• Uncategorized
  • 0

কাব্যক্রমে রেজুয়ান সরদার

১| অব্যক্ত

বৃষ্টিটা অবিকল তোমার মতন,
ভিজাতে এসেও পারল না,
তার ফুঁপানিতেই সব শেষ,
বর্ষালো না গোপন ব্যথাগুলো ।
হয়ত বলার ছিল অনেক কিছু,
কিন্তু তার আর বলা হল না ।
বেদনার তীব্রতায় চাপা রইল,
অন্তহীন মনের কথাগুলো ।
পারবে কিনা বলতে,জানিনা;
কিন্তু আমার জীবনে এখন,
ঐ বৃষ্টিতে ভেজা খুব প্রয়োজন,
নিষ্পত্তি মেটাতে মনের ক্ষুধা ।।

২| লিখতে চাই

ভাষা সব অগোছালো
শব্দরা এলোমেলো
দিনরাত যায় আসে
মনের আবেগে ভাসে
তবু অর্থের পূর্ণতা নাই।।
ছন্দরা আসে না
ব্যকরণ? গায়ে ঘেঁষে না
বাক্যের ব্যবহার
সর্বদা খুঁজি তাই।।
বুঝিনা কবিতা কী,
কী এই লেখালেখি,
দেখি চারিদিকে যেথা,
মেতেছে কবিরা হেথা,
শুধু আমার মনে হয়
এসব আপদ-বালাই।।
নীরেন্দ্রবাবু রবিঠাকুর
খ্যাতনামা শেক্সপিয়ার,
লেখনী-তে আছে যার
ছন্দ ও কাব্যের বাহার;
বুঝি কি অতশত!
লিখেছি নিজের মতো!
নেই ছান্দিক মিল
কাব্যতেও গোঁজামিল।
লিখলাম নিজ থেকে,
লিখতে যে ভালো লাগে।

আমি শুধু লিখতে চাই
তবু, তা যে পারি নাই।।

৩| পারিনি আমি!

না! আমি পারিনি।
আমি পারিনি তার হাতটা ধরে একটু উষ্ণতা নিতে,
শীতের সন্ধ্যায়,
তার নশ্বর শরীরে তুলে দিতে পারিনি চাদরখানি।
পথের ধারে গজিয়ে ওঠা নাম না-জানা ফুলের
সৌন্দর্য মাড়িয়ে, ছিঁড়ে তুলে দিতে পারিনি তার হাতে।
আমি পারিনি,
দিশাহীন নিশায় তার পথ চলার সাথী হতে।
আমি পারিনি,
তার কাজল টানা চোখের ভাষা বুঝে নিতে।
তার বুকের উষ্ণতার শুধু কবিতা লিখেছি!
তবুও, পারিনি তার শুষ্ক মনের তেষ্টা মেটাতে।
আমি পারিনি,
তার সাথে রাত জেগে, তারাদের মাঝে পাড়ি দিতে।
আমি পারিনি,
তার একাকীত্বের বিমর্ষতা কেড়ে নিতে।
আমি পারিনি,
তার গুজব গল্পে মশগুল হতে।
আমি পারিনি,
তার কপালের ছোট টিপটি হতে।
আমি পারিনি,
তাকে একশোটি নীল পদ্ম দিতে।
আমি পারিনি,
তাকে সাথে কখনও পার্কে যেতে।
আমি পারিনি,
তাকে জুলিয়েট, আমি রোমিও হতে।
আমি পারিনি,
নিশুতি রাতে, তার ভয় ভাঙাতে।
পেরেছি আমি,
কি জানি না? তাকে ভালোবাসতে?
পেরেছি আমি,
নিজের জগতে, তাকে সাজিয়ে রাখতে।
আলোকমাখা মুখের হাসি ম্লান করিনি,
তবুও, আমি, তাকে কী সুখী করতে পারিনি?
চাঁদের আলোয় নিকোনো উঠানে, তার পাশে বসে,
গুনেছি কত তারা, তার কথার বশে!
শিমুল গাছের কোকিলের কুহু কুহু ডাকে,
হাত রেখেছি বহুবার, তার কোমল কাঁখে।
তবুও হয়তো বুঝতে পারিনি, তাকে, তার মতন করে
হয়তো পারিনি, তাকে, কাছে টানতে যতন করে।।

৪| খুশি এসেছিল

খুশি, এসেছিল !
সে কী চলে গেছে ?
বিষন্নতায় কাটে না কেনো সময়গুলো ?
সে নিয়ে যায়নি কিছুই !
দিয়ে গেছে পরম উপহার,
দৈন্যদশায় আত্মহারা হয়ে।
বসন্তের শিমুল ফুলে
খুশি এসেছিল;
এসেছিল, কোকিলের কুহু-তানেও ।
কনকচাঁপার ডালে বসা
কাঠবিড়ালির পিঠের ছাই রঙেও,
খুশি এসেছিল, বিভোর হয়ে।
সকালের শিশির-ভেজা ঘাসে
ফড়িং এর সবুজ গায়ের মতো,
খুশি এসেছিল!
সূর্যের ঐ প্রথম রোদেও
খুশি এসেছিল আমার কাছে ।
জ্যোৎস্না-স্নাত নির্মল রাতে,
খুশি এসেছিল, আমার পর্ণ কুটিরে ।
এসেছিল সে, একান্ত আমার হয়ে,
তার উষ্ণ বুকের স্পর্শ দিতে,
তার নিটোল যৌবন
উজাড় করতে, আমার কাছে।
আস্বাদন নিয়েছিলাম আমি
তার উষ্ণ প্রস্রবনের,
মুখ রেখেছিলাম,
তার অনাবৃত বুকে ।
তার চোখে চোখ রেখে,
শুষে নিয়েছিলাম
তার সব রসটুকুই
গোলাপের মতো
কোমল ঠোঁট থেকে ।
হ্যাঁ, খুশি এসেছিল !
আমার জীর্ণ কুটিরে,
সাময়িক অতিথি হয়ে ।
ধরে রাখতে পারিনি তাকে,
আমার কাছে,
চলে গেছে সে বহুদুর,
চিরদিনের তরে ।।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।