গদ্যের পোডিয়ামে পিয়াংকী – ধারাবাহিক – (একাদশ পর্ব)

ওরফে তারাখসা এবং তুমি বালক

অসতর্ক হয়ে পড়ছি আজ। একবার নয়,বারবার। গলার ভিতর আষাঢ় ডাকছে, মনে পড়ছে এমনি এক দিনে বেদশ্রুতির বুকে বাণ ডেকেছিল খুব। হাতখোঁপায় কাঠগোলাপ গুঁজে একছুটে সে যাচ্ছিল গোসলঘরে। উচ্ছ্বাসে ফুলে ফুলে উঠছিল ভরাকোটালের মতো। কাঠগোলাপটা তখনও পুরো ফোটেনি। ছিঁড়ে নেবার পর ওর গা থেকে সাদা সাদা কষদুধ পড়েই চলেছে। আচ্ছা, স্নান করে আসার পর খোঁপা সাজানো যেত না?

সামান্য ক’টা আষাঢ় কেটেছে। আজ, বেদশ্রুতি ওই সাদা কষটুকু। ওর গলার নিচ থেকে মেঘ তৈরি হয়ে ক্রমশ নেমেছে ভোঁতা পেটের দিকে। মেঘ, সাদা নয়। কালো নয়। ধূসর। ধূসর বড় ভোগান্তির। না ঘর না দুয়ার। যেন ঝুলে আছে জানালার শিকে, এক্ষুনি টপ করে পড়বে জিভের ওপর। বেদশ্রুতি জানে, সেজে গোসলে যাওয়া আর গোসল সেরে উঠে সাজার ভিতর সূক্ষ্ম একটা ফাঁক আছে। সেই ফাঁকের আয়তন? একটি দু:খী বৃষ্টিফোঁটা সারাজীবন অক্ষত থেকে যাবে,ওই আয়তনে।

ম্লান হয়নি কিন্তু এখন মলিন তাঁর চোখ। গোসল সেরে উঠে লাল মসলিন পরলে অখিলনন্দন শ্রাবণ বলে ডাকে —। সামান্যই তো ক’টা বছর। সেই লাল মসলিনটা পরে খোঁপার কাঁটা আর সাদা কাঠগোলাপ সমেত গোসল করতে যেত যখন, অখিলনন্দন ওকে আষাঢ় বলে ডাকত, আষাঢ়, আষাঢ়, কই তুমি…
পার্থক্য এটুকু

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *