সাপ্তাহিক ধারাবাহিক কথা সাগরে নীলম সামন্ত (পর্ব – ১৯)

ব্রহ্মমুখী সূর্য ও রেবতী রেবতী নক্ষত্র
ঠাসাঠাসি করে যারা বসে আছে তারা ভেষজ প্রেমিক-প্রেমিকা হলে আশ্চর্য হবো না৷ আবার না হলেও বাড়ির ছাদ ভেঙে পড়বে না৷ আজকাল দেখনদারির আড়ালেও এক বিষন্নতা কাজ করে৷ সে কথা আমি বেশ বুঝি। আর বুঝি বলেই সদর দরজা খুলে শুকনো পাতা, ধুলো, ক্লেদ সমেত পথকে বলি ঘরে আসতে। চেয়ার দেখালে সে দরজা খোঁজে। দরজায় স্পীড ব্রেকার- গৌরচন্দ্রিকা করার উদ্দেশ্য নিয়ে স্বপ্নের ভেতর ব্রেক করে থামিয়ে দেয়।
আমাদের ঘরগুলোতে কেউ থাকুক বা না থাকুক টেবিল চেয়ার সোফা ইত্যাদি নিজের নিজের জায়গায় থাকে। সেখানে মাকড়সা রস ফেলে। কাঠবেড়ালি পিকনিক করে। পিপড়েরা মিছিল করে। রাজনীতির নিঙড়ানো শূন্য। এই সেই শূন্য যার থেকে ক্রমাগত গ্রেটার দ্যান চিহ্নে ছোট হয়ে যাচ্ছে দিনান্তের কলিজা৷ আচ্ছা, আমার কী ভীষণ কষ্ট? মজ্জায় মজ্জায় নৌকা ভিড় করে, অনন্ত থেকে ঝোলা কাঁধে উবু হয়ে বসে থাকা মাঝি নেমে আসে৷ ঝিনুক-শিকারীর দিকে পিঠ করে নৌকা বায়। রক্তের শব্দ আর জলের শব্দ এক নয়৷ উষ্ণতারও তফাৎ৷ আমার কি কামনা করা উচিত সেই ভাবনায় বৃষ্টিপাত হয় অসময়ে৷
আমি ভিজতে থাকি। ভেজা চোখে পৃথিবী ঝাপসা হয়ে যায়৷ পৃথিবীর মানুষ পরিজন প্রচন্ড দারিদ্রতা নিয়ে জলের খোঁজে মাটি খোঁড়ে। আমাকেও খোঁড়া হয়৷ তারপর নোনা জল মিঠা জল টলটল করে উঠলে জেলেরা মাছ ছাড়ে৷ ছোট, বড়, মাঝারি। তারা চোখের পাতা খেয়ে নেয়৷ আমিও শিখে যাই চোখ খোলা রেখে কিভাবে ঘুমোতে হয়। স্বপ্ন দেখি৷ একটা একটা করে সিঁড়ি পেরিয়ে ঘর পেরিয়ে নিজেকে সাজিয়ে তুলি একাকী নক্ষত্রের সাজে৷ আমার জন্য নয়। স্বপ্নের জন্যও না৷ ভিখারির বেশে যে আসবে সেই ব্রহ্ম সেই আদি সেই আত্মজ উৎসের সাথে মিশে যাওয়ার জন্য।