গারো পাহাড়ের গদ্যে মনিরুজ্জামান প্রমউখ

নিপুণের স্বপ্নচাবি

নিপুণ প্রশান্তময় কবিতা লিখে। এক যুগেরও মহীরুহ সময় তার বেড়িবাঁধ। পুলক আর ভুলক তার দিবারাত্রির সঙ্গসীমা। সূত্রমোটে নিপুণ এখন কবি নিপুণ। এতেই গুণক্ষয় নয়। নিপুণ গান লেখে, সুর ধরে, গায়কীর ফসলেও সুকৌশল সরব নিদেন। আবৃত্তি করে, গতানুগতিক ঢেউয়ের প্লাটফর্মে। গল্প, উপন্যাসের দ্বিমাত্রিকতা চেনে। প্রবন্ধেও রয়েছে নিরঙ্কুশ যুৎসই হাতেখড়ি। ছবি আঁকায় সূচনাপ্রতিম হালদার। আরো কতো মনোজ্ঞ বিষয়ের বনিবনা তার সাথে, তার নির্ণয় শুধু সেই জানে।

কিন্তু আশপাশের জনাজন প্রতিমন তার প্রলুব্ধ তোয়াক্কায় মরিচাবন সাশ্রয়ে মাতাল। ঢেউ গুনে কেবল স্ব স্ব বুননে। ভেতরের কর্ষিত অমোঘ রস আস্বাদন করতে বেমনা অথবা অসমর্থ।

প্রকৃতির বুকে কালবৈশাখী ঝড়ের সাথে যেমন নিদারুণ পাল্টে যায় স্থিতি, অবস্থা আর প্রতিবেশ অনুকূলতা। ঠিক অনুরূপ; নিপুণের জীবনঘেষে প্রলয়বিকাশ বিরল টর্ণেডোর আগমন ঘটেছিলো সময়ের একুশ বছর পূর্বে হতে। যার মহিষাশুরে কেড়ে নেয় প্রেম, সংসার, সন্তানাবাদ, রোজগার, পদবী, সম্পর্কের ইতিউতি, বন্ধুত্বের চয়নিকা আশপাশ। যুক্ত হয় জনমনের অন্তরকূলে কল্পনার বেসামাল চড়াগবসতি। আপাদমস্তক মাইক্রোসকোপের নজরে পর্যবেক্ষণ ক্রিয়া, আর যার যার নিজস্ব মনসংক্রান্তির খুরটোপ প্রলাপ। বিছড়ে যায় জীবনের সংলাপ, নীড়বোধ আর চিন্তার অনাবিল সারগাম।

বছর যায় বছরের নিয়তি পৃষ্ঠে। খেয়া তরণী দিগ্বিজয়ের পাড় খুঁজে বেড়ায়। অবশেষে সেই মনসুদ মাহেন্দ্রক্ষণ এসে দাঁড়ায় নিপুণের সম্মুখে। নিপুণ ঘুরে দাঁড়ায় আরেকবার জীবন নবান্নের উৎসবের দিকে মুখ করে। অথবা- বিবর্তনীয় সম্ভাবনার দেয়াল ধরার আঁকড় খুঁজে পায়। যদিও সময়ের সচল নানামুখী প্রাকৃতিক প্রবঞ্চনার অচ্ছেদ শরীর তার সাথে মিশে রয়। জীবনের বাতাবরণীয় খেলার মাঠে বদলের চিত্রপট হয় যেমন। হঠাৎ এক প্রান্তের দৌড় থমকে গিয়ে যখন নতুন প্রান্তরের অভিষিকাগুলো চমকের মতো এসে মনের দরজায় তোপহীন কড়া নাড়ে তেমন। এবার এক বৈপ্লবিক সূচনায় প্রলুব্ধাচ্ছন্ন হয় নিপুণ। ইন্টারনেটের সহজপ্রতিম চাবি দিয়ে নিপুণ খুঁজে পায় স্বপ্নচাবির স্বভেদ তোড়া।

নিপুণ মধ্যবয়সের প্রান্তিক কলবরে জীবনের অন্য সব প্রীতিক্ষতি আনুষাঙ্গিকতার সাথে পুরোদস্তুর পড়ুয়া হয়ে উঠেছে। ডিপ্লোমার দিগম্বর শ্রেণীপাঠ নিচ্ছে। মাষ্টার্সের সুগম্য বরাত নিয়ে উড়ে যাবে স্বপ্নপূরণের নবোআচ্ছাদিত নির্মোহ আকাশে। সেই পোষিত কল্পনার মাধুরীতে ভালোবাসার বেবাক রঙ ছড়িয়ে দিয়ে নিপুণের কন্ঠস্বর পাঠ করে, একদম আনমনে-
ওরে,
জীবন নদের পাল ছেড়ে
পালাবি কোথায়,
নিপুণ?
যা রয়েছে আলিঙ্গনের
তারে রুখ,
প্রলয়-টুকু হোক খুন।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।