T3 || নারী দিবস || সংখ্যায় রবীন জাকারিয়া

আত্মবিশ্বাস

বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান থাকার কারণে প্রায় সময়ই কাচারি বাজার এলাকাতেই থাকতে হয়৷ যুগ যুগ ধরে এই জায়গাটা আমার প্রিয়৷ আগে আড্ডা দিতাম৷ এখন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তদারকি করি৷ তবে সব সময় নয়৷ সপ্তাহের ছুটির দু’দিন৷ যেহেতু আমি চাকরি করি৷ তাই প্রতিনিয়ত থাকা হয়না৷
ক”দিন ধরে একটা বিষয় আমার চোখে পড়ছে৷ সেটা হলো একজন যুবা নারী প্রতিদিন রাত ঠিক ৮.০০ থেকে ৮.৩০টার সময় ব্যাটারী চালিত রিক্সা ভ্যানে মুনসিপাড়ার দিকে যায়৷ চালকের পাশের সীটে গাদাগাদি করে বসে থাকেন৷ অথচ পুরো ভ্যানটা ফাঁকা৷ এমন দৃশ্য সাধারণত: দেখা যায় না৷ তাই আমার কৌতুহল বশে অনেকের কাছে বিষয়টা কী জানতে চাইলাম৷ বেশিরভাগই জানালো “দূর ভাই জানার আর কিছু পান না৷ তাই ঐ ফালতু মেয়েটা সম্পর্কে আগ্রহ বেশী তাই না?” উত্তর শুনে অবাক হলাম৷ কোন কিছু না জেনেই কী সহজেই আমরা একজনের চরিত্রে কলঙ্ক লেপন করি৷ এটা আমাদের জাতীয় চরিত্র৷ Traditional mind set-up. তাই অবাক হলেও রাগ করলাম না৷ তবে সিদ্ধান্ত নিলাম এর রহস্য উদঘাটন করবো৷
এরপর প্রায় দুই-তিন দিন আমি ওনাকে পর্যবেক্ষণ করলাম৷ আমি দাঁড়িয়ে থাকি ওনার জন্য৷ ঠিক সময় মতো উনি ভ্যানে করে চলে যান৷
এ ক’দিনে আমি যেমন ওনাকে লক্ষ করেছি৷ তারচেয়ে বেশি উনি আমাকে ফলো করেছেন৷ কেননা এটা স্বীকার করতেই হবে মেয়েদের অবজারভেশন ছেলেদের চেয়ে অনেক বেশী Perfect হয়৷
কেন জানি ওনাকে আমার খুব চেনা চেনা মনে হলো৷ আমার এক কলিগের স্ত্রীর মতো৷ কিন্ত সমস্যা আমার কলিগের স্ত্রী অনেক ফর্সা আর একটু স্বাস্থ্যবতী ছিলেন৷ কিন্ত ইনি বিপরীত৷
এভাবেই চলছিল৷ অনেকটা লুকোচুরি৷ যেহেতু আমি চাকরি করি৷ বিবাহিত৷ কলেজ পড়ুয়া যুবা নই৷ তাই একটা অপরাধবোধ কাজ করছে৷ যদি ভদ্রমহিলা বিষয়টাকে অন্যভাবে নেন৷ ছি: লজ্জার ব্যাপার হবে৷ ভাবলাম থাক বাবা৷ কে কী করে সেটা আমার না জানলেও চলবে৷ তাই ছেড়ে দিলাম৷
পরের সপ্তাহে বৃহষ্পতিবার যথারীতি দিনাজপুর অর্থাৎ আমার কর্মস্থল থেকে বাড়ি আসছি৷ আমার বাড়ি যেহেতু মুনসীপাড়ায়৷ তাই মেডিকেল মোড় থেকে অটোতে করে আমাকে কাচারি আসতেই হয়৷ ব্যাকপ্যাক আর হাতে ল্যাপটপের ব্যাগ নিয়ে অপেক্ষা করছি রিক্সার জন্য৷ কিন্ত রিক্সা পাচ্ছিনা৷ এখন এই একটা জ্বালা৷ সহজে রিক্সা পাওয়া যায়না৷ দু-একটা পাওয়া গেলেও একাধিক ব্যক্তির ডাক৷ এরপরেও যদি ফাঁকা কাউকে পান তাহলে ওরাই বরং বলবে “কোথায় যাবেন?” আপনি যদি বলেন উত্তরে ও বলবে দক্ষিণে৷ আবার আপনি যদি বলেন পূর্বে ও বলবে পশ্চিমে৷ মেজাজটা বিগড়ে আছে৷ তবুও অপেক্ষা করছি৷
এমন সময় কেউ আমাকে ডাকলো৷ জামান ভাই এদিকে৷ “বাইগুন ব্যাঁচা” মুখটা ঘুরিয়ে পিছনে তাকালাম৷ আমিতো অবাক৷ বিশ্মিত! ভ্যানে চলাচল করা সেই নারী৷ প্রতিদিন রাত করে ফেরা “ফালতু” নারী আমাকে ডাকছে৷ আমার নাম জানলো কী করে? মাথা আউলায় যাচ্ছে৷
অভিব্যক্তি স্বাভাবিক রেখে ওনার কাছে গেলাম৷ বললাম বলুন কী বলবেন৷
ভ্যানে উঠুন৷
কেন?
আগে উঠুন৷ তারপর বলছি৷ বলে উনি ভ্যানের পিছনে বসলেন৷ কই আসুন৷
সুবোধ বালকের মতো নয় বরং সম্মোহিত হয়ে তার কথা রাখলাম৷
উনি ইশারায় চালককে ভ্যান চালাতে বললেন৷
আমি দোয়া দরুদ পড়ছি৷ এ খবর যদি আমার স্ত্রী জানতে পারে তাহলে তিলেতিলে গড়া এত বছরের সংসারটা নষ্ট হয়ে যাবে৷ আল্লাহ্ তুমি উত্তম হিফাজতকারী৷
কী ভাবছেন?
কই৷ কিছু নাতো!
আপনিতো ভয়ে কাঁপছেন!
নাহ্৷ কাঁপার কী আছে? আমি কি মেয়ে না কি!
হাহাহা করে উনি হাসলেন৷ তারপর বললেন৷ আমাকে কিন্ত এখনো চিনতে পারেননি তাই না?
কেন চিনবো না? আপনি প্রতিদিন এ পথে যাতায়াত করেন৷
ঐ চেনা নয় ভাই৷ আমি হচ্ছি পলি৷ এবার বুঝেছেন?
হ্যা বুঝলাম!
কী বুঝলেন?
আপনি পলি৷
আপনি আসলে এখনো বুদ্ধুই রয়ে গেলেন৷ আচ্ছা আপনি এই মাথা নিয়ে কী করে এত বড় চাকরি করেন?
শুনুন আমার মেধা আর চাকরি নিয়ে বাজে কথা বলবেন না৷ আপনি পলি হোন কিংবা ট্রলি তাতে আমার কিছু যায় আসে না৷
প্রচন্ড অপমানিত বোধ করলাম৷ রেগে চালককে ভ্যান থামাতে বললাম৷ নেমে পড়বো এমন সময় আচমকা পলি আমার হাতটা জড়িয়ে ধরলো৷ কাঁদো কাঁদো স্বরে বললো৷ জামান ভাই আমি আপনার পলি ভাবি৷ আপনার বন্ধু ও সাবেক কলিগ মতলুবের স্ত্রী৷ আমি থমকে গেলাম৷ আবেগাপ্লুত হয়ে বললাম মতলুব এখন কেমন আছে?
অনেকক্ষণ কথা বললো না৷ চুপ থাকলো৷ তারপর বললো আগের মতই৷ একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী যেমন থাকে৷
কিছুক্ষণ পর নিজেকে সামলে নিল৷ বাসাতে নিয়ে যেতে জোর করলো৷
আরেকদিন যাবো বলে আমি নেমে পড়লাম৷ এখন সন্তানদের সাথে দেখা করার চেয়ে কোন কিছুই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়৷ বার বার মোবাইল করছে৷ বাবা তুমি এখন কোথায়? আর কতক্ষণ লাগবে? যেন Live telecast.বাড়ির গেটটার সামনে দাঁড়িয়ে থাকে৷ দূর থেকে দেখে ওরা যখন দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরে৷ তখন নিজেকে রাজাধিরাজ মনে হয়৷ কোন সংলাপ ছাড়াই যেন সব অনুভূতি শরীর থেকে শরীরে ছড়িয়ে পরে৷ বিদ্যূতের মতো৷ আহ্! কী শান্তি!

পরের দিন আমি মতলুবের বাসায় গেলাম৷ বন্ধুর সাথে দেখা করতে৷ বাড়িতে নক করলাম৷ একটি কিশোরী বের হলো৷ আপাদমস্তক দেখে বললো কাকে চাই? এত সুন্দর আর কম বয়সি মেয়ের কন্ঠ এতো কর্কশ এবং অভদ্র হয়৷ মেলাতে পারছি না৷ বড্ড অপমানিত বোধ করছি৷ শুধু বললাম এটা পলি ভাবিদের বাসা না? ওরাতো এখানেই থাকতো৷
নাহ্! এখানে আমরা থাকি৷ ইশারা করে বললো ওরা এখন ঐ বাসাতে থাকে৷ বলেই দরজা লাগিয়ে দিল৷
আমি একটু হেঁটে মতলুবদের বাড়ির সামনে এসে ডাক দিলাম৷ মতলুব ভাই বাড়িতে আছেন৷ আবেগের বশে কলিং বেল বাজানোর কথা ভূলেই গেলাম৷ কিছুক্ষণের মধ্যে একজন দরজা খুলে দিল৷ আমাকে দেখেই পলি ভাবি চিৎকার করে বলতে লাগলো “এই দেখো কে এসেছে৷ তোমার বন্ধু জামান ভাই৷”
ভেতরে ঢুকলাম৷ অবাক হলাম৷ আগে যে বাড়িতে থাকতো এটা তার চেয়ে বড় এবং আধুনিক৷ যে ধারণাটা করছিলাম বাস্তবে আসলে তার উল্টো৷
ভেতরে ঢুকতে বললো৷
ড্রয়ং রুমে বসলাম৷
হঠাৎ পেছনে খরাৎ খরাৎ আওয়াজে ঘাড় ঘুরে তাকাই৷ দেখলাম হুইল চেয়ারে ঠেলে মতলুব ভাই ঘরে ঢুকছে৷ ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত আর জীবনযুদ্ধে পরাজিত এক নতজানু সৈনিকের ন্যায়৷ চেহারা মলিন৷ দেখে কষ্ট লাগছে৷ মায়া লাগছে৷
অথচ কী প্রাঞ্জল, সদালাপি আর সাহসী ছেলে ছিল মতলুব ভাই৷ আমাদের কলেজে দাপুটে বামপন্থি লিডার ছিলেন৷ ছাত্র সংসদের ভিপি ছিলেন৷ নিজের জন্য কখনোই কিছু করেননি৷ দিবা-নিশি শিক্ষার্থিদের সেবা করে গেছেন৷ বলা হয় এ পর্যন্ত এই কলেজের ছাত্র সংসদের সবচেয়ে স্বর্ণালী অধ্যায় হলো মতলুব ভাইদের আমল৷ উনি বয়সে আমার সিনিয়র তাই আমি ভাই বলি৷ অন্যদিকে চাকরিতে আমার সাব অর্ডিনেট অর্থাৎ ফাইন্যান্স অফিসার থাকার কারনে সে আমাকে ভাই বলে৷
মতলুব ভাই ঘরে ঢোকা মাত্রই সালাম দিলাম৷ কেমন আছেন?
স্ত্রী”র বোঝা হয়ে!
কক্ষনো নয়৷ তুমি আমার বোঝা নও৷ বরং আমার আত্মবিশ্বাস৷ অণুপ্রেরণা৷ হাতে নাস্তার ট্রে নিয়ে ঘরে ঢুকতে ঢুকতেই ভাবী প্রতিবাদ করলো৷
পলি ভাবী চা খাওয়ার ইশারা করে বলতে লাগলেন৷ জামান ভাই ওকে বোঝানতো আজকে আমি যে ব্যবসাটা দাঁড় করিয়েছি সেটার পুরো কৃতিত্ব তার৷ ব্যবসার আইডিয়া, ICT, কিংবা Online devery বিষয়ে আমার মত একজন HSC পাশ মেয়ের জন্য অসম্ভব ছিল৷ ওই Thime tank.তাছাড়া চাকরি হারানোর পর অন্যের বোঝা হয়ে সে বসে থাকেনি৷ বাড়ির সামনের রাস্তায় সে ফ্লেক্সিলোড ও বিকাশ সেন্টার দেয়৷ সেটা দিয়েই কষ্ট করে সংসারটা চালিয়েছে৷ পাশাপাশি ল্যাপটপে ইউটিউবে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা’র বিভিন্ন টিউটোরিয়াল দেখে আমাদের সামর্থ ও উপযোগী একটা ব্যবসার আইডিয়া দাঁড় করায়৷ সে মতো ফেজবুকে একটি পেজ তৈরি করে৷ নাম দেয় “Poly’s Fashion”. প্রথম পর্যায়ে শহরের বড় বড় দোকান থেকে বিভিন্ন পোষাক কমিশন ভিত্তিক বিক্রি করা শুরু করি৷ মতলুব ড্রেসগুলোর বিভিন্ন এঙ্গেলের আকর্ষণীয় ছবি পেজে পোস্ট করতে থাকে৷ দামটাও লেখা থাকে৷ অল্প সময়ের ভেতর যথেষ্ট অর্ডার পাওয়া শুরু হলো৷ তখন ঢাকা থেকে মাল কিনতে লাগলাম৷ লাভও ভাল হতে থাকলো৷
আমি বললাম এখানেতো বেশ কয়েকটা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের গ্রুপ আছে৷ তাদের সাথে যোগাযোগা করেননি?
করেছিলাম৷ ওরা পর্যটনে বেশ ক’বার উদ্যোক্তা মেলার আয়োজন করেছিল৷ আমি স্টল দিয়েছিলাম৷ মন্ত্রী-আমলা উপস্থিত হলেন৷ প্রশংসা করলেন৷ আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিলেন৷ আমরা বেজায় খুশি৷
তারপর?
পরের অধ্যায় প্রতারণায় ভরপুর৷ এই সমস্ত গ্রুপ আমাদেরকে দেখিয়ে নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধিতে সিদ্ধ হস্ত৷
পলি আবার বলতে লাগলো, এ শহরের একটা বড় উদ্যোক্তা গ্রুপের পরিচালক হচ্ছেন একজন ডাক্তারের স্ত্রী৷ যাঁর নিজেদের দু’টি দশতলা বাড়ি এবং পরিবহন ব্যবসা আছে৷ নেই শুধু নিজের কোন উদ্যোগ৷ এদের উদ্যোগ হলো আমাদেরকে দেখিয়ে সরকারি আর্থিক মুনাফা লুন্ঠনের মহা পরিকল্পনা৷
আর একটি গ্রুপ সত্যিকারের উদ্যোক্তাদের বাদ দিয়ে সেরা উদ্যোক্তার এওয়ার্ড দিল নিজের স্ত্রীকে৷ ওনার স্ত্রীর নাকি একটা প্রতিষ্ঠান আছে৷ যার নাম “খোলা রান্না”৷ ঘেন্না লাগলো৷ তাই এদেরকে লাথি মেরে একাই চেষ্টা চালাতে থাকলাম৷ কেননা আমি জানি মতলুব কতটা সৃজণশীল আর পরিশ্রমী৷
এরপর একদিন মতলুব বললো শুধু একটা উইংসের উপর নির্ভর না করে বহুমাত্রিক চিন্তা করতে হবে৷ যেন সব কিছু সহজেই কাস্টমারের কাছে পৌঁছানো যায়৷ বাড়ির রান্না খাবার, নিত্য প্রয়োজনীয় সদাই এমনকি গরুর ভূরি, সিঁদল, ইলিশের ডিম সব কিছু৷ তাই ব্যবসার নাম Poly’s Fashion থেকে হলো Poly’s World. আমাদের ভাগ্য Favour করলো৷ করোনার ভয়াবহতায় লোকজন বাড়ি থেকে না বেড়িয়ে বরং আমাদেরকে অর্ডার দিতে থাকলো৷ আমরা এই সময়টাকে পুরোদমে কাজে লাগালাম৷
একটি চার্জার ভ্যান কিনলাম৷ মাসিক বেতন দিয়ে একজন চালক নিয়োগ দিলাম৷ ব্যাস! বদলাতে লাগলো জীবন৷ জীবনের নতুন সংজ্ঞা পেলাম৷
শুধুমাত্র প্রাঞ্জল সেই মতলুবকে আজো পাচ্ছি না৷ এতটুকু বলেই পলি কাঁদতে থাকলো৷ আর চিৎকার করে বলতে থাকলো, জামান ভাই ওকে বোঝানতো আমরা কিছুই হারাইনি৷ ও আমার Inspiration. আমি ওকে ভালবাসি৷
মতলুব ভাই একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে!
আমি ওনার Pain বুঝতে পারি৷ সারাজীবন মানুষের জন্য নিবেদিত প্রাণ৷ এই মানুষটাকে কেউ মনে রাখেনি৷ সবচেয়ে বড় বেদনার ঘটনাটা হলো যে NGOর জন্য আজ সে প্রতিবন্ধী তারাও তাকে মূল্যায়ণ করেনি বরং অপদস্থ করেছে৷
অফিসের বিশেষ মিটিংয়ে উপস্থিত হতে যাওয়ার পথে সড়ক দূর্ঘটনার শিকার হয়৷ একটি পা হারান৷ অথচ অফিস চিকিৎসার খরচতো দূরে থাক চাকরী থেকে ছাটাই করলো৷ শুধু তাই নয় মটর সাইকেল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে বেতন থেকে সেটাও কেঁটে নিল৷ হায়রে NGO. মুখে কত মানবাধিকারের কথা বলে৷ অথচ এরা রক্তচোষার দল৷ আসলে সত্যি হলো NGOরা কোন মহৎ উদ্দেশে সৃষ্টি হয়নি বরং নতুন এক বুর্জোয়া’র তৈরি হয়েছে৷ আক্ষেপ! এদেরকে প্রতিহত করবার বা জবাবদিহি করবার কেউ নেই৷
চা-নাস্তা প্রায় শেষ৷ এমন সময় পলি ভাবি বললো, জামান ভাই আপনি থাকুন৷ ওর সাথে গল্প করুন৷ আমি মালগুলো ডেলিভারি দিয়ে আসি৷ তারপর একসঙ্গে রাতের খাবার খাবো৷ কথা দিলেনতো?
আমি একটু হেসে বললাম আজ নয়৷ আরেকদিন৷ বলে উঠে দাঁড়ালাম৷ মতলুব ভাইয়ের মনটা খারাপ৷ কাঁধে হাতে রেখে বললাম, You did a great job. এক চিলতে হাসি ফুটে উঠলো তার ঠোঁটে৷ সারাটা ঘর যেন আলোকিত হয়ে উঠলো ঐটুকু হাসিতে৷ বেশ একটা ভাল লাগা অনুভূতি নিয়ে আমি বেরিয়ে এলাম রাস্তায়৷
দেখলাম থরে থরে মালামাল সাজানো ভ্যানের চালকের পাশে বসে এক আত্মবিশ্বাসী নারী দিন বদলের দীপ্ত প্রত্যয়ে দিগন্তরেখা বরাবর ছুটে যাচ্ছে৷ মনের অজান্তেই ওকে একটা স্যালুট দিলাম৷ আর ধীর পায়ে হাঁটতে হাঁটতে বিড়বিড় করে বলতে থাকি, “পলি তোমরাই এদেশের অনুর্বর মাটিতে পলি মাটির প্রলেপে বদলে দেবে বন্ধ্যান্ত আর Traditional mind set up. জন্ম নিবে এক নতুন প্রজন্ম৷ যাদের হাতের যাদুর কাঠিতে নির্মিত হবে এক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ৷”

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।