|| অণুগল্প ১-বৈশাখে || বিশেষ সংখ্যায় নির্মাল্য বিশ্বাস
by
·
Published
· Updated
বিস্ফোরণ
হঠাৎই পরমাণু বিস্ফোরণে কেঁপে উঠলো ঘরটা। জামাইবাবুর একটা ফোন। তাতেই যেন সব কিছু লন্ডভন্ড হয়ে গেল। কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে টি ভি র সুইচটা জ্বালল অর্ক। খবরের হেডলাইনগুলো ভীষণ রকম ঝাপসা লাগছে — এয়ার ইন্ডিয়ার দিল্লিগামী বিমান রানওয়ে ছেড়ে ওড়ার পরই আগুন লেগে ধ্বংস।
দু’ ঘন্টা আগের টুকরো টুকরো দৃশ্যগুলো ভেসে উঠলো … বাবা- মাকে প্রণাম করে বাড়ির চৌকাঠ পেরোল এই বাড়ির বড় ছেলে। দিল্লিতে নতুন চাকরী দাদার। অর্কর এক্সাম চলছে তাই সিঅফ করতে যায়নি। ৮ টা বেজে ৫০ মিনিটের ফ্লাইট আর ঐ বিমানেই দাদা। স্তম্বিত ফিরলো মায়ের কান্নায়। বাবা কখন অজান্তে সোফার ওপর বসে শূন্য দৃষ্টিতে টিভির দিকে তাকিয়ে আছেন খেয়ালই করেনি অর্ক। ঘরের এক কোণে সিংহাসনে বসানো গোপালের দিকে তাকিয়ে মা আছাড় কাছাড় করছেন — এ তুমি কী করলে গোপাল? বেরোনোর আগে তোমার পায়ের ফুল আমি খোকার মাথায় ছুঁইয়ে দিয়েছিলাম।
মোবাইলটা অনেকক্ষণ ধরে বাজছিল। ধরার ইচ্ছে একদমই নেই। অনিচ্ছাসত্ত্বেও ধরলো অর্ক। অপর প্রান্ত থেকে অচেনা কন্ঠস্বর ভেসে এলো- আমার ট্যাক্সিতে একজন হ্যান্ড ব্যাগ ফেলে গেছেন। কিছু টাকাপয়সা, একটা মোবাইল আর দিল্লিগামী ফ্লাইটের একটা টিকিট পেয়েছি। ওই মোবাইলে এ আসা লাস্ট কলটা দেখে এই নম্বরে ডায়াল করলাম। উত্তেজনায় অর্কর ঠোঁট দুটো কাঁপছে। উপুড় হয়ে শুয়ে মায়ের কান্নায় গোপালের মাটির গালটা ভিজে গেছে কী?