সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে প্রদীপ গুপ্ত (পর্ব – ১০)

স্ট্যাটাস হইতে সাবধান

— কী গো তুমি? বলি বাপের বাড়িতে কি কিছুই শেখায় নি? সামান্য একটু চা, তাও এককাপ চায়ের জন্য ককাপ জল আর ককাপ দুধ! এরপর বলবে ক’কেজি চিনি দেবো গোওওও? অখাদ্য একটা। শোনো, কানের মাথা খেয়ে শুনে নাও, এককাপের একটু বেশী জলে গুনেগুনে তিন চামচ দুধ আর দেড় চামচ চিনি দেবে বুঝেছো? কী প্রবলেম বলো দেখি! এখন আমি লাইক কমেন্ট দেখবো না চায়ের বানানোর টিচারগিরি করবো? এখনও তো বরুণই কোনো কমেন্ট করেনি! ওর কমেন্ট না পেলে কবিতা লেখা বেকার মনে হয়। কী সুন্দর ফুলের ছবি দিয়ে করা ওর ডিপি, আর তেমনি সুন্দর ওর লেখা। ওই তো লাইক করেছে, লিখছে, কমেন্ট লিখছে, ওফ্, তাড়াতাড়ি লেখো সোনা, তোমার কমেন্ট না পড়া পর্যন্ত যে আমার ইয়ে পেলেও চেপে বসে থাকতে হয়।

বিয়ে করে যদি হও অখুশি
খুশী করবো আমি
তোমার আমার মিলন রাতে
দেখবে তোমার স্বামী।
কী অপূর্ব দেখতে দেখাচ্ছে তোমাকে সুইটি, তোমার ঠোঁটের ওপর তিল এঁকে দেবো, সেটাই হবে বিউটি।

নাহ্, এতো সুন্দর একটা কমেন্টের উত্তর দিতেই হয়। নইলে এরপর বরুণ আর কমেন্ট করবে না। সেদিন একথা নিজে মেসেঞ্জারে এসে বলে গেছে বরুণ। কিন্তু কী লিখবে এখন ফুলটুসি? এটা লিখলে কেমন হয় — বিয়ে তো সে পুরোনো ছবি
এখন তো শুধুই খেলা
বিয়ের পিঁঁড়ি ভারী ভীষণ
হাল্কা পরকীয়া।
হ্যাঁ, এটাই লিখবে ফুলটুসি। উত্তেজনায় থরথর করে কাঁপছে কবিত্রী। উফ্, এটা লিখে দেখতে হবে এর উত্তরে বরুণ কি লেখে? সবেমাত্র কমেন্ট বক্সে লিখতে যাবে, এমন সময় রান্নাঘরের তাক থেকে সব বাসন যেন ঝনঝন করে একসাথে মেঝের ওপর এসে পড়লো। সাথে ওর স্বামীর আর্ত চিৎকার। মেজাজটাকে পুরো চটকে দিলো। ফুলটুসি চিৎকার করে উঠলো — বলি হচ্ছেটা কী? এককাপ চা বানাতে গিয়ে কি বাড়িঘর ভেঙে ফেলবে নাকি?

ক্রমশ…

Spread the love

You may also like...

error: Content is protected !!