সাপ্তাহিক ধারাবাহিক কথা সাগরে পিয়াংকী (সাবেক কথা – ৬)

সাবেক কথা

তক্তপোষ

একটা প্রজন্ম শুয়ে আছে,শরীর থেকে শরীরে ছড়িয়ে যাচ্ছে ধোঁয়া মিলিয়ে যাচ্ছে ঘুমের ভেতর, মহাকোষের ভেতর। কেউ যেন বিছিয়ে রেখেছে তক্তপোষ, সেখানে চাঁদ ওঠে রোজ, ডুবে যায় নিয়মমাফিক। এ এক ঘোর কুয়াশা, ঝরেই চলেছে আজন্মকাল। আমরা শুধু সিঁড়ি ভাঙছি, একটার পর একটা সিঁড়ি, একটু একটু করে ছুঁতে পারার সাধ বুঝিয়ে দিচ্ছে উচ্চতা আদতে আপেক্ষিক বেগ বৈ কিছুই নয়।
নদীর আড়ালে থাকা সূর্য কিম্বা বাবার পিঠের ওপর পাহাড়… অন্ধকারের মধ্যে শুয়ে আছেন এক সাধক। যার পোশাকে হাজার বছরের জমানো ফুটো, তক্তপোষের ওপর তিনি পেতেছেন বিছানা, সেই বিছানায় রোদ ওঠে পাখি ডাকে ভোর হলে শাদাবক উড়ে যায় খেচরজীবনে।
এই তো ফিরতি-পথ।এই তো সাময়িক বিরতি। তবু অন্ধ ভিখিরি সেজে বসে আছি সকলে। চোখ খুলে তাকালেও দেখতে পাচ্ছি না প্রিয়জনের নির্বাক যাওয়া-আসা। বরং যে তক্তায় শুয়ে থেকেছি একসাথে সেখানে শামুকের শ্লথ চলন। বদলে যাচ্ছে তক্তপোষ, বদলে যাচ্ছে অভিমুখ। আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতেই কুঁকড়ে যাচ্ছে হাতের মুঠো। দু’চোখের পাতায় নুইয়ে পড়ছে ঘুম।

গাজনগীতের পাশে নদী, শিমূলপথের ওপর অবিন্যস্ত আখড়া অথবা চৌকির নীচে ভাসমান কচুরিপানা-সংসার… তক্তপোষের অন্দরমহলে শুধুই নির্বাচিত সাক্ষাৎকার

১৯ শে আষাঢ়
সন্ধে ৭ঃ৫১
ইছাপুরের বাড়ির ছাদ

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।