সমাজের সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে যারা সমগ্র জাতির জন্য লড়াই করেছে কোভিডের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার প্রাক্কালে সেইসব মানুষদের জানাই কুর্ণিশ
স্তম্ভ
বিসমিল্লার সানাই-এ প্রথম স্বাধীনতার সূর্যটা যেদিন ভোরের আগল ছিঁড়ে কুচকাওয়াজে বের হয়েছিল, সেইদিন থেকে একদল মানুষ চকমকি হাতে রাতের অন্ধকারেও আলো জ্বালিয়ে বেড়াতো ৷
উঠোনের গনগনে আগুনে স্বপ্নগুলোকে সেঁকে নিয়ে, কাদম্বিনী প্রতিদিন সাদা এফ্রনটা পরে নেয় ৷ প্রতিদিন তাঁর হাতের ছুরকাঁচির টুংটাং শব্দে নতুন প্রাণ হেসে ওঠে ৷ হাসপাতালের করিডোর থেকে কতবার যমরাজকে বিদায় দিয়েছে সে ৷ ওর শরীরের তেজকে আমি মাঝে মাঝে ভারতমাতার শরীরে মিশে যেতে দেখেছি ৷
নেতাজির মূর্তির সামনে দাঁড়িয়ে বিজয় রোজ রোদে পুরে অঙ্গার হয়ে যায়, ওর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আজ একটা হসপিটালে মৃত্যুর সঙ্গে পান্ঞ্জা লড়ছে একা ৷ অথচ তখনও সে মানুষটা শহরের অলিতে গলিতে সুরক্ষা নিশ্চিত করেছে ৷ অপরাধীকে সংহার করছে ভীমের মত আর মূর্তির সামনে দাঁড়িয়ে প্রার্থনা করছে তাঁর সন্তান যেন হয় নেতাজীর মত, বিনয় বাদল বা প্রীতিলতার মত ৷
প্রতিদিন কত নোংরা আবর্জনা কুড়িয়ে বস্তায় বাঁধে হরিয়ারা ৷ প্রতিদিন কত কষ্ট, কত অপমান বুকে লুকিয়ে ওরা আমাদের ভাগে বেড়ে দেয় নির্মল অনিন্দ্য জীবন ৷ অথচ অন্ধকার মেখে পরে আছে ওঁর সদ্যোজাত শিশুটা ৷ খিদের জ্বালায় তার উপোসী ঠোঁট দুটোয় ক্ষতবিক্ষত ভারতবর্ষের পুঁজ রক্ত জমে আছে ৷
কাদম্বিনী , বিজয়, হরিয়ারা এক একটা স্তম্ভ ৷ যে স্তম্ভগুলোর ওপর ভর করে ভারতবর্ষ এগিয়ে চলেছে ৷ আর আমরা ওদের পেছনে কুচকাওয়াজ করে এগিয়ে চলেছি ৷ সভ্যতার অলিগলি পেরিয়ে আকাশগঙ্গার বুকে সেই শ্রেষ্ঠ আসনের দিকে ৷
আকাশে বাতাসে এখন বিসমিল্লার সানাইয়ে বেজে চলেছে সুর ” সার যাহাসে আচ্ছা হিন্দুস্তা হামার……..