গল্পেরা জোনাকি তে প্রদীপ গুপ্ত

মাইনকা

কাল সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরছিলাম একটা সভা সেরে। পথে হঠাত সিধু পাগল পাকড়ে ধরলো। “এই শোন, কই থ্যিকা ফিরলি? কামের থিক্যা? ”
কি বলি? বললাম হ্যাঁ।
একটা চোখ মেরে সিধু লম্বা একটা হাসি দিল।
” দ্যাখছস ক্যামন ধরলাম? তরা কেমন পাগলের মতোন খাটস না? আমারে দ্যাখ কোন খাটনিই নাই ক্যামন ঠ্যাং এর উপর ঠ্যাং তুইল্যা খাই? তগো আর কিসুতেই মানুষ করতে পারলাম না”!
চলে আসবো বলে পা বাড়াতে যাচ্ছি হঠাত খপ করে কাঁধের ঝোলাটা টেনে ধরলো ” এই শোন কাইল সকালে আমারে দশটা টাকা দিস তো একটা মালা কিনতে হইবো “।
জিজ্ঞাসা করলাম কেন?
” কাইল মাইনকার জন্মদিন জানস না? ”
–কোন মানিক?
সিধু হেসে উঠলো
— “তুই নাকি আবার ল্যাখস ট্যাখস? কি অবস্থা! আরে পথেরপাঁচালির মাইনকা, অনেক গল্পটল্পো তো লিখসে নাকি? তবে ও কিন্তু তগো মতন পাগল আসিল না ”
আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম সিধুর দিকে।
সুস্থ মানুষদের ভীড়ে এইসব অসুস্থ পাগলেরা, চিরকাল পাগল হয়েই বাঁচবে! আমি প্যান্টের ব্যাক পকেটে হাত দিতে যেতেই ও খপ করে আমার হাত চেপে ধরলো।
— ” ভাই অখনে দিলে বিড়ি খাইয়া উড়াইয়া দিমু, আমি কাইল সকালে তর বাড়ি গিয়া নিয়া আসুম খন। ”
সিধু তড়বড় করে হেঁটে অন্ধকারে মিলিয়ে গেলো। আমার দুচোখ তখন বোশেখি পূর্ণিমার আলোয় আলোময়।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।