ক্যাফে টকে প্রাপ্তি সেনগুপ্ত

এই প্রথম ৫ই সেপ্টেম্বর বাড়িতে, মনখারাপ কী না জানি না… তবে কেমন ফাঁকা লাগছে!!! আমাদের আশে পাশে লেপ্টে থাকা, বকুনি খেয়েও প্রতিবার কেক কাটা, বেলুন ফোলানো, আর স্কুল জুড়ে হুজ্জুতি… সব কেমন ছবির মনে মনে আসছে!!
আজ তাই ক্যাফে টক এক দিদিমণি, যে কী না নিজেই সবটুকু শিখে উঠতে পারলো কী না জানে না… তার কথা বলি!!!
শেখা না শেখানো কোনটা বেশি কঠিন??
কোনোটাই নয়, যেটা শিখেছি
যা যা শিখেছি বা প্রতিনিয়ত শিখছি, সেটাকে “ফিল্টার করে” শেখানোটা আসল চ্যালেঞ্জ!!!
আসলে যা যা শিখি, বহুকিছুই জেনে বুঝেও জীবনে প্রয়োগ করি না… ছোট একটা উদাহরণ দিই, এই যে ছোটবেলা থেকে দ্বিচারিতা না করতে শিখি সেটা নিজেরা প্রয়োগ করি প্রতিদিনের জীবনচর্যায়?
পারি? শুধুমাত্র কতগুলি আদর্শকে বুকে আঁকড়ে বেঁচে থাকতে? নাকি সুযোগ বুঝে পাশ কাটাই চোখ বুজে??
আজকাল সময় যত গড়াচ্ছে তত বুঝতে পারছি… কাউকে শিক্ষা দেওয়ার মতো শক্তপোক্ত মেরুদণ্ডটা আগে তৈরি করা বেশি দরকার!!!
আপনি আচরি ধর্মকে পাথেয় বানালেই আত্মানং বিদ্ধি সম্ভব…
আসলে শিক্ষক শব্দটার ভার বড় বেশি, দায়ও… আমার বা আমার বলা একটা কথাও যদি কারো, একজন কারো জীবনবোধে গেঁথে যায়, তবেই না আমি শিক্ষক!!!
আজ শেষ করবো, কটা গল্প বলে, কিছু শিক্ষা কীভাবে জীবনের বীজমন্ত্র হয়ে ওঠে, সেটা বলে…
এই যে রোজ একটু একটু করে ‘প্রাগৈতিহাসিক’ হচ্ছি…মাঝে মাঝেই ঠিক-ভুলের দাঁড়িপাল্লার কাঁটাটা গন্ডগোল করে! তখন একা বসে ভেবে দেখলে দেখি কয়েকটা বীজমন্ত্র রয়েছে আমার,যেগুলো মন্ত্রগুপ্তি নয়। জীবনের প্রতিটা বাঁকে ঐ কয়েকটা বোধকে আঁকড়েই বেঁচেছি!
খুব ছোটবেলা থেকে আমাদের স্কুলে বাণী পড়ানো হত,লেখানো হত…প্রথম বীজমন্ত্রটা সেখানে পাওয়া!পুরো লাইন মনে নেই এখন আর…তবে নির্যাসটা রয়ে গেছে ভিতরে!
“জীবনে এমন কিছু করবে না বা করার চিন্তা করবে না,যা মায়ের কাছে গোপন করার ইচ্ছা তোমার হয়…”-ঋষি অরবিন্দ!!!
মায়ের সাথে বহু মতের অমিল হয়েছে,এখনও হয়,কিন্তু এই একটা বীজমন্ত্রের জোরে কাটিয়ে উঠেছি সবকিছু।
এরপর আরএকটু বড় হতে হতে একদিন স্কুলেই কোনো একটা পনেরই আগষ্টের আগে চার্ট করার সময় মালাদির সাথে বসে কথা বলছি(সেদিন আমার সাথে আর কেউ ছিল কী না মনে নেই)…আমার স্কুলের সহপাঠীরা জানে কত খোলামেলা গল্প কত নিশ্চিন্তে করতাম আমরা ওনার সাথে!!!
সেইরকমই কোনো একদিন কথায় কথায় মালাদি বলেছিলেন পড়াশুনার জন্য বিদেশ যেও,তবে থেকে যেওনা কোনদিন! দ্বিতীয় বীজমন্ত্র সেদিন পাওয়া হল… বলতে বাধা নেই,অনেকসময় সুযোগ এসেছে তবু যাওয়া হল না!!!
আর এই কদিন আগে এক কাছের মানুষকে দুর্গাপুজোয় কেন ছুটিতে আসবে কী না জানতে চেয়েছিলাম… তার সরাসরি অনায়াস উত্তর দেশের অনেক বড় কাজ বাকি সামনে,এমন দুর্গাপুজো অনেক আসবে জীবনে!!!
কোনো উৎসব, কোনো সম্পর্ক সেই মানুষের কাজের উপরে হল না… হয় না।
এভাবেই হাতে ধরে শিখিয়ে দেওয়া মানুষগুলো আসলে কানে কানে যা বলে দিয়ে যান,তাই ধীরে ধীরে বীজমন্ত্র হয়ে ওঠে জীবনের। প্রতিটা কঠিন সময়ে, সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় মনে মনে জপে নিই মন্ত্রগুলি!!!
আমি শিখি রোজ, প্রতিদিন…
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।