।। ত্রিতাপহারিণী ২০২০।। T3 শারদ সংখ্যায় রুমকি রায় দত্ত

একটি কাল্পনিক উপন্যাসের সৃষ্টি

ঐ নদীর জল আস্তে আস্তে সরে যাচ্ছে। শুষ্ক উপেক্ষিত নদী ঔরঙ্গা,এখনও অনাঘ্রাত সে। একপা একপা করে মাঝ নদীর বুক থেকে উঠে আসছে। জল সরে বালির উপর ফুটে উঠেছে জলের আলপনা। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর উপক্ষেতি নদীর সাথে প্রিয় ঔপন্যাসিকের সঙ্গম মুহূর্ত উপস্থিত। কোয়েল আর ঔরঙ্গার মিলনস্থলের সেই প্রাচীন বনবাংলোর জঙ্গল দু-হাতে সরিয়ে, বালির পার ধরে হাঁটতে হাঁটতে এগিয়ে আসছেন বৃদ্ধ ঔপন্যাসিক। এসে বসলেন বালির উপর। উপেক্ষিত ঔরঙ্গা, মাঝ নদীতে একপায়ে দাঁড়িয়ে তপস্যামগ্ন। বালির উপর আধশোয়া বৃদ্ধ ঔপন্যাসিকের প্রেমিক হৃদয় ঢেকে রাখা মঁ ব্লাঁ কালো কলমের সোনালি অংশ থেকে আলো ঠিকরে পড়ল তপস্যারত ঔরঙ্গার কপালের মাঝখানে। ঔপন্যাসিকের সৃষ্টির ছোঁয়া পেয়ে, সেও যে অমর হতে চাই রূপসি কোয়েলের মতো।
ঔপন্যাসিক কলমে বালির চরে আঁচড় কাটছেন। মনে মনে ভবাছেন, কি করে এত সাধারণ হলাম!’ এতগুলো বছর লেগে গেল উপেক্ষিত ঐ নদীর দিকে চোখ ফেরাতে!
ধ্যানমগ্ন উপেক্ষিত নদী মিশে যেতে লাগল লেখকের রক্তস্রোতে। লেখক শুনতে পেলেন প্রশ্ন—
– তোমার কলম কি শুধু রূপসি নারী-প্রকৃতির জন্য? কেন নির্বাচন করলে না লেখক এ তৃতীয় সত্তার হৃদয়কে? বাইরের পুরুষকাঠিন্য দেখে মুখ ফেরালে? অন্তরের নদী হৃদয় দেখলে নে!
– লেখক নিরুত্তর রইলেন।
– এতগুলো বছর লাগল তোমার, এই উপেক্ষিত ঔরঙ্গার ভালোবাসা বুঝতে!
– আজ তো বুঝেছি, এই দেখো জেগে উঠছে নীল শিরা! এসো… লিপ্ত হই সৃষ্টিতে।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।