যতই মন বলুক,চাইনা বন্ধনের কোনো ঘেরাটোপ,বোহেমিয়ান যাপন চাই,যা খুশি বলব,যেখানে খুশি যাব,যা খুশি খাব।ছ’টা ন’টা নিয়ম পালন করতে পারব না।
বাউল হয়ে পথে পথে ঘুরব,মাধুকরি করব,রসকলি এঁকে,অনবরত কন্ঠিবদল করব,
ঋতু বর্ষার নিয়ম মেনে ঝরব না,মেয়াদ বাড়িয়ে ডুবিয়ে ছাড়ব জনজীবন।
শীতে গ্রীষ্ম,গ্রীষ্মে শীত,বর্ষায় খটখটে,বসন্তে বর্ষা,যেমন ইচ্ছা তৈরি করব,’ওরা কেবল কথার পাঁকে নিত্য আমায় বেঁধে রাখে,বাঁশির ডাকে সকল বাঁধন ভোলাও ভোলাও আমার হৃদয়’।
হ্যাঁ এই হৃদয় নিয়েই যত সমস্যা,সে যে কাকে কখন পেড়ে ফেলে,বোঝার উপায় নেই।
মুক্তচেতা মনপাখীকে খাঁচায় কয়েদ করা যায় না,তার ওড়াউড়ি অসীম নভে।
সুখ বড় আপেক্ষিক,ব্যবহার্য্য সব রকম সুখ সুবিধে দিলেও আঁখি দুটি তার উর্দ্ধগামী।
জীবন পথে ছোটো বড় ভালবাসায় সে বড় আমল দেয় না,তার বিস্তার গ্রহ তারকার প্রান্ত নগরের ঘরে ঘরে। বেদিল তার লুকানো রক্তপাত দেখেনি,পুরোনো সে তির বিঁধে আছে বুকে,তার গলগল খুনের হিসাব না রেখে,আশিক আমার কবেই গিয়েছ চলে।
তবে শৃঙ্খলা নিয়মানুবর্তিতার সমাজে বিপুল প্রয়োজন আছে।মানুষ সমাজবদ্ধ প্রাণী।
সেই আদীমকাল থেকে মানুষ দলবদ্ধ ভাবে,প্রকৃতির সাথে মোকাবিলা করছে,ছন্দে ছন্দে। বিশ্বব্রহ্মান্ডে ও একটা শৃঙ্খলা দেখা যায় পৃথিবী গ্রহ তারকা সব একসূত্রে বাঁধা,বিধাতার হাতের অঙ্গলি হেলনে চলে সৃষ্টি।
প্রকৃতিতেও একটা নির্দিষ্ট নিয়ম বা আইন দেখা যায়,পরের পর ঋতু পরিবর্তন,দিন থেকে রাত হওয়া,সবটাই এক শৃঙ্খলায় আবদ্ধ।
যদি এই শৃংখলা না থাকত,তবে কবেই গ্রহ তারকা পৃথিবী ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে যেত।
তবে একটা প্রবাদবাক্য আছে,’বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেড়ো’,আসলে নিয়মশৃঙ্খলা অবশ্যই থাকবে,কিন্তু এতটাই আঁটো হবে না যে বেচারী মন দমবন্ধ হয়ে মারা যায়।
পরিবারে,সমাজে,রাষ্ট্রে আমাদের কিছু দায়ীত্ব থাকে,সে বন্ধন কে অস্বীকার করি কি করে?
তাই দায়ীত্ব কর্তব্য করার পর,কিছু সময় মস্তিষ্ক কে কিছুটা ছাড় দিতে হয়,বা যাকে বলি অবসর বিনোদন।সে সময়টাকে না হয়,’কেটেছে একেলা বিরহের বেলা আকাশ কুসুম চয়নে’,করে কাটাই,কারণ মানুষ তো রোবট নয়,মানুষের মন বলে একটা অতি প্রয়জনীয় জিনিস আছে,তাকে বেশীদিন কড়া আইনে উপোস করিয়ে রাখলে,পরিনামে মানুষ মনোরোগী হয়ে পড়বে,যেটা নাকি একদম কাম্য নয়,তাই নিয়মশৃঙ্খলা আর মনের সাস্থ্যের মেলবন্ধন ঘটাতে হবে সুচারু রূপে।তবেই জীবন মসৃণ হবে।