ঘুনাক্ষরেও যেন জানতে না পারে তোমরা এখানে থাকো। আর যদি বেশি বাড়াবাড়ি করো তাহলে তোমাদের জায়গা এ বাড়িতে নয় খোলা আকাশের নিচে ।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।