সম্পাদিকা উবাচ

শব্দই ব্রহ্ম, একথা আমি হাড়ে মজ্জায় বিশ্বাস করি৷ ছোটবলা থেকে শেখান হয়, শব্দ চয়নের দিকে খুব সতর্ক থাকতে হবে৷ অথচ বারবারই জীবনকে লালকার্ড দেখতে হয় শব্দের অসংযমী প্রয়োগে৷ পানে চুন বেশি পড়ে যাওয়ার মত৷ একেবারে গাল পুড়ে যায়৷ তার মধ্যে লক ডাউনে মানুষের আবার অঢেল সময়৷ কেউ একজন ভুল বলল কি, পঙ্গপালের মত কোথা থেকে জ্ঞানী মহাজ্ঞানীরা পিলপিল করে উড়ে এসে বাক্যবাণে একেবারে ফালাফালা করে দেয়৷ প্রশ্ন এখন এটাই- যে মানুষগুলো এখন হঠাৎ শিক্ষকের ভূমিকা নিলেন, তাদের সমাজের প্রতি তথা সমাজের মানুষগুলোর প্রতি যে দায়বদ্ধতা তা তারা কী সঠিকভাবে পালন করেছে বা করছেন? যদি প্রতিদিন সুন্দর করে খাওয়া দাওয়া করে দুপুরে ভাতোঘুমটা দেন আর বিকেলের পরে ধোঁয়া ওঠা কাপে চুমুক দিয়ে বিকেলের সিরিয়ালগুলো চোখ দিয়ে চেখে চেখে খান যাতে পাশের অমুক বৌদির সাথে আলোচনা করার সময় কোন রকম পিছিয়ে পড়তে না হয় আপনাকে! কিংবা তথাকথিত পুরুষসিংহরা, রাজজনীতি অর্থনীতি পড়শী- নীতি সব কিছুতেই যারা Jack of all treads master of none তারা যদি ৭টা থেকে ১০টা (লক ডাউনে যেটুকু সময় পাওয়া যায় আর কী) চায়ের দোকানে শুধুই চায়েরকাপে তুফান তোলেন আর তারপর ঐই আপনারাই পান্ডিত্বের ঝুলি নিয়ে এসে অন্যের বিচার করতে শুরু করেন তাহলে বলব, আপনি মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন৷ কাজ যে করে তার ভুল হওয়াটা বা বলাটা খুব অস্বাভাবিক নয়, কারণ সে একটা কনটিনিউয়াশ প্রসেসের বা ক্রমাগত প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে৷ একদিকে যখন গ্রাম কে গ্রাম প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা অতিমারীর গ্রাসে উজার হচ্ছে তখন যেসব মানুষগুলো তারা যে পতাকার তলায় থাক, যে দলের, যে বর্ণের প্রতীকী বয়ে আনুক, শেষ পর্যন্ত তারা সকলেই তো মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য অথবা মানুষকে ভালো রাখার জন্য চেষ্টা করে চলেছে! আর অন্যদিকে আপনারা কী করছেন, খাটে পা ঝুলিয়ে বসে তাদের ভুল ত্রুটি, দল, রং নিয়ে বিভিন্নভাবে সোচ্চার হচ্ছেন!
ভুল করতে দিননা ভুল বলতে দিননা ওরা নিজেরাই নিজেদের ভুলটা সংশোধন করবে৷ কাগুজেবাঘ হয়ে লাভ কী, লড়াইয়ের ময়দানে নেমে দেখুন, লড়াইটা কত কঠিন!!! সশরীরের নাই পারেন মানসিক ভাবে কিংবা আর্থিকভাবে তো থাকা যায়ই!!! এত বিপন্ন পরিস্থিতিতে ভুল না ধরে একটু মানবিক হন, দল না দেখিয়ে সামগ্রিক জাতির পাশে দাঁড়ান! দেখবেন এর থেকে পরম তৃপ্তি আর আনন্দ অন্য কিছুতে নেই৷ আপনার উত্তরসুরিকে কী শেখাচ্ছেন আর কী জবাব দেবেন ভেবেছেন তো ?????