আজ ঊনিশে এপ্রিল। অনেকদিন ধরেই এই দিনটার দরকার ছিল,সন্ধান করছিলেন যিনি তার উদ্দ্যেশ্য ছিল একটা সময়কে ধরে রাখা। পৌঁছতে হবে তাড়াতাড়ি , দরকার একটা ট্রেন।
ভুল করে ভুল স্টেশনে নেমে পড়েছি, অবশ্য পুরোটা ভুল নয় কিছুটা ইচ্ছেকৃতও বলা যায়। স্টেশন চত্ত্বর থেকে সরাসরি লাইভ করতে হবে। পিছিয়ে যেতে হবে কয়েক যোজন। ফারাক বুঝতে হবে। সেই অনুযায়ী সাজাতে হবে দুই স্টেশনের অন্তর্বতী দূরত্ব। পাশে পড়ে থাকবে গাছপালা, ঘরবাড়ি, প্রিয়মুখ । আসলে এই লাইভ থেকে সরাসরি কিছু কাহিনী পড়ে শোনানো হবে যাত্রীদের। পিছিয়ে যাবে স্টেশন, নতুন লোক নেমে যাবে পুরোনো লোক উঠবে…একটা চেন হবে।
আমি চেন ভাঙ্গার পক্ষপাতী নই তবু আমার ওপরে দায়িত্ব পড়েছে লোকজনকে ভুল স্টেশনে ওঠানোর, আবার নামিয়ে দেয়ারও।
আসলে স্টেশনমাস্টার একটা পরিসংখ্যান চাইছেন, কত শতাংশ হারে, যাত্রীদের কথা বলার প্রবণতা বেড়েছে সেই হিসেব রাখতে হবে । একটা আর্কাইভ বাঁচিয়ে রাখবে গোকুল।
অচেনা প্ল্যাটফর্মে যখন ভুল করে নেমে পড়েছি, তখন আমার সামনে এসে দাঁড়ালেন একজন,খাজনা চাইছেন, ভর্তুকি গুনতে গুনতে আমার গায়ে মাটি লেপে দিচ্ছেন। জড়বস্তুর মতো আমিও, নড়ছিও না বিরক্তও হচ্ছি না। তার দীঘল দুটো চোখের একটিতে জমকালো অন্ধকার আর একটিতে ভোররাতের টগরের মতো সাদা সাদা আলো। দুটো চোখে ভরন্ত সংসার নিয়ে হয়তো তিনি শেখাচ্ছেন বিপরীতধর্মী সহাবস্থান।
পোশাক বদলে বসে আছি। প্ল্যাটফর্মে কাজ চলছে। হাঁড়িকড়াই আর উনুন বানাচ্ছেন তিনি। ভাত বাড়ছেন। বসন্ত ছাড়াই পলাশ ফুটে উঠছে
সর্বত্র।
ডাউন ট্রেনগুলো পরপর চলে যাচ্ছে, প্রণাম জানাচ্ছেন যাত্রীরা। আমি ওই অচেনা অজানা মানুষটাকে ধীরে ধীরে গাছ হয়ে যেতে দেখছি।
আমি পিয়াংকী। এতক্ষণ “স্টেশন থেকে সরাসরি” ছিলাম আপনাদের সাথে।