গল্পতে রমেশ দে

সময়

জন্মের পর থেকেই সময়টা যেন দ্রুত গতিতে ছুটে চলেছে। তাকে বেঁধে রাখার উপায় খুঁজে পেলাম না। ছোটো বেলার সেই হাসিখুশি স্কুল জীবন।আর বাড়িতে ভাই, বোনদের সাথে ঝগড়া, খেলা, জিলিপি ভাগ করে খাওয়া। গ্রামের বন্ধুদের সাথে ফুটবল, ক্রিকেট, হাডুডু খেলা আরও কত কি? এরপর গ্রামের স্কুল ছেড়ে বড় স্কুলে ভর্তি হওয়া আর দেখতে দেখতে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পেরিয়ে যাওয়া। তারপর কলেজে ভর্তি হওয়া আর সেখানে নতুন খুশি, নতুন বন্ধু নিয়ে পথ চলা শুরু।আর স্কুলের সেই ছোটো বেলার বন্ধুরা সময় যেন তাদের দূরে নিয়ে চলে যায়। কেউ বা নিজের কলেজে আর কেউবা দূরের কোনো কলেজে ভর্তি নিয়ে চলে যায়। তখন তাদের সাথে যোগাযোগের সব মাধ্যম সময় যেন কেড়ে নেয়। কলেজে আবার শেষ করে কাজের জগতে পা রাখা শুরু হয়। এখানেও সময় যেন নিষ্ঠুর হয়ে পিছনের বন্ধুদের কোথায় যেন দূরে নিয়ে চলে যায়। কাজের জগতে এসে নতুন নতুন সহকর্মী, নতুন নতুন জায়গার সাথে পরিচয় হয়। এরপর সময় যেন বলতে থাকে,একা থাকা যাবে না। বাড়ির অন্দর মহলে শুরু হয় গুঞ্জন ছেলের বা মেয়ের বিয়ে দিতে হবে। বিয়ের পর নতুন সঙ্গী, নতুন জীবন সময় যেন আরো কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।পথ চলা শুরু হয়। ভালো, মন্দ, ঝগড়া,এই ভাবে সংসার তার নিজের তরী বেয়ে চলতে থাকে। তারপর সন্তান নিতে হবে। ছেলে, মেয়েকে বাবা,মা হতে হবে। সন্তানকে বড়ো করা,আর তার লালন, পালন করে বড়ো করে তোলা।এ যেন আর এক লড়াই। তারপর তাকে স্কুলে ভর্তি করা।আর তার ভালো ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা এ যেন জীবন, যুদ্ধে জয়ী হবার আর এক ধাপ।এরপর সন্তানের বিয়ে দিয়ে, তাদের সংসারের সুখের প্রদীপ জ্বালিয়ে, নিষ্ঠুর সময়কে বলতে চাওয়া তুমি তো পারো না স্থির থাকতে। তুমি তো দিন পার করে মাস নিয়ে এসো,মাস পার করে বছর। বছর পার করে আরো কত,কত বছর। তুমি তো সবাইকে যেন এইভাবে শিশু থেকে যুবক,যুবক থেকে বৃদ্ধ।আর বৃদ্ধ থেকে কষ্ট অবধি নিয়ে যাও।আর বৃদ্ধ বয়সে কত মানুষকে তুমি কত শত যন্ত্রনা, অপমান দিয়ে থাকো।তারা সহ্য করতে না পেরে, কেউ বা ইচ্ছামৃত্যু ডেকে নেয়।আর কেউ বা তোমার সাথে লড়াই করার জন্য ঘর থেকে পথে নেমে যায়।আর তাদের চোখের জল যেন এটাই বলতে থাকে। সময় তুমি বড়ো নিষ্ঠুর!!!

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *