সম্পাদকীয়

প্রবল মতবিরোধ, গুলিয়ে যাওয়া অজস্র কর্মকাণ্ড – সব কিছু নিয়ে খুব ধীর গতির এই ‘আমার দেশ-আপনার দেশ’।তবু আমি খুব আশাবাদী।– প্রিয় বাসভূমি।‘দেশ’ ভাবনা টা ভূগোল, ইতিহাস, বিজ্ঞান এসবের চেয়ে আরও অন্যভাবে মনের মধ্যে থাকে।সেটা সুরক্ষা আর ভালোবাসার। সেটা সমস্ত ভারতবাসীর জন্যে প্রয়োজন। আর্থিক সুরক্ষা, দৈহিক সুরক্ষা, মানসিক সুরক্ষা –যদি যে কোন ভারতবাসীর কাছে থাকে…দেশ ভালো থাকবে। অর্থনৈতিক পরিসংখ্যানে দেশের ‘এগিয়ে যাওয়া’র চেয়ে খুব দরকার সবার সুরক্ষা। খাদ্য সুরক্ষা আইনে যেমন এতো বড় করোনা মহামারীর সময় সরকার খাদ্যের ব্যবস্থা করেছে। এটা কত সুন্দর ব্যবস্থা। অর্থনৈতিক পরিসংখ্যানে এই সাফল্য না দেখে মানবিক আর সহানুভুতির পরিবেশ কতটা আমরা তৈরি করতে পারছি সেটা নিয়ে পরিমার্জন দরকার। যদি ব্রিটিশ ইতিহাস দেখা যায় তাহলে আধুনিক ব্রিটিশ ইতিহাস শুরু হচ্ছে ‘২য় বিশ্বযুদ্ধ শেষ’ এই ঘোষণার পরে।তার মানে ওদের কাছে ‘আধুনিক’ ভারতবর্ষের জন্ম ওদের আধুনিক যুগে।
ভারতবর্ষ আসলে চির আধুনিক। কেন? কারণ একাধারে, প্রাচীন মতবাদ নিয়ে প্রচুর আলোচনা চলে, তেমনি সেই মতবাদ ভেঙ্গে রোজ নবীন মতবাদ গড়ে ওঠে। সেই প্রাচীন যুগ থেকে।
ভারতীয় সমাজের শক্ত পারিবারিক বন্ধন টি দেখে মনে করা হয় বড্ড কড়া। যার জন্যে অনেকের ব্যক্তিগত জীবন ততটা শ্বাস নিতে পারে না। কিন্তু তার অন্যদিকে কিছু জিনিস সুরক্ষিত থাকে, যেমন বৃদ্ধরা আর শিশুরা। অবশ্যই অনেক ক্ষেত্রে এদের অনেক কষ্ট তবু বলব মূল স্রোতের মানুষ এই সুরক্ষা দেওয়া এবং পাওয়া কে স্বাভাবিক ভাবে , এটা আইন গত সুরক্ষা না ভেবে হৃদয়গত যতদিন আছে ততদিন মঙ্গলজনক।কারণ ‘দেশ’কে ভালোবাসার অভ্যাস আর গড়ে তোলার ইচ্ছা এই দুটোই এই অবস্থানটার ওপর দাঁড়িয়ে। পরিবারের সকল কে ভালবাসতে হবে আর ভাল রাখতে হবে এই বোধের ওপর গড়ে উঠবে দেশকে ভালোবাসার ইচ্ছা। যে নিজের মানুষদের ভালোবাসে না সে দেশ কে ভালবাসবে? এই বোধ টা আবার কিছু ক্ষেত্রে কিন্তু প্রবল সীমায়িত- যেমন ধরুন , বাড়ি পরিস্কার করা যেমন দরকার তেমনি বাড়ির সামনের রাস্তা, বাড়ির পাশের গলি সেগুলো পরিস্কার থাকা জরুরী সেটা কোথায় যেন ভারতবাসীর মনে থাকে না। নিজের বাড়ির মা বাবা যেমন সম্মানের তেমনি অন্যদের পূর্ব পুরুষরাও সম্মানের সেই বোধটা কমে যায়। অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ না থাকলে তা ফেরত পাওয়া খুব মুস্কিল। ভালোবাসা আর দায়িত্ব প্রসারিত হোক- নইলে দেশ সুরক্ষিত হবে না।
দেশের স্বাধীনতা দিবসে আমরা সচেতন নাগরিক হয়ে একে অপরের সুরক্ষার জন্যে এগিয়ে আসবো এটাই এগিয়ে চলার পাথেয় হোক।

নিবেদিতা ঘোষ মার্জিত

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।