সমীপেষু

ভুলেও ভুলিও না

আমার লেখা মানেই একটা না চাইতেই ধর্মীয় বাতাবরণ সৃষ্টি করে — এ হেন গুঞ্জন আমার কান অবধিও এসে পৌঁছেছে বিন্দুমাত্র কালক্ষেপ না করেই। আজ তাই একটু অন্য কিছু লিখবো বলে মনস্থির করেছি। কিন্তু বিষয় নির্বাচন আমার কাছে খুব জটিল অংকের মতোই সহজ। সহজ হবে না-ই বা কেন! এতো ঘটনা যে চারদিকে ঘটছে তার তো একটা ড্রেন চাই না-কি! নইলে তা নদীতে মিশবে কী করে! নদী মানে তো স্রোত, স্রোত মানেই তো প্রাণ। আমি প্রাণের কথা বলতে ভালোবাসি বারবার। আমি আপ্রাণ সুধালোভী এক ভ্রমভ্রমর। আমি অজানাকে ভীষণ তোষণ করি গোপন ছকে। আমি বাইবেলের আস্তাবলকে অনায়াসে ‘কিসমত কি খেল’ বলে মিল্টনকে আশ্রয় করে বলতে পারি,
With loss of Eden, till one greater Man
Restore us, and regain the blissful Seat,
Sing Heav’nly Muse, that on the secret top
Of Oreb, or of Sinai, didst inspire
That Shepherd, who first taught the chosen Seed,
In the Beginning how the Heav’ns and Earth
Rose out of Chaos:
পারি, পারি, আমিই পারি। কারণ আমি কবিতা লিখি। কিন্তুভাব কিন্তু এখানেই। অথচ সহজেই আমি কবিতায় পাশার গুটি চালিয়ে বলতে পারি
কমরেড তুমি জাতেতে সবুজবীথি
ভুলেছো কি তুমি গণনাট্যের গীতি!
আমি আকাশকুসুম ভাববার সময় যদি জুটিয়ে ফেলি তবে দুহাতে লাল পলা ঝোলাবো আর আবারও কোনও ‘কিসমত কি খেল’ এর জন্য অপেক্ষা করবো। কিন্তু না মাই ডিয়ার রিডার্স, আমার ইতিবৃত্ত চারুকলা প্রদর্শনী করবে তখনই যখন আমি আবার কিশোর হবো। যুদ্ধযুদ্ধ খেলবো, বন্দুক দিয়ে ক্যাপ ফাটাবো, কিংবা বর্ষায় তাসের নেশায় টলবো আর অপেক্ষা করবো একটা মোক্ষম ট্রামের জন্য। আমায় অনেকটা ছোট হতে হবে পুজোর দিনে। পুজো তো ছোটতেই জমে। কী বিচার! কী আচার! কী আমার নাছোড়বান্দা প্রেমতহবিলপ! আমি উপচে পড়ি। তবু আমি মিলনের গান গাই কারণ আমি পূর্ণতাকে ভয় করি। আমি জানি সে শূন্য করতে জানে। সে দশমিক হয়ে জাকিয়ে বসে দুটো শূন্যর মাঝখানে। আমি ক্রম চিনি, আমি ক্রমাগতকে চিনি, আমি ক্রমান্বয় ঘটাতেও জানি। আর জানি বলেই প্রেমে বাঁচি বারোটা মাস। কত প্রেমিক যায়, কত প্রেমিক আসে, আর কত প্রেমিকা আমার জন্য নিত্য উপবাসে সে হিসাব আমার স্লেটে লেখা। জনমত নির্বিশেষে যেদিন উপচে পড়বে প্রেম, মিলনের সাথে সেদিন আমি দুধ সন্দেশ আর আমসত্ত্ব খাবো। আমি উন্মাদনায় বলবো, ‘কিস্তিমাত জীবন! কিস্তি মাত!’।
রাত গভীর হতে থাকবে ক্রমশ। আমি আলকাতরার মতো গলে পড়বো তাতে। মিশে যাবো কালীর কালিতে। আমি রং চিনি। আমায়
ভোলানো যাবে না কিছুতেই। আমি পথের বাঁক ঘুরিয়ে ঠিক থেকে যাবো। ঠিক থেকে যাবো শেষ নাটকের শেষ অঙ্ক অবধি। ঘণ্টা যে আমারই হাতে। আমি বাজাতে জানি, আমি বাঁচতে জানি, আমি বাঁচাতেও জানি। কমরেড আমি মুষ্টিবদ্ধ হাতটাকে চিনি। আমি ও হাতে কলম, ছুরি কিংবা পতাকা কোনোটাই দেখিনি। আমি ঘাম দেখেছি— শ্রমের ঘাম, ত্যাগের ঘাম, সাধনার ঘাম।
সুতরাং
বহুরূপী আইকন জিন্দাবাদ

শাল্যদানী

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।