কৃষ্ণকলি দেহে বারমাস বসন্ত ফুটে থাকত।আয়ত দুই পদ্মচোখে সর্বদা কামনা,মায়া, ভালবাসার মিশেল থাকত।ও নয়নে ছিল আন্তরিক আহ্বান।
বড় মেধাবী, সদা জাগ্রতপ্রাণ এই মেয়েটি ছোট বড় সবাইকে আকর্ষণ করত।
দীর্ঘ মোহিনী দেহে হংসীচলন ছিল মনোগ্রাহী।
ছোট বড় সব ব্যাপারে উদ্যম আর উৎসাহ ছিল দেখার মত। খরস্রোতা নদীর মত গতি ছিল, তীব্র অথচ কমনীয়।
তার আগ্রাসী চাহিদাও ছিল, সুন্দর পোষাক অলংকারের প্রতি, জীবন কে চেটেপুটে খাবার বাসনা ছিল।
হাতের রান্না স্বয়ং দ্রৌপদী কেও হার মানায়, তার রান্না চাখেনী এমন কেও ছিল না আত্মীয় পরিজনদের মধ্যে।
চমৎকার স্বাদে গন্ধে অতুলনীয় ছিল সে সব পদ।
আর গানের গলাটি? কোকিল, টিয়া, সুর বিহঙ্গম কুলের শ্রেষ্ঠ কলতান।
ময়না পাখিটি যখন গেয়ে উঠত, “ময়না বল তুমি কৃষ্ণ রাতে” একসাথে গুঞ্জে উঠত অলিকুল, কুঞ্জে কুঞ্জে।
হটাৎ একদিন এক বেসুরো দানব তাকে গ্রাস করার জন্য থাবা বাড়ালো গলগল রক্ত ওঠা মুখ দিয়ে, ঘুণপোকা গ্রাস করেছে তার কোমল ফুসফুস দুটি, লাস্ট স্টেজ ক্যানসার।
একমাত্র ওষুধ কেমোথেরাপি, বিষে বিষে বিষক্ষয়।
কিন্তু অনভিজ্ঞ পরিবার বোঝেনা সে কথা।
তন্ত্র, মন্ত্র,হোমিওপ্যাথি, নেচারোপ্যাথি,কবিরাজি যত রকম ওষুধ আছে তাকে দেওয়া হয়।
কিন্তু আফসোস সংসারের সব মায়া কাটিয়ে”কাবেরী নদী জলে কে গো বালিকা”অসময়ে নদীতে লীন হয়ে যায়, কাবেরী নামের স্রোতস্বিনী তরঙ্গীনি!