সমীপেষু

জয় সীতা রাম

বিগত ৫ ই আগষ্ট আপামর হিন্দুদের কাছে (সে লোকদেখানো সেকুলারিজম এর কথা যতই বলুক) বিশেষ দিন শুধু নয়, বহু প্রতীক্ষার দিন ছিলো। কেউ ভেবেছিলেন বিশেষ সমারোহ, কেউ ভেবেছিলেন মারদাঙ্গা কিছু তো হবেই। করোনা সে গুড়ে বালি ঢেলে দুপক্ষকেই দশ গোল দিয়েছে৷ অভিনন্দন যাদের প্রাপ্য তাদের অবশ্যই অভিনন্দিত করছি। সঙ্গে কিছু আত্মসমালোচনা করতে চাইছি। না, আমি মোটেও এটা বলতে চাইছি না যে করোনা পরিস্থিতিতে ভূমিপূজন হলো লকডাউন পরিস্থিতিতে দাঙ্গা রুখতে, আমিও এটাও বলতে চাইছি না যে তারিখটা নিয়ে আলোচনার জন্য দশনামী সম্প্রদায়ের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়নি কেবল দশ সম্প্রদায়ের দশ মতে কাজ পেছানোকে এড়িয়ে যেতে। কিন্তু পূজোপকরণ আর পদ্ধতি, পূজা চলাকালীন অবহ ও পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার প্রয়োজন। দেখুন তারিখটা নিয়ে সত্যিই কোনো আপত্তির ছিলো না যদি না সেদিন মাত্র ৩২ সেকেন্ড এবং কিছু মাত্র পল জ্যোতিষ অনুযায়ী শুভ না হতো। এখন সূর্যের দক্ষিণায়ন চলছে। এখন দেবগণের নিদ্রাকাল রূপেই শাস্ত্রে সূচিত। এরকম মহান কর্ম দেবতাদের নিদ্রাকালে না করলেই ভালো হতো। উত্তরায়নের জন্য অপেক্ষা করা উচিত ছিলো।
স্বয়ং রামচন্দ্রকেও দক্ষিণায়নে দেবীকে বোধন করতে হয়েছিলো, আজ তার তার বাড়িরও ভিতপুজো সেই দক্ষিণায়নে
ইনফ্যাক্ট তার বনবাস ও রাজ্যে প্রত্যাগমণও দক্ষিণায়নে। দুটির কোনোটিরই ফলাফল তার জন্য খুব স্বস্তির হয়নি। প্রথমটির ফলাফল সীতাহরণ, দ্বিতীয়টির ফলাফল সীতার পাতাল প্রবেশ।
উপরন্তু, এই সময়ে আপামর সাধু সন্ন্যাসীগণের চাতুর্মাস্য ব্রত চলছে। ব্রতরক্ষাহেতু তারা স্বস্থান ত্যাগ করতে পারবেন না, নদী পার হতে পারবেন না। তবে এই সময়টাকেই কেন বাছা হলো জানি না।
অনুষ্ঠানেও দুটো খারাপ জিনিস আমার চোখে পড়েছে। তা আমি ইতিপূর্বে জানিয়েওছি।
দুটো জিনিস ভীষণ খারাপ লাগলো
১. ধর্মসম্রাট শঙ্করাচার্যগণের অনুপস্থিতি উৎসবের গুরুত্ব ও ঐতিহ্য ম্লান করলো।
২. ভূমিপুজো চলাকালীন মন্ত্র উচ্চারণ করতে করতে ঘড়ি দেখা, সময় জানতে চাওয়া, কত সময় বাকি বলা কওয়া করা। প্রধানমন্ত্রী যত বড় প্রশাসনিক পদই হোক না কেন, যতই পোর্টোকল থাকুক না কেন এ কাজ করা অন্যায়। সমাজে তো আর রামকৃষ্ণ নেই যে কষে একটা থাপ্পড় দেবেন যেমন রাসমণিকে দিয়েছিলেন মন্দিরে বসে বিষয় চিন্তা করার জন্য।
এগুলো পড়ে যদি কোনো সেকুলার গদগদ হয়ে পড়েন যে শাল্যদানী সেকুলারিজমের কথা বলছে। ভুল ভাবছেন। সেকুলার শব্দটি একটি কাল্পনিক, অবাস্তব এবং মিথ্যে বলেই আমি মনে করি। এটি নিতান্তই আত্মসমালোচনা।
তবে এবার একটা বিষোদগার করে লেখাটি ছাড়বো। অভিযোগটি abp news এর বিরুদ্ধে। ৫ই আগস্টই সকাল ১০টায় ধর্মসম্রাট দ্বারকা ও বদ্রীকাপীঠাধীশ শঙ্করাচার্য স্বামী স্বরূপানন্দ সরস্বতী মহাভাগের ইন্টারভিউ ছিলো ওই এবিপি তে। রামমন্দির নিয়েই বিভিন্নরকম খোঁচা মারা প্রশ্ন করে চলেন সাংবাদিক। তবু সদাহাস্যজ্বল মহাভাগ হাসি মুখেই উত্তর দিচ্ছেন। হঠাৎ অসভ্যের মতো ইন্টারভিউয়ের মাঝেই তার একটি কথা শুরু হতেই তার মুখ থেকে ক্যামেরা সরিয়ে নেওয়া হয়। তখনও মহাভাগ বলে চলেছেন। ছিঃ ছিঃ। এহেন কাজ করার ঔদ্ধত্য কেন দেখালো এবিপি, কাদের ইঙ্গিতে করলো। এ অপমান আপামর সনাতনীদের অপমান। আমি এর বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। এবিপি কে প্রকাশ্যে তাদের প্রতিটি ভাষার চ্যানেলে অবিলম্বে ক্ষমা চাইতে হবে – এই দাবি করছি। আর কি বা করতে পারি
অসহায় হিন্দুত্ব হিন্দুত্বের চাপে

শাল্যদানী

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।