সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে মধুমিতা রায় (পর্ব – ১১)

এই জীবন

সুখ কি? দুঃখই বা কি? অতৃপ্তি কি? তৃপ্তিই বা কি?
এই যে ভরভরন্ত সংসার, ছুটিতে বেড়ানো,কেয়ারিং বর,বাধ্য মেয়ে, স্নেহময় শাশুড়ি তবু কেন মাঝে মাঝে শূণ্য মনে হয়! কি যেন চাই! কেন পথ ডাকে! কেন মন ছুটে বের হতে চায়! স্কুলের পথ সব একঘেয়ে এখন।আজও ঝোপে হলুদ প্রজাপতি ওড়ে,পুকুরঘাটে বসে থাকে নীল মাছরাঙা, ঘাসে ফোটে বেগনি ফুল শুধু সেই মন সেই চোখ আর জাগে না।আমি কি মরে যাচ্ছি! ভিতরে ভিতরে ক্ষয়ে যাচ্ছি অবিরত!…মনিমালা জানলায় বসে।হেমন্তের হলুদ বিকেল দাঁড়িয়ে রয়েছে জানলায়,মুখোমুখি,ঝরা পাতা উড়ে যায়,মনিমালার ভিতরেও পাতা ঝরে টুপটাপ টুপটাপ।স্পষ্ট শব্দ শুনতে পায় বুকের ভিতর।এখন আর চোখে জল আসে না।আগের মত বারবার অরিত্রর প্রোফাইল খুলেও দেখে না।

আর কোন রাগ নেই অরিত্রর উপর।ভালোলাগার মোহ আর ভালোবাসা এক নয়,ভালোবাসা অবধি পৌঁছতে সবাই পারে না।সে বড় গভীর জিনিস।মনিমালা চোখ বন্ধ করে, আজও সেই চোখদুটো ভাসে।

একবারও কি মনে পড়ে না!… মনিমালা হাত মুঠো করে।
গতকাল দীপার সাথে অরূপকে দেখে বুকের ভিতর চিনচিন করে উঠেছিল।দীপাও কি সত্যি সুখী! যে সম্পর্ক লুকিয়ে রাখতে হয়,সে সম্পর্ক কি আদৌ আরাম দেয়?
শরীরে পৌঁছালে ভালোবাসার সেই সুবাস কি থাকে! যা অধরা তাই তো প্রেম।

তবু দীপার হাসিটা মনিমালার কাছে খুব দামী।দীপা ভালো থাকলে মনিমালারও খুব ভালো লাগে।ও ভালো থাক।

সন্ধ্যা হয়ে এল।শাঁখ বেজে উঠল।বিকেলটা ছুট দিল কখন!

ক্রমশ

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।