সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে সোনালি (পর্ব – ৯৯)

রেকারিং ডেসিমাল

কাত হয়ে দেয়ালের সাথে লেগে থেকে প্রায় সিঁড়ি চড়া। কারণ সিঁড়িতে কোন রেলিং নেই। অন্য দিকটা ফাঁকা। খুব সাবধানে মেয়ের হাত ধরে উঠতে উঠতে মায়ের চোখটা একবার নীচের দিকে চলে গেল।
সিঁড়ির তলার দিকে উঠোনের প্রান্তে এত অন্ধকার কি করে জমাট বেঁধে আছে?
বেশ অনেকটা জায়গা!
খোলা খাড়াই সিঁড়িতে উঠতে উঠতে অন্যমনস্ক হওয়া যায় না। তাই চোখ ফিরিয়ে আবার হেঁইও হেঁইও করে ওঠা।
দোতলার বারান্দাটা ওই চবুতরার ফাঁক রেখেই চৌকোনা হয়ে ঘুরে গেছে। পাশে পাশে ঘর। এই তলায় এখন আর কোন লোকজন নেই।
তাই হইহই করে ছ জন মানুষ আর চারটি সুটকেস আর গোটা তিনেক ঝোলা ব্যাগের হিসেব মিলিয়ে ফেললেন বাবা ঘরের সামনে দাঁড়িয়েই।
বারান্দায় লোহার শিকের রেলিং। তার ওপরে সিমেন্ট করা হাত রাখার জায়গা। ওপর ওপর সব তলার একই ধরনের কায়দা। মাঝখানে ফাঁক একেবারে আকাশ অবধি। চৌকো আকাশ দেখা যায় অনেক ওপরে।
মা রেলিঙের ওপরে হাত রেখে এবার নীচে ঝুঁকে দেখেন।
কি ওটা? অত কালো, জমাট বাঁধা অন্ধকারের মত?

মস্ত উঁচু খাটের ওপর ততক্ষণে ছোটরা লাফ দিয়ে উঠে পড়েছে।
পাশের ঘরে শ্বশুর শ্বাশুড়ি খাটে বসে হাঁফ ছাড়ছেন।

ওপর থেকে মিশ্রজীর গলা পাওয়া গেল। তিনি তিন তলা থেকে নেমে এলেন কেটলিতে চা আর মাটির ভাঁড় নিয়ে।
বড়োরা বলল, বাঁচলাম!
মা এক গাল হেসে মস্ত সিমেন্ট করা বাথরুমে দুই ছানা, সাবান আর তোয়ালে নিয়ে ঢুকতে ঢুকতে বললেন, থ্যাংক ইউ।
তোমরা চা খাও, আমি এদের একটু ট্রেনের নোংরামুক্ত করে আনি।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।