কবিতায় পদ্মা-যমুনা তে শিশির আজম (গুচ্ছ কবিতা)

 

কামরুল হাসানের মেয়েরা

কামরুল হাসানকে আমি পছন্দ করতাম উনি ছবি আঁকতেন
আটপৌরে জীবনের ছবি জীবনের অশ্রু উপত্যকা অবিমৃষ্যকারিতা
নিজেকে বলতেন পটুয়া
আর নিয়মিত স্বাস্থ্যচর্চা করতেন
হ্যা
ওনার স্বাস্থ্য বেশ আকর্ষণীয় ছিল বলা যায়
আর ওনার ছবির মেয়েদের স্বাস্থ্যও ভাল ছিল
যদিও তা বতেরো বা সুলতানের মেয়েদের মতো পেশিবহুল না
আর এরা কেউ স্বাস্থ্যচর্চা করতেন বলেও শোনা যায়নি
যা হোক
কামরুলের মেয়েদেরকে আমরা কতভাবেই না দেখেছি
নিরুদ্বেগ আর অনায়াশ ভঙ্গিতে সাজতে
জানালা সামান্য ফাঁক করে বাইরেটা উঁকি দিয়ে দেখতে
নাইওর যেতে
আর আপনারা জানেন কি না জানি না পার্টির কাজ হিসেবে
কলকাতায় থাকাকালীন
একসময় উনি কিছু পোস্টার এঁকেছিলেন
সেই পোস্টারগুলোতে কিছু মেয়ে ছিল
আকর্ষণীয় স্বাস্থ্যের
যদিও ওদের চোখগুলো ছিল আরও আকর্ষণীয়
কিন্তু পুলিশ ঐ চোখগুলোকেই চিহ্নিত করেছিল মারাত্মক অনিষ্টকর হিসেবে
আর প্রতিহিংসাপরায়ণ
আর রাষ্ট্রদ্রোহী
আচ্ছা ঐ মেয়েগুলো এখন কোথায় কেউ বলতে পারেন

 

 

 

আজ বিকেলে

মেয়েদের শরীর আমার ভালো লাগে না
আজ বিকেলে
আমার কোন মেয়ে নেই

গাছের নিচে গরু বাঁধা রয়েছে
বৃষ্টিতে ভিজছে
ও ভিজুক
ওর জ্বর আসুক

মাঝেমাঝে আমাদের গ্রামে মেঘেরা
বেড়াতে আসে
মেয়েদের সঙ্গে তো ওদের
লেগে যায় যায়

 

 

মারিয়া

তখন আমি ছিলাম পিটার্সবুর্গে
মারিয়া
মারিয়া শারাপোভা
ছিল মাত্র দশ বছরের

তখনই বুঝেছিলাম ওর টেনিস রাকেট
আর ওর সুপাররিয়াল বডিকমিউনিটি
ত্রাসিত অর্থহীনতায়
অনেকদিন পৃথিবীকে ভোগাবে

এখন রুবল আর ডলারের কৌমকালচারে কী সম্পর্ক
ও ধরতে পারে
শুনতে পায় ফিসফিসানি দূর ক্রেমিলি ক্রেমলে
সঙ্গে সার্বক্ষণিক সেক্রেটারি থাকা সত্বেও

যা হোক একটা ব্যাপারে ওকে
সাবধান করেছিলাম আমি
কিন্তু ও তো এখনও বড়ই হয়নি
আর পিটার্সবুর্গ শহরটাও ঠান্ডা

 

 

দুপুর ১২ টা হইতে সন্ধ্যা ৬ টা অব্দি ঘুম

দুপুর ঠিক ১২ টা হইতে সন্ধ্যা ৬ টা
ঘুমাইলাম

এই সময়ের ভেতর বিশ্বসংসারে
আমি নিশ্চিত
আহামরি মারাত্মক কিছু ঘটে নাই

মায়ের পোষা এক লাল মোরগ আছিল
লাল ঝুঁটি
ওইটার গলায় বিড়াল দাঁত বসাইছে
আমি টের পাইছি কিন্তু কিছু বলি নাই

কিন্তু আমি বিস্মিত হইছি এই ব্যাপারটায় :
হয় তো সকাল ১১ টা তখন
একটা মাত্র লিঙ্গ
আমার
এই যে এইটা
এইটারে
একবার
দুইবার
তিনবার
তুমি গিল্যা নিলা
গিল্যা নিলা আবার বাইর কইরা আনলা
স্মুথলি
টানা ১৭ মিনিট
এইভাবে
কোন রকম বিপত্তি ছাড়াই
কোন
রকম
বিপত্তি
ছাড়াই

কীভাবে

 

 

হিমালয়

মনে কর এই পর্বত
একটা গাছ
গাছের ছায়া
ছায়ার পাখি
পাখির ফুলবীজ

প্রাণীদের বিচিত্র নিশ্বাস
ঘাসের অন্ধকারে
ঘাসের সবুজ অন্ধকার
অসহনীয় চিন্তা
আর ঝরাপাতার ভালবাসার স্তব্ধতা
তারা সান্ত¡না দেয় উপসাগরকে
নিজের মতো কিছুই
সে ধরে রাখতে পারেনা

এখন ভাবি
তুমি কত বড় হয়ে গেছ
মনে রেখ
আমাদের সবার মতো
তুমিও দাঁড়িয়ে আছ ঘাসে
ঘাসে প্রজাপতি
প্রজাপতির নিবিড় রাত
শিশির সাপ ভাঙা দিন
স্নিগ্ধ অপরাধ
মাটিতে শক্ত পা
পর্বতের মতো হও।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।