|| অণুগল্প ১-বৈশাখে || বিশেষ সংখ্যায় সুদীপ্তা বন্দ্যোপাধ্যায়

ফেরা
পয়লা বৈশাখ, নববর্ষ। বারবার ঘড়ি দেখছেন ধীরা। পুপলু বলেছিল, এগারোটার মধ্যে দমদম এয়ারপোর্টে পৌঁছে যাবে। , ধীরার তৎপরতা দেখে হাসছিলেন রঞ্জিতবাবু। চিরদিন ছেলে নিয়ে অবসেসড ধীরা। মেধাবী ছেলে পড়াশোনায় বিশেষ বেগ দেয়নি। জয়েন্টে ভালো র্যাঙ্ক করে মেডিক্যাল পড়েছে, বিদেশী স্কলারশিপে বছর কুড়ি টরন্টোতে সেটেল। প্রতিষ্ঠিত কার্ডিয়ো থোরাসিক সার্জেন।
আটচল্লিশের ছেলে, সাতবছর পর ফিরছে। চিন্তায় ঘুম উড়েছে মায়ের। অথচ ছেলের সব মনে আছে। মা খোঁজ নিচ্ছিল, গাজনের সঙ বেড়োয় এখনো? নিষ্ঠাবান পুরোহিত ব্যানার্জিজেঠু কাকভোরে স্নান সেরে পূজোয় বসেন? এমনকি পাড়ার কট্টর মোহনবাগানী মানিকের চায়ের দোকানের আড্ডায় আজও ধুন্ধুমার চলে ইষ্টবেঙ্গলের হার্ডকোর সাপোর্টার মানুদার সাথে ? সব খবর নেওয়া চাই।
প্রবাসী . সন্তানদের নিয়ে গর্বিত একাকী বাবা-মায়েরা। ওঁরা ব্যতিক্রম। , ব্যক্তিগত সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য দেশত্যাগ স্বার্থপরতার নামান্তর। মনের গহীনে চাপা কষ্ট, ছেলেকে বোধহয় ‘মানুষ’ করতে পারেননি!
ভুল ভাঙলো একটা ফোনকলে। , ছেলে বলেছিল, দেশে ফিরছে। , যান্ত্রিক, জীবনযাপনে ক্লান্তি এসেছে। ছেলে তাতাই যন্ত্রমানব তৈরি হচ্ছে। ধীরা তৃপ্ত হয়েছিলেন, সন্তানকে মানুষ করতে পেরেছেন বলে।