T3 || ১লা বৈশাখ || বিশেষ সংখ্যায় শাশ্বত বোস

জারজ

আমি ঈশ্বর দেখিনি, কখনো আমার নিদ্রিত ইন্দ্রিয়ে এসে জমা হয়নি, অনির্বচনীয় মহাজাগতিক সুঘ্রাণ|
পঙ্কিল ক্লেদ আর বিবশতার মাঝেই চিরকাল আমার সদর্প পদচারণ|
“এই ছেলে দিগল পাহাড়ি যাবে?”, আমায় কখনো বলেনি কেউ, কেউ দেয়নি নির্মল, অনল্প আলোকবর্তিকার সন্ধান|
সুরবাহারের মূর্ছনায় মেঘমল্লার কিংবা পাখোয়াজের বিস্তারে খাম্বাজ, চিরকালই আমার কাছে অপ্রণিধানা|
বদলে মধ্যরাতের শরীরে, চিরস্থায়ী ক্ষত জন্ম দেয় বিরংসার, আমার অন্তরে বেজে যায়, তাপদগ্ধ উষর মালকোষ|
“মা” ডাকের আকুল পিয়াসা, অনন্তকালের মন্ত্র নিনাদে ধ্বনিত করেছে, উরোজে অদুগ্ধ তিতিক্ষা|
আমি “জারজ”, কালের গর্ভে অজপা মন্ত্রের ধারাপাতে, উদ্যাপিত দৌর্মনস্য ধূমকেতু আমি|
স্বর্গের নন্দনকাননে, ওজস্বী ভ্রমরের চৌর্যবৃত্তি যেমন জন্ম দেয় নির্বাত পারিজাতের,
বৈবস্বতঃ কালে ওস্তাদের প্রেষিত আলাপে, যেমন প্রিয়ম্বদার অমিয়া জঠরে জন্ম নেয় বিরহী চারুকেশী,
আমিও এসেছি তেমন, জননকোষের শারীরবৃত্তিয় কৌশলরোধে নিষেকের প্রারম্ভে|
কোনো অপ্সরার গর্ভনালী ছিঁড়ে, অনাদ্র, পাংশু দানবের মতো|
হয়তো বা কোনো শবচ্ছেদের ঘরে, মাঘী শীতের অনুষ্ণ পরশে, মালশ্রী লিখে চলেছে আমার শাম্ভবী|
যোগ্য বাদ্যসঙ্গতে, নব্য রুধির দ্রাক্ষায়ণে, শব্দকোষ রচনায় মগ্ন ক্লান্ত ভানুসিংহ|
ঘুমহীন রাতের আভেরী জড়িমা, আমায় বদ্ধ করে অপ্রেমিক গ্লেসিয়ারে|
আসলে জননীর যোনিপথে মূর্ত আমি, রক্তিম অক্ষরমালার বিপ্লবী সম্ভাষণে||

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।