সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে মধুমিতা রায় (পর্ব – ৩)

এই জীবন

দুদিন ধরে কাজের চাপে নেট অন করাই হয়নি।আজ রবিবার। সকালে ব্রেকফাস্টে লুচি আলুরদম, লাঞ্চে মোচাচিংড়ি, ঝিঙেপোস্ত,চিকেন কষা… এসব করতে করতেই বেলা গড়িয়ে ঘড়ির কাঁটা একটায়।
খেতে খেতে তিনটে। বিছানায় গা এলিয়ে নেট অন করল মনিমালা।নোটিফিকেশনে চোখ আটকে গেল, সে না!
অরিত্র,বেশ নাম। ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছে!
তুমি কি বন্ধু হবে আমার! আমার তেমন কোন বন্ধু নেই।যাকে দিনের শেষে বলতে পারি… জানো, আজ একটা খয়েরি মাছরাঙা দেখলাম! আজ জানো,বিকেলে আকাশটাকে একটা সমুদ্র মনে হচ্ছিল!
তুমি কি শুনবে আমার এসব হাবিজাবি গল্প?… চোখ লেগে এলো কখন।সারাদিনের ক্লান্তির শেষে বটের নিচের স্নিগ্ধ ছায়াটুকুর মত আরাম বুকে নিয়ে অকাতরে ঘুমিয়ে পড়ল মনিমালা।
আমি অরিত্র…
মেসেজটা দেখে একটুক্ষণ বসে রইল মনিমালা
তারপর লিখলো… জানি তো।
…তুমি যখন স্কুলে যাও আমি তোমায় দেখি।
এটাও জানি… টাইপ করে মুচকি হাসল মনিমালা।
তারপর লিখলো… আমিও তোমায় দেখি সেটা মনে হয় জান না।
খানিকক্ষণ চুপচাপ
তারপর অরিত্র লিখল… সত্যি!!!
… হুম
আচ্ছা, আমি তো তোমার থেকে অনেক বড়, তবে তুমি আমাকে দেখো কেন?… জবাব শোনার জন্য মনিমালা উৎসুক হয়ে রইল।
… ভালো লাগে তাই।বয়স দিয়ে কি সব মাপা যায়!
… যায় না,কিছুই মাপা যায় না।মন মনের মত, তার কোন বাঁধন নেই,কাঁটাতার নেই,বন্ধ দরজা নেই।সে নিজের মত
খোলা প্রান্তরে পা ছড়িয়ে বসে থাকে।
অরিত্র মুগ্ধ হয়ে গেল।কি সুন্দর বলল!
… আসি
… শোনো,একটা কথা বলবো?
… বলো।
… আমি তোমায় মেঘমিতা ডাকতে পারি?
ঝুম ঝুম করে বৃষ্টি এলো।ছুটতে ছুটতে ছাদে এলো মনিমালা।শুকনো জামাকাপড় ভিজে একসা।টবের বকুল
গাছটা! নাকি মেঘ! নাকি সেই দুই বিনুনি মেয়েটা তাকে ডাকলো… আয় ভিজি।
দুহাত ছড়িয়ে দিল আকাশে… বৃষ্টি বলে ডাকে আমায়! না, না… মেঘমিতা, তুমি কি তবে মেঘ!
ভাবতে ভাবতে চুল থেকে নখ ভিজে সপসপে।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।