বাড়ি থেকে সাইকেলে স্টেশন আসে অরিত্র। এগারোটা চারের হাবড়া লোকালে বারাসাত নামে তারপর হেঁটে কলেজ। অরিত্র ফাস্ট ইয়ার ইংলিশ অনার্স,একমাথা চুল, শ্যামলা, হাইট পাঁচ সাত।
বাড়ি থেকে স্টেশনে আসার পথেই একদিন দেখেছিল তাকে।সে পথের ধারে ফুটে থাকা হলুদ ফুল দেখছিল একমনে।লম্বা চুল উড়ছিল হালকা হাওয়ায়,অমন মায়াবী চোখ আর কখনও দেখেনি অরিত্র।সাদার উপর নীল ফুল ফুল শাড়ি… চোখ আটকে গেছিল।
তারপর থেকেই তাকে দেখবার জন্য ভীষন অস্থির লাগে।বাড়ি থেকে বেরিয়ে সাইকেলটা আস্তে আস্তে চালায়।হরিদার দোকানে কখনও দাঁড়ায় কখনও পুকুরঘাটে।এই পথ দিয়েই সে রোজ যায়। সে চলে যায় তার নিজের মনে, মনে হয় আশেপাশের কিচ্ছু তাকে স্পর্শ করছে না।কোন দূরের বাঁশির সুরের মত তার চলা।
উঠে পড়ল অরিত্র।এদের কথাগুলো ভীষন বোকা বোকা একঘেয়ে লাগে। মেয়েগুলোর একই রকম আলোচনা একই ধরনের পোশাক একই রকম তাকানো বড্ড বোরিং।কোন গভীরতা নেই।
রাতে মোবাইল ঘাটতে ঘাটতে হঠাৎ তার ছবি দেখল।মনিমালা।কি সুন্দর নাম! প্রোফাইল খুলে মুগ্ধ হয়ে গেল অরিত্র।কি অপূর্ব আঁকে! সবই ল্যান্ডস্কেপ। কাশের বনের পিছনে নীল আকাশ,অরণ্যে বিশাল গাছে জড়িয়ে থাকা বুনো লতায় গুচ্ছ গুচ্ছ বেগনি ফুল,পাহাড়ের গা বেয়ে নদী…
একটু হেজিটেট করে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েই দিল।
অপেক্ষা করতে করতে ঘুমিয়ে পড়ল একসময়।ঘুমের মধ্যে দেখল একটা বিশাল মাঠ,সারামাঠ জুড়ে ফুটে আছে ছোট ছোট সাদা হলদে নীল ঘাসফুল,দূরে মনিমালা… তার বরষা রঙের আঁচল উড়ছে হাওয়ায়। সে বলল… আমার নাম মেঘমিতা। আমি ঐ মেঘেদের বন্ধু। বলেই দূরের গুচ্ছ গুচ্ছ মেঘের দিকে আঙুল তুলল।অমনি একটা মেঘ ঝুপ্পুস করে নেমে এল… আরে! এ যে সে নিজে!