।। ত্রিতাপহারিণী ২০২০।। T3 শারদ সংখ্যায় পূর্বা কুমার

অসুখ

— স্যার, দুইয়ের অনুশীলনীর চারের অঙ্কটা কিছুতেই পারছি না। অনেক চেষ্টা করেছি। একটু করে দিন না স্যার।
ব’লে খাতাটা এগিয়ে দেয় তুহিন। পেনটা বুক পকেট থেকে নিয়ে লিখতে গিয়েও লিখতে পারলাম না। হাতটার ভীষণ যন্ত্রণা হচ্ছে।
ইদানীং এই এক অসুখ হয়েছে আমার। হাতের যন্ত্রণা। তাও আবার ডান হাত। কাজের হাত। লেখালিখির হাত। মহা মুশকিল। অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি। এক্স রে করিয়েছি । এলোপ্যাথি , হোমিওপ্যাথি , কবিরাজি কিচ্ছু বাদ দিই নি। ফিজিওথেরাপিস্ট এখনও দুবেলা আসছে। হু হু করে টাকা বেরিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কোথায় কি ! এক জ্যোতিষীর কাছ থেকে মাদুলি এনে চুপি চুপি ডানহাতে পরেছি। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। সব সময় একটা বিচ্ছিরি অস্বস্তি।
সবুজও ঠিক এরকম করেই বলত। “করে দিন না স্যার। অনেক চেষ্টা করেছি।“ তুহিনের ঝকঝকে বুদ্ধিদীপ্ত চোখদুটো বড়ো বেশি করে সবুজকে মনে করিয়ে দেয়। সবুজ, সুদীপ্ত, উদয়, পলাশ ….. কমলামাতা বিদ্যাপীঠের ছেলেগুলো কি প্রাণবন্তই না ছিল ! অবশ্য এখন আমি ওই ইস্কুল ছেড়ে চলে এসেছি। তা প্রায় হয়েও গেল চার বছর। অথচ মনে হয় যেন এই সেদিনের কথা ………
প্রতিদিন টিফিন টাইমে ওদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলতে মাঠে নেমে পড়তাম। এই ছোট ছোট ছেলেগুলোর সঙ্গে খেলতে আমার দারুণ লাগে। স্যার আপনি কিন্তু আউট ……. না না স্যার ক্যাচ হয় নি ……. স্যার আপনি কিন্তু চিটিং করছেন …… কচি কচি গলার হল্লায় শরীর মন টাটকা অক্সিজেনে ভর্তি হয়ে যায়।
— এই সুদীপ্ত ! সবুজ কোথায় রে ? দেখতে পাচ্ছি না তো !
— স্যার, সবুজ ক্লাসে। ব্যাগে মাথা রেখে বসে আছে দেখেছিলাম।
— যা ডেকে নিয়ে আয়। বলবি আমি ডাকছি।
সুদীপ্ত ছুটে চলে যায়। মিনিটখানেক পর ঘুরে আসে।
— স্যার, সবুজ রুমে নেই। দোতলাতেও খুঁজে এলাম। সেখানেও নেই।
— ছাদটা একবার দেখে আসব স্যার ? মাঝে মাঝে ছাদে একলা একলা বসে থাকে।
উদয় বলে।
— যা, দেখে আয়।
এতটুকু একটা ছেলে সব সময় কেমন মনমরা হয়ে থাকে। মেশে না কারও সংগে, কথা বলে না কারও সঙ্গে। গুম মেরে থাকে। কি ভালো গান গাইত ছেলেটা ! ‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি ক্যামনে আসে যায়’ আহা ! সুর বটে গলায় ! এখন হাজার সাধলেও এক লাইন গায় না। সবেতেই এক উত্তর, “ভালো লাগছে না”।
খানিকপরে উদয় সবুজকে নিয়ে এল।
— কোথায় ছিলি ! তাড়াতাড়ি আয়। নে, নে, বল কর। ওরা তো আমাকে আউট করতেই পারছে না। দ্যাখ না, কেমন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মার খাচ্ছে।
আমি ওর বিষাদটুকু উড়িয়ে দেবার চেষ্টা করি।
— খেলতে ভালো লাগছে না স্যার।
— ভালো লাগছে না বললে হবে না সবুজ। সবাই খেলছে, তুমিও খেলবে।
একটু কড়া গলাতেই বললাম।
সেফটিপিন আঁটা হাওয়াই চটিটা খুলে নিতান্ত অনিচ্ছায় বল করতে লাগল। যেন একটা দম দেওয়া কলের পুতুল।
গরিব ঘরের মেধাবী ছেলে সবুজ। বাবা ভ্যানে করে পানিফল বিক্রি করে। সবুজের সবথেকে ভালোবাসার মানুষ হল ওর বাবা। দমকা হাওয়ায় কারও বাড়ির ছাদ আচমকা উড়ে গেলে যে অবস্থা হয়, ঠিক তেমনই হল সবুজের। ভ্যান নিয়ে হাইরোড ক্রস করতে গিয়ে একেবারে লরির তলায়। মুহূর্তে সব শেষ। সবুজ হঠাৎই একেবারে খোলা আকাশের নীচে।
দিনদশেক পর থেকে সবুজ ইস্কুল আসতে শুরু করল। কিন্তু এ এক অন্য সবুজ। অস্বাভাবিক চুপচাপ। দশটা কথা বললে একটার উত্তর দেয়।সেদিন কি একটা কাজে দোতলার উত্তর দিকের বারান্দায় গেলাম। এদিকটায় সচরাচর কেউ আসে না। ভাঙ্গা চেয়ার, ভাঙ্গা বেঞ্চ রাখা থাকে। দেখি, সেখানে সবুজ চুপ করে আনমনা হয়ে বসে আছে। আমার পায়ের শব্দও টের পায় নি। আস্তে আস্তে গিয়ে ওর পিঠে হাত রাখলাম। চমকে তাকাল।
— মনখারাপ লাগছে ? একা বসে আছিস যে !
কি জানি কি হল ওর ! হঠাৎ আমার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ল। আমাকে জড়িয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করল। সেই একবারই। আর কখনও কোনদিন ওকে কাঁদতে দেখি নি।
হঠাৎ সবুজ ইস্কুলে অনিয়মিত হতে শুরু করল। একদিন আসে তো তিনদিন আসে না। জিজ্ঞাসা করলে উত্তর দেয় না। ওর মধ্যে একটা কঠিন জেদ আছে। নিজে থেকে কিছু না বললে স্বয়ং ঈশ্বরেরও ক্ষমতা নেই ওর মুখ থেকে একটা শব্দ বের করে আনে। ওদের গ্রামের কয়েকটা ছেলেকে জিজ্ঞাসা করলাম। কেউ ঠিকঠাক বলতে পারল না। উদয় একদিন বলল, সে নাকি সবুজকে বটতলায় সাট্টার ঠেকে বিড়ি খেতে দেখেছে। সুদীপ্ত খবর আনল, সবুজ ওর মায়ের সঙ্গে কিসব নিয়ে রোজ ঝগড়া করে। আর ওর মাও কোথায় যেন কাজে যায়, আদ্দেক দিন বাড়ি ফেরে না।
বার্ষিক পরীক্ষা হয়ে গেছে। স্টাফরুমে বসে খাতা দেখছি। বংশীবাবু হঠাৎ বলল,”নাইনের সবুজের কেমন অধঃপতন হয়েছে দেখেছ ? এখন আর একদম পড়াশুনা করে না। ইংরেজিতে কোনরকমে টেনেটুনে উৎরেছে। ইস্কুলেও আসে না ঠিকমত।“ কিছু বললাম না। আমার অঙ্ক খাতাতেও সহজ অঙ্কগুলো ভুল করেছে, আধখানা করেছে, সবগুলো করেও নি। খাতার ফাঁকা পাতায় বসে বসে হিজিবিজি কেটেছে। সাতাশ পেয়েছে। ভূগোলের রমেনবাবু বলল, “বাবা মারা যাবার পর ছেলেটা একেবারে বখে গেছে। শাসন করার আর কেউ নেই তো। মাও কাজে চলে যায়।“ কি জানি কেন , হঠাৎ ওর মনখারাপ করা করুণ মুখখানা চোখের সামনে ভেসে উঠল। বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠল।
রেজাল্ট বেরিয়েছে। সবুজ অবশ্য ফেল করে নি। কোনরকমে ক্লাস টেনে উঠেছে। নতুন ক্লাসে ভর্তি প্রক্রিয়াও প্রায় শেষ। দেখলাম সবুজ ভর্তি হয় নি। আমি রমেনবাবুকে নিয়ে একদিন ওদের বাড়ি গেলাম। মাঠের ধারে বাঁশের ছ্যাঁচা দেওয়া লজঝড়ে ঘর। উঠোনে একটা দৈত্যাকার তেঁতুল গাছ। এ তো সাপখোপের আড্ডা ! এখানে মানুষ থাকা কি করে সম্ভব ? উঠোনে দাঁড়িয়ে সবুজের নাম ধরে ডাকলাম। নোংরা লুঙ্গি পরা একটা ষন্ডামার্কা লোকের পিছন পিছন সবুজ বেরিয়ে এল। ইসস ! কতো রোগা হয়ে গেছে ছেলেটা ! জিরজিরে শরীরে চোখদুটোই সার।
— কি রে ? ভর্তি হলি না কেন ?
— আমি আর পড়ব না স্যার।
— সে কি ! কেন ?
আমি আঁতকে উঠি।
এবার নোংরা লুঙ্গি কুৎসিত অঙ্গভঙ্গি করে খেঁকিয়ে উঠল, “পড়ে কি দিগগজ হবে ? মা মাগি তো বিহারী লরিওলার সঙ্গে ভেগেছে। ছেলেটার কথা একবারও ভাবল না ? মা না রাক্কুসী ! ভাইটা সগগে যেতেই মাগি যেন সাপের পাঁচ পা দেখল। নাঙ করা নিয়ে তো ছেলের সঙ্গে রোজকার খটাখটি।“
লোকটার মুখ থেকে ভকভক করে মদের গন্ধ বেরোচ্ছে। সবুজকে দেখে মনে হচ্ছে ও আমাদের সামনে ভীষণ অস্বস্তিতে পড়েছে। মুখটা কোথায় লুকোবে ঠিক করতে পারছে না।
— আপনি তো মনে হচ্ছে সবুজের জ্যাঠা। ওকে পড়াটা ছাড়াবেন কেন ? ও তো পড়াশুনায় ভালো।
রমেনবাবু বলে।
— বলি দুবেলা ভাতের জোগান কে করবে ? ছেলেপিলে নিয়ে নিজেরই চলে না। আমার শালা পুনেতে কাঠের কাজ করে। ওর কাছে পাঠিয়ে দেব ভাবছি। যা হোক একটা বেবস্তা তো হবে।
— টেনে উঠেছে, অন্ততপক্ষে মাধ্যমিকটা দিক। ওর খাওয়া পরার খরচ নিয়ে ভাববেন না। আমরা তো আছি। ওকে ইস্কুলে পাঠাবেন।
অনেক বুঝিয়ে শেষ পর্যন্ত সবুজের জ্যাঠাকে রাজি করানো গেল।
সবুজ ভর্তি হল। ইস্কুল আসতে শুরু করল। অবসরে ওকে আলাদাভাবে ডেকে বোঝাতাম। একরকম কাউন্সেলিংই বলা চলে। একটা মেধাবী ছেলেকে নষ্ট হয়ে যাওয়া থেকে যে কোনভাবে আটকাতে প্রাণপন চেষ্টা করে যাচ্ছিলাম। কিন্তু আবার অন্য এক সমস্যা দেখা দিল। সমস্যার মূলে সুজন। ডেঁপো ছেলে। কে যে ওর নাম সুজন রেখেছিল ! কয়েকজনকে জুটিয়ে ফাঁক পেলেই সবুজকে উত্যক্ত করত। ওর মাকে জড়িয়ে কুৎসিত ইঙ্গিত করত। চলতে চলতে শামুক যেমন সামান্য আঘাতে নিজেকে শক্ত খোলসের মধ্যে লুকিয়ে ফেলে তেমনি সবুজও কিরকম যেন গুটিয়ে গেল। ক্লাসেও চূড়ান্ত অমনযোগী হয়ে পড়ল।
সেদিন টিফিনের পরের পিরিয়ডেই অঙ্ক। ক্লাসে গিয়ে দেখলাম সবুজের ব্যাগ আছে অথচ সবুজ নেই। পড়াতে শুরু করলাম। দশ মিনিট পর সবুজ এল।
— কোথায় ছিলে এতক্ষণ ?
খুব রেগে গেলে আমার মুখ দিয়ে ‘তুমি’ বেরোয়।
সবুজের কোন উত্তর নেই।
— আমার কথা কানে যাচ্ছে না ? উত্তর দাও।
আমার গলা চড়ছে। সাথে সাথে মেজাজও। ধৈর্য সীমা ছাড়াচ্ছে।
সবুজ তাও চুপ করেই রইল।
— যাও ! জায়গায় যাও ! খাতা বের করো।
জোরসে ধমক লাগালাম। এত জোর যে গোটা ক্লাস চমকে উঠল।
আগের চ্যাপ্টার থেকে দুটো অঙ্ক কষতে দিলাম। কিছুক্ষণ পর দেখি জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে। অঙ্ক করে নি।
চড়াত করে রাগ উঠে গেল আমার।
— উঠে আয় এদিকে।
এল না। ঠ্যাঁটার মতো দাঁড়িয়ে রইল।
ওর এই চুপ করে থাকাটা সহ্য করতে পারছিলাম না আমি। তাই আরও কর্কশ হয়ে উঠল আমার গলা।
— এদিকে আয় বলছি। খাতাটা নিয়ে আয়। সবু উ উ উ জ !
নিজের কঠিন কন্ঠস্বর নিজের কানেই বেখাপ্পা লাগল। গোটা ক্লাস চুপ। ঘরে পিন পড়ার নিস্তব্ধতা। এবারও কিছু বলল না সবুজ। শুধু মাথা হেঁট করে আস্তে আস্তে খাতাটা নিয়ে এল। ফাঁকা খাতা। চরম ধৈর্যচ্যুতি ঘটল আমার। খাতাটা নিয়ে মুচড়ে দলা পাকিয়ে দরজা দিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দিলাম। তারপর এলোপাথাড়ি চড়চাপ্পড় শুরু করলাম। পিঠে…. মাথায়…. মুখে ….বেহায়া ! নির্লজ্জ ! একেবারে উচ্ছন্নে গেছ ! কিচ্ছু হবে না তোমার দ্বারা। ফালতু চেষ্টা। মারতে মারতে আমার হাত ঝনঝনিয়ে উঠল। সবুজ কিন্তু নির্বিকার, নীরব। একবার আঃ উঃ পর্যন্ত করল না। যেন একটা পাথর দাঁড়িয়ে আছে। আমি থামলাম। সম্বিত ফিরল। ওর বিধ্বস্ত অসহায় চেহারাখানা দেখে বুকে যেন আচমকা একটা পিন ফুটল। কি জানি কেন, আমার গলায় বাষ্প জমতে শুরু করল। গলার স্বর বুজে এল। দৌড়ে ক্লাসরুম ছেড়ে বেরিয়ে গেলাম।
বাড়ি গিয়ে রাতে ভালো করে ঘুম এল না। হাতটা ব্যথা করছিল। মনটা ভাল লাগছিল না। পরদিন একটু তাড়াতাড়িই ইস্কুল চলে গেলাম। প্রেয়ার শুরুর আগে গ্রুপ ডি তরু দি হাঁপাতে হাঁপাতে স্টাফরুমে এল। থমথম করছে মুখ।। “খবর শুনেছেন ? সবুজ কাল রাতে বিষ খেয়েছে। পাওয়ারফুল পেস্টিসাইড।“
মনে হল বুকের মধ্যে ধপ করে কি একটা পড়ল। স্পষ্ট শব্দ পেলাম।
সেদিন নীরবতা পালন করে ছুটি হয়ে গেল। ছুটির পর আমি আর রমেনবাবু সবুজদের বাড়ি গেলাম। উঠোনে তেঁতুল গাছটার তলায় শুয়ে রয়েছে নিথর সবুজ। পায়ের পাতায়, হাঁটুতে কাদা লেগে রয়েছে। পুলিশ এসেছে। আমরা যেতেই সামনের ভিড়টা সরে গেল। মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা বেরিয়ে শুকিয়ে গেছে। কয়েকটা মাছি উড়ে উড়ে মুখে নাকে বসছে।কাছে গিয়ে হাঁটু মুড়ে বসলাম। অভিমানভরা মুখটা যেন বলছে, “স্যার, আপনিও ! আমাকে মারলেন স্যার ! কেন ? কি দোষ আমার ?” ওর মাথাটা ছোঁয়ার জন্য হাত বাড়ালাম। কিন্তু এ কি ! হাতটা যে কিছুতেই বাড়াতে পারছি না। তীব্র যন্ত্রণা হচ্ছে হাতে। শরীর থেকে যেন খসে পড়ে যাবে হাতটা। উঠে চলে এলাম ওখান থেকে। বলা ভালো, পালিয়ে এলাম।
পরদিন ক্লাস নিতে গিয়ে বারবার চোখ চলে যাচ্ছিল। জানলার ধারের বেঞ্চটা ফাঁকা। খালি মনে হচ্ছিল, দেরী হয়ে গেছে, এখনই হয়তো এসে পড়বে। কালকেও তো দেরী করেই এল।
বছরখানেক পর আমি ট্রান্সফার নিয়ে কমলামাতা বিদ্যাপীঠ থেকে এই বেলতলা হাইস্কুলে চলে আসি। ইস্কুল যাই, অঙ্ক করাই, ছেলেদের সঙ্গে মজা করি, ক্রিকেট খেলি……এখন সব নর্ম্যাল। শুধু হাতের যন্ত্রণাটা যাচ্ছে না। কখনও বাড়ে, আবার কখনও কমে, কিন্তু কিছুতেই সারে না।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।