গুচ্ছকবিতায় প্রভাত মণ্ডল
বন্ধুস্মৃতি
হারিয়ে গেছিস অনেক দূরে
তবুও ডাকি আপন সুরে
উত্তর তবু দিস না বন্ধু
কেবল দিস দেখা ,
আগেও ছিলিস আজও আছিস
তুই যে প্রাণের সখা ।
হারিয়ে গেছে বন্ধু আমার
হারিয়ে গেছে সব ,
হারিয়ে গেছে প্রাণের মাঝের
নিত্য কলরব ।
নদীর স্রোতের কলধ্বনি
আজও তো নিত্য শুনি ,
প্রাণ মাঝারের হর্ষধ্বনি
আজ যে কেবল চোখের পানি ,
নিত্য নিত্য দিন যে গুনি
বন্ধুরে ! তুই ফিরবি কবে !
আজি আঁখি জলে ডাকি তোরে
বন্ধু তুই কোথায় ?
হাজার তারার ভীড়ের মাঝে
তোর হয়েছে ঠাঁঁই ,
আজ এত ডাকি তবুও বন্ধু
দিস না সাড়া তাই !
কে ডাকে
অন্ধকার হতে আলোর পথে এলে
বহুদিন হলো , ওই যে
পথটা তুমি পেরিয়ে এসেছো
ওখানে তুমি পথিক’ই ছিলে
আজও সেই পথিক’ই আছো ।
তবুও মানতে চাও না
বড্ড বোকা তুমি হে মন !
ওই রাঙা পলাশ যেদিন কুড়িয়েছিলে
আর বলেছিলে , পলাশ !
আমি তোমাকে কুড়ালাম ।
পলাশও বলেছিলো , বোকা !
তুমি আমাকে কি কুড়াবে !
আমি তো আপনি হতে দিয়েছি
ধরা তোমার কাছে
নতুবা তোমার কি সাধ্যি আছে !
আজ সময় অনেক হলো , ক্লান্ত এ পথ চলা
বয়স আমাকে ধরে
নাকি আমি বয়সকে ধরি !
তবু পথ তো কমেছে !
আজ বয়স রূপী সীমান্তটা ধরা দিতে চায়
রাঙা পলাশের মাঝে ,
অস্তরাগের লাল সূর্যটাও
নদীর বুকে লাল পলাশের ছায়া ফেলে যায় ।
বুঝিয়ে দেয় সন্ধ্যা সমাগত
আঁধার নামছে তুমি তৈরি হও !
লাঠি হাতে কাঁপতে থাকা তোমার পদযুগল
বৃদ্ধাশ্রমের দিকে অগ্ৰসর হতে চায় ।
তখন মন বলে আমি আত্মহননকে ডাকছি
আত্মহনন বলে , মন কই !
আমি ডাকছি বলেই তো তুমি আসছ ।
আঁধো চাঁদ
আঁধো চাঁদ গোঁধূলিতে
পশ্চিমি সিঁথি পানে ,
সাতরঙা রামধনু
শুধু মোর আঁখি টানে ।
বেণুবনে শিরে তুমি
চঞ্চলা হাসি মুখে ,
চপলা হরিণী তুমি
বেলা শেষে মহা সুখে ।
দুধসাদা বক ওই
পাখা মেলি তোমা দ্বারে ,
ভাবাবেশে সারি বেঁধে
মহাসুখে ফেরে ঘরে ।
জোনাকি মেলিয়া পাখা
আঁধারে ঘুরিতে চায় ,
শেষ হল রবি তেজ
মধ্যাহ্নের ধূপছায় ।
আঁধোমুখ তুলিয়াছো
হাসিভরা মধু লাজে ,
চরণে আলতা পরে
সাজিছ নববধূ সাজে ।