• Uncategorized
  • 0

গদ্যের পোডিয়ামে মালা মিত্র

নিশীথে

নিশীথ বা রাত্রি আমাদের জীবনে শান্ত আরামদায়ক স্নিগ্ধ অনুভূতি আস্বাদনের সময়।সারাদিনের দৌড় ঝাঁপের শেষে রাত্রি, নিজের সঙ্গে নিজের বোঝাপড়ার একটা সন্ধিক্ষণ।মনোসংযোগের উপযুক্ত সময়।সারাদিনের কোলাহল রাতে তেমন একটা থাকে না।অফিস বাজার, জীবনের খুঁটিনাটি র জন্য বাইরে ছোটাছুটি করতে হয় না,মাথা ভারমুক্ত থাকে।
আসলে দিন বা রাত বলে আলাদা কিছু হয় না ভূপৃষ্ঠে।
পৃথিবী সূর্যের চারপাশে ঘোরার একটা প্রক্রিয়া মাত্র রাতের আসা,কোনো দেশে যখন দিন,আমাদের তখন রাত।
তবু যেখানে যখন রাত আসে,সে সময়টা অনেক শান্ত মোহময়ী।
সৃষ্টিশীল মানুষজনেরা গভীর রাত কে খুব উপভোগ করেন।অপেক্ষায় থাকেন,সারাদিনের নানান অভিজ্ঞতা তারা এই সময় খাতায় কলমে,ল্যাপটপে,ফোনে যত্নে রক্ষিত করেন।
এ সময় চিৎকার চেঁচামেচি কম থাকে বলে মনোসংযোগ বা ধ্যান ঘটে স্বাভাবিক ভাবে।
বেশিরভাগ কবি সাহিত্যিক গভীর রাত পর্যন্ত জেগে তাদের সেরা রচনাটা লেখেন এই রাত্রিতেই।
তাই তো প্রবাসী প্রিয়ের জন্য কবি বলেন,’নিশি নিঝুম ঘুম নাহি আসে,হে প্রিয় কোথা তুমি দূর প্রবাসে,ফুরায় দিনের কাজ,ফুরায় না রাতি,শিয়রের দীপ হায় অভিমানে নিবে যায়,নিবিতে চাহে না নয়নের বাতি’।
কোমল চাঁদের প্রাকৃতিক আলোয় প্রিয় তার প্রিয়াকে একান্ত ঘনিষ্ঠতার মুহূর্তে বলতেই পারেন,’প্রদীপ নিভায়ে দাও উঠিয়াছে চাঁদ’।
ব্যকুল প্রিয়া একাকিত্বের যন্ত্রণায় ছটফট করে বলেন,’আমার নিশীথ রাতের বাদল ধারা,এস হে,গোপনে’।
চাঁদনি রাতে চন্দ্রাহত প্রেমিকা গেয়ে ওঠেন,’চৈতালী চাঁদিনী রাতে,নব মালতীর কলি,মুকুল নয়ন মেলী নিশি জাগে আমারি সাথে’।
চঞ্চল প্রেমিক দ্বিধাদ্বন্দের দোটানায় বলেন,’নিশীথে কি কয়ে গেল মনে,কি জানি’।
পূর্নিমা রাতের চাঁদ দেখে আনন্দের সীমা পরিসীমা থাকে না কবির,’নিশীথ রাতের প্রাণ,কোন সুধাযে,চাঁদের আলোয় আজ করেছে পান’।
প্রেমাস্পদ সারাজীবনের তরে চলে যাওয়ায় বিরহ কাতর কবি নিজের মৃত্যু চেয়ে করুণ সুরে গেয়ে ওঠেন,’ওর নিশীথ সমাধি ভাঙিওনা,মরা ফুলের সাথে,ঝরিল যে ধূলিপথে,সে আর জাগিবে না,তারে ডাকিও না’।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।