T3 শারদ সংখ্যা ২০২২ || তব অচিন্ত্য রূপ || বিশেষ সংখ্যায় শুভজিৎ বোস

চাওয়া পাওয়া

প্রসেনজিৎ সেনের পরিবারের এখন খুব অভাবে দিন কাটছে।বহু দোকানে বাকি পড়ে গিয়েছে।রমলা সেন ওনার চিকিৎসাও করিয়ে উঠতে পারছেন না।ছেলে জিকোর স্কুলের খরচ প্রচুর,সেদিন স্কুলের ম্যাডাম বলে দিয়েছে -“কম্পিউটার বইটা তুই যদি তিন চার দিনের মধ্যে কিনে না নিস তাহলে খুব মুশকিলে পড়বি,ফাইনাল পরীক্ষার আর পাঁচদিন বাকি।” জিকো মাকে বইয়ের কথা বললে রমলা বলে – “ বাবা বাড়ির গাছের নারকেল বিক্রির টাকাটা পেলেই তোকে আমি বইটি কিনে দেব।”পরের দিন জিকো স্কুল থেকে বাড়িতে এসে ওর মাটির ঘটটি ভাঙ্গলে দেখে সেখানে তিরিশ টাকা পড়ে আছে,কিন্তু বইয়ের দাম হলো একশো টাকা!ও ঘটের সেই তিরিশ টাকা পকেটে নিয়ে বিকেলে কাউকে কিছু না বলেই বেরিয়ে পড়ে দূর মার্কেটের এক বইয়ের দোকানে।দোকানদারের কাছে বইটি ও চায়,আর বলে –“ কাকু আমার কাছে তিরিশ টাকা আছে,বাকি টাকাটা দিতে একটু দেরি হলে কোন অসুবিধে আছে?বইটি না কিনলে যে আমি পরীক্ষায় পাশ করতে পারব না !” দোকানদার – “ লাগবে না কোন টাকা!তুমি নিয়ে যাও বইটি!” জিকো – “কাকু তুমি রাগ করছো?” “না রাগ না,তুমি নিয়ে যাও বইটি,আমি কিচ্ছু বলব না!” “কোন টাকা না দিয়ে কিভাবে নেব বলোতো কাকু!” লোকটি নিজের চোখের গড়িয়ে পড়া জল মুছতে মুছতে,”তোমার বাবাকে ছাত্রজীবনে আমি টিউশনের টাকা কোনদিন দিতে পারিনি!ওনার জন্যই আমার আজ চার-চারটি বড় দোকান এই নিউ মার্কেটে!তোমার কোনদিন কোনকিছু বা বইয়ের প্রয়োজন হলে তোমার এই কাকু’টাকে একটি বার মুখফুটে বোলো,যেটুকু পারব করব তোমাদের জন্য।”জিকোর চোখ জলে ভরে ওঠে,ও বই নিয়ে মহা আনন্দে বাড়ি ফিরে যায়।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।