গল্পেরা জোনাকি তে রীতা চক্রবর্তী (পর্ব – ৫১)

নীল সবুজের লুকোচুরি

ডাক্তার সাহানার কথা শুনে অস্বস্তি বোধ করছেন উপস্থিত সকলেই। তবু পরিস্থিতির জটিলতা কাটাতে চুপ করে থাকাটাই সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে মনে করছেন। আরিয়ান তার মায়ের এই ধরনের আচরণ দেখে হতবাক । নিজের চোখে
মায়ের এমন ব্যবহার না দেখলে বিশ্বাস করতেই পারত না। এগিয়ে গিয়ে মায়ের হাত ধরে সেখান থেকে চলে যায়।
রংয়ে রংয়ে রঙিন হল বসুন্ধরা।
মনের সবুজ গাছের পাতায় নবীন ধরা।
চোখের কাজল রাঙলো যখন
ফাগের নেশা লাগল তখন।
সোনাঝুরির প্রেমগাথা হার মানিকজোড়া।
যেদিক তাকাই নতুন আলোর বান ডাকা।
মন কোকিলার কুহু কুহু ভেজা মনে স্বপ্ন আঁকা।
দেখবো তোমায় আরশিতে তাই
বারে বারে চোখ তুলে চাই।
না বলা সব মনের কথা চোখের পাতায়
আখর হয়ে দেয় দেখা।
হঠাৎই এরকম একটা পরিস্থিতির জন্য কিছুক্ষণ সবাই চুপচাপ হয়ে যায়। ফলে পরিবেশটা বড্ড ভারী হয়ে ওঠে। ডাক্তার দেশিকান নীরবতা ভেঙে বলেন, “মিসেস মৈত্র কি একটু রিলাক্স ফিল করছেন? যদি খুব অসুবিধে না হয় তবে উঠে বসুন। আমি সাপোর্ট দিচ্ছি। কথাটা শুনে সুমিতা যেন হারিয়ে যাওয়া দুনিয়া থেকে বাস্তবে ফিরে এল। তাড়াতাড়ি বলে,” আমি তো অনেকক্ষণ থেকেই বলার চেষ্টা করেছি যে এখন অনেকটাই ফ্রেশ ফিল করছি। উইথ ইয়োর কাইন্ড পারমিশন, আমি কটেজে ফিরে যেতে চাই। দেশিকান সুমিতাকে হেল্প করতে হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসেন। আনসারি স্যার হুইলচেয়ারটা এগিয়ে দিলে সুমিতা শান্ত হয়ে চেয়ারে বসে। মিঠি মা’কে নিয়ে যাবে বলে চেয়ারের কাছে এগিয়ে গেলে দেশিকান বলে, মে আই’, মিস মিত্র?” অগত্যা মিঠি সরে আসে। আনসারি স্যার তখন বলেন, ম্যাডাম, চলো, আমি তোমার সাথে হাঁটতে হাঁটতে গিয়ে কটেজটা দেখে আসি। ভোরে তোমার হাতের চা’টা কনফার্ম করতে হবে তো!
দেশিকান সুমিতাকে নিয়ে ধীরে ধীরে এগিয়ে যায়। দুজনের মধ্যে নিচু স্বরে কথা চলতে থাকে। আনসারি স্যারের সাথে মিঠি ততক্ষণে কটেজে পৌঁছে গেছে।

অনেক ভাবনার মাঝেই কিছু ভাবনারা বড় প্রিয়।
ভাবের ঘোরে ভাবনা ঘোরে সমাধান তুমি দিও।
ভাবতে ভাবতে কোটরগত
চোখের কাজল ভার আনত।
সুখের ঠিকানা খুঁজে মরে কানা,
দুঃখের বেসাতি করে।
সুখ ফিরে যায় ব্যর্থ হৃদয়ে,
দুঃখের হাসি উপহার তাঁকে দিয়ে।

মিঠি ডিনারের জন্য রিকোয়েস্ট করলে আনসারি স্যার বেশ হালকা মেজাজে উত্তর দিলেন,”সে তুমি মন্দ বলোনি ম্যাডাম। কিন্তু আমি একা তো জয়েন করতে পারছি না। আরো একজন সঙ্গে রয়েছেন যে। তাঁকেও তো সাথে নিতে হবে। তোমার অসুবিধে হবে না?”
মিঠি মনে মনে তো এটাই চেয়েছে। তাই হেসে বলে, অসুবিধের কি আছে। ডিনারে তো এমনিতেই লাইট কিছু করব। আজ না হয় সবাই আমার ক্যারিশ্ম্যাটিক ডিশ টেষ্ট করবেন! দেশিকান সুমিতাকে নিয়ে যখন পৌঁছেছে তখন ওদের চারজনের জন্য ডিনার রেডি। পরদিন মোস্ট ইমপরট্যান্ট সিডিউল বলে দেরি না করে আনসারি স্যার দেশিকানকে সাথে নিয়ে ফিরে যান নিজের নিজের রুমে।

আসছি পরের পর্বে

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।