বাহান্ন বছর আগের কথা। স্কুল থেকে বেরিয়ে সুলতা দেখেছিল উল্টোদিকে দাঁড়িয়ে আছে অভয়। চোখ পড়তেই দুজনের মুখেই চাপা হাসির ছোঁয়া। সেদিন কোন কারণে সুলতার বান্ধবীর দাদা এসেছিল ওদের স্কুলে। তিনজন একসঙ্গে বাড়ির পথ ধরেছিল। অভয় দূর থেকে দেখেছিল।
পরদিন অভয়কে দেখা যায়নি। বদলে একটি চিরকুট এসেছিল। লেখা ছিল, অন্য পুরুষের সঙ্গে সুলতা হেসে গল্প করায় সে আহত হয়েছে, ঠিক করেছে অনশনে প্রাণ বিসর্জন করবে। ‘মরণ!’ রাগতে গিয়েও হেসে ফেলেছিল সুলতা। অবশ্য তার পরের দিনই স্কুলের বাইরে দুজনকে কুলের আচার ভাগ করে খেতে দেখা গিয়েছিল। তার কিছুদিনের মধ্যেই চারহাত এক হয়েছিল।
সেদিনের কিশোরী আজ ধবধবে সাদা চুলের সুলতা দেবী। সকালে মর্নিং ওয়াক সেরে গোয়ালার খাটাল থেকে দুধ নিয়ে বাড়ি ফেরেন। একই রুটিন নিত্যবাবুরও। রসিক মানুষ নিত্যবাবুর গল্পে মজা পান সুলতাদেবী। গতকাল রাতে এই কথাটিই স্বামীকে বলেছিলেন সুলতাদেবী। আজ খাটাল থেকে বেরিয়েই দেখেন অভয়বাবু দাঁড়িয়ে আছেন গলির মোড়ে।
অর্ধশতক পেরিয়ে এসেও মানুষটা সেই একই রয়ে গেল। হেসে ফেললেন সুলতাদেবী, মনে মনে বললেন ‘মরণ!’