সাপ্তাহিক ধারাবাহিক কথা সাগরে প্রদীপ গুপ্ত (পর্ব – ২৪)

ঋষি বাহ্যজ্ঞানরহিত হয়ে হাতে টর্চটাকে নিয়ে দৌড়ে দরজার দিকে যেতে গিয়ে স্নেহার দুহাতের আগলে আটকে গেলো। স্নেহা ঋষিকে ধরে জোরে একটা ঝাকুনি দিয়ে প্রায় চিৎকার করে উঠলো — কী হচ্ছেটা কি ঋষি? তুমি কি পাগল হয়ে গেলে? কোথায় যাচ্ছো, কীজন্যই বা যাচ্ছো, এই মুহূর্তে তোমার এভাবে খালি হাতে ঘরের বাইরে যাওয়াটা কি উচিৎ না অনুচিত সেসব কিছু না ভেবেই…
— স্নেহা, আমার মনে হচ্ছে আমি বেশ কিছুটা বুঝতে পেরেছি। ওই বেড়ালটা…
— ড্যাম ইয়োর বেড়াল। হু ক্যান সে হোয়েদার ইটস আ কন্সপিরেসি এগেইনস্ট আস অর নট? এভাবে যে কেউ আমাদের ঘরের বাইরে বের করে নিয়ে শারীরিক ক্ষতি করতে চাইছে কিনা সেটা তুমি কীভাবে বুঝবে? ডোন্ট বি ইমোশনাল ম্যান, এন্ড এট ফার্স্ট থিংক অফ আস, আমাদের বন্ধুত্বটা বোধহয় আর ঠিক বন্ধুত্বের পর্যায়ে নেই, আমরা বোধহয়… নইলে আমিই বা কেন, বাড়িঘর ফেলে শুধুমাত্র তোমার বিপদের কথা ভেবে… এম আই রং ঋষি?
স্নেহা গভীরভাবে ঋষির দিকে তাকিয়ে থাকে। স্নেহা যে এভাবে ঋষিকে কথাটা বলে ফেলবে, এতো সাধারণভাবেই যে স্নেহা এরকম একটা গুরুত্বপূর্ণ কথাকে বলে ফেলতে পারে, সেটা ঋষি কল্পনাও করে উঠতে পারেনি। ও যেন ধাতস্থ হতে একটু সময় নিচ্ছে।
— আই এম সো লাকি স্নেহা। রিয়েলি লাকি। ইটস জাস্ট… আই ডু নট, আর ইউ শিওর দ্যাট ইউ… হোয়াট আ… রিয়েলি আমি ঠিক ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না স্নেহা, মানে এর আগে কোনো মহিলা আমাকে… ইটস রিয়েলি দ্যা ফার্স্ট টাইম ইন মাই লাইফ স্নেহা। আচ্ছা আমার এখন কী করা উচিৎ? এই মোমেন্টটাকে কীভাবে সেলিব্রেট করা উচিত স্নেহা? আমার কি এখন তোমার সামনে হাঁটু মুড়ে বসে আমার হার্টটাকে অফার করা উচিৎ?
স্নেহা ওর ঠোঁটদুটোকে ঋষির কপালের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে গিয়ে থমকে দাঁড়িয়ে গেলো। ঘরের সিলিং থেকে একটা হাতের পাঞ্জার মাপের একটা মাকড়সা ধপ করে ওদের পায়ের কাছে পড়েই তড়বড় করে দরজার দিকে দৌড়ে বারান্দার অন্ধকারে মিলিয়ে গেলো।
ঘটনাটা এত দ্রুত চোখের পলক ফেলার আগেই ঘটে গেলো যে ওরা যে দরজার দিকে এগিয়ে যাবে, সে সময়টুকুও পেলো না।
— এ এটা ঠিক কি জিনিস ঋষি! মা ক ড় সা? এত্তো বড়ো!
ঋষির হঠাৎ করে সেই পচাগলা চামড়ার কথা মনে পড়ে গেলো। আশ্চর্যজনকভাবে সেই চামড়াগুলোও এক একটা মাকড়সার মতো দেখতে ছিলো।
— স্নেহা, আমি একটা জিনিষ পরিষ্কার বুঝতে পারছি, যে আমরাই শুধু না, ওরাও আমাদের ভয় পাচ্ছে।
( ক্রমশ )