সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে প্রদীপ গুপ্ত (পর্ব – ১১)

স্ট্যাটাস হইতে সাবধান

দ্বিতীয় অধ্যায়, ৪র্থ পর্ব

একটা ভীষণ দোটানার ভেতর পড়ে গেলো কবি ফুলটুসি খাসনবিশ। একদিকে স্বামী মিষ্টার তলাপাত্র অন্যদিকে প্রেমিক বরুণ। একেই বিয়ের পর নিজের পদবী বদল করা হয় নি, যদি কোনোক্রমে ওই ভোম্বলটার কিছু হয়ে যায় তাহলে ব্যাংকের টাকাপয়সা, চাকরি, চাকরিক্ষেত্রের টাকাপয়সা সবই বেদখল হয়ে যাবে। বিয়ের পর মা পইপই করে বলেছিলেন — ওরে ফুলু একেই তো পালিয়ে গিয়ে কালিঘাটে মালা বদল করেছিস। বিয়ের কোনো নেমন্তন্নর কার্ডও নেই, নেই তো নেই, এতো গাফিলতি ঠিক না । মনে করে রেজিস্ট্রিটা করে নে মা। তুই যে ওকে বিয়ে করেছিস তার কোনো প্রমাণ আছে তোর কাছে? ভগবান না করুন জামাই বাবাজীবনের যদি খারাপ কিছু একটা হয়ে যায়, তখন তো একেবারে পথে বসবি রে মুখপুড়ি।
মা যতই বকরবকর করুক, ফুলটুসি কিছুতেই ওর নামের পেছনে ওই বদখৎ পদবীটা লিখবে না, তাতে ওর যা ক্ষতি হয় হোক। তলা পাত্র, অ মাগো! কী অখাদ্য! কালিঘাটের পুরোহিতটা পর্যন্ত মন্ত্র পড়তে পড়তে তলাপাত্র শব্দটা শুনেই খ্যাঁকখ্যাঁক করে হেসে দিয়েছিলো। বলেছিলো — স্যার আপনার ওপরের পাত্রটা তো বেশ পুরুষ্টু, তলারটাও কি এরকমই নাকি পাত্রের মাঝখানে একটা ফুটো। অথচ বৌদির পদবীটা দেখুন তো, কী সুন্দর একটা খাস বন্দোবস্ত! শুনলেই মনে হয় বেশ জমিদার জমিদার!!!
সেই, সেদিন থেকেই ফুলু সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছিলো যে সে কোনোমতেই ওর এই জমিদারি ছেড়ে তলায় ফুটো পাত্র নিয়ে ঘুরবে না।
রান্নাঘর থেকে গোঙানির আওয়াজ আসছে, আর ওদিকে বরুণের কমেন্টের রিপ্লাই, কোনটা যে বেশী গুরুত্বপূর্ণ সেটা ফুলটুসি সহসা বুঝে উঠতে পারছে না। শেষপর্যন্ত পায়ে পায়ে রান্নাঘরের সামনে এসে দাঁড়ালো।

ক্রমশ

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।