ক্যাফে কাব্যে প্রবীর বারিক

গ্রাম্য বর্ষা
মুষলধারে বারিধারা নামে
আবার শুরু বৃষ্টি
খোকা খুকি সিক্ত প্রায়
লাগে ভারী মিষ্টি।
মেঠো পথ হয়েছে পিছল
রাস্তা গেছে হারিয়ে
মাটি বালি বয়ে যায়
পখিয়া মাথায় চাষী দাঁড়িয়ে।
কেউ ছোটে ঘুনি নিয়ে
আল কেটে ধরে মাছ
কেউবা পাতে ছোট্ট পাটা
জল থই থই দোদুল নাচ।
অঙ্ক কষা কাগজ দিয়ে
কেউ ভাষায় নৌকা
কালভার্ট গলা কেটে জল
হেঁটে চলে জলৌকা।
বাঁশের বড়শি কেঁচো গেঁথে
গ্রামের ছেলে যায় মাঠে
গজামলিতে মাছের থোকা
যত্নে ধোয় পুকুর ঘাটে।
মাটির মেঝে ওঠে জরক
ঝর্নার মতো বইছে জল
আখবাড়িতে ডাল ভেঙেছে
আম কুড়োবো চলরে চল।
মাঝিদের ওই জামবাগানে
ভগ্নশাখে কাঁদে বাচ্চা
পক্ষী মা ক্রোধে ফুঁসে
শত্রু বধের নেয় ইচ্ছা।
হাট বাজার বন্ধ সবে
গৃহে আগুন জ্বলবে কিসে
কাঁকড়া পোড়া মাছের ভাজা
জিহ্বা রসে গেছে মিশে।
ভারী বর্ষায় গোবরখানা
কানায় কানায় পূর্ণ
নায়েক পাড়ার জমাজলে
বেড়া প্রাচীর চূর্ণ।
গরু মোষের মনের মতন
শরীর ধোয়া বৃষ্টি
পুকুর ডোবায় দৌড়ে ঢোকে
ফেরার নাই দৃষ্টি।
সাইকেল বেয়ে ছেলেমেয়েরা
হাফছুটি ফেরে ঘর
কাদার মধ্যে ঢোকে চাকা
ছেঁড়া ছত্রে কাঁপে থরথর।
তালিমারা প্যান্ট খালি গায়
পোটলাবাঁধা ফুটবল
হই হই করে খেলার মজা
স্বর্গ নামে অবিকল।
বর্ষারাণী যেও না দূরে
সঙ্গে আছে বজ্ররাজ
আষাঢ় শ্রাবণ মিলন মাস
বসুন্ধরার প্রকৃতি সাজ।