গারো পাহাড়ের গদ্যে মোঃ মোক্তাদুল ইসলাম সজল

রকমারি ভাবনা

কবি ঘুমাতে যাওয়ার আগে পাহারায় রাখে তার একমাত্র ছাপোষা রুগ্ন প্রায় হাতিয়ার! কড়া লিকারের চা কফি পান করে ভাবনার জগতে ডুবে তন্নতন্ন করে খুঁজেও আপন অস্তিত্বে বিশ্বাসের জানাজা ব্যতিরেকে হাতের নাগালে থাকা ল্যাম্প লাইটের সুইচ টাও খুঁজে পায় না, আজ তার চিরচেনা লোকালয় বড্ড থমথমে, অজানা শঙ্কায় বাতাস ভারী!
তবুও অবচেতন মনে হাঁটি হাঁটি পায়ে সে নিশানা লক্ষ্য করেই কল্পনার কাঁধে ভর দিয়ে আস্থা পুনঃ উদ্ধারে অভিযান নিয়ে মাথা ঘামাতে ব্যতিব্যস্ত, হাজারো বিনিদ্র রাত পার করে দেয় মানবতা মু্ক্তির কাঠগড়ায়!
যদিও কাগজ, কলম, কলমের রক্তিম কৃষ্ণচূড়া এখন আর কোন ভাবেই এ সমাজ প্রেমীদের কঠিন হৃদয় স্পর্শ করতে পারে না!
অতীত স্মৃতি বয়কট করে কালেভদ্রে কবি হৃদয়ে যখন তন্দ্রা বিলাস ঘটে! পাঁচফোড়ন মার্কা দুঃস্বপ্ন দেখে, সন্ন্যাসী আশ্রমে বসবাসরত ভাতে মরা জীবন বোধে আপ্লুত সত্ত্বার আত্ম চিৎকারে মনন চাষী কবি অনিয়ম উপলব্ধি করে আচমকাই বিস্ময়ে আঁতকে উঠে! কারণ শুদ্ধ বলা কোন কথার কারিগরের ইতিহাসে কখনো “পরাজিত” শব্দটার আবির্ভাব ঘটেনি!
তাই কবি আজ অনেকটাই বিচলিত! কিছুটা বিব্রত ও বটে!
দুশ্চিন্তার বিষয় হলো, কন্ঠনালী ফসকে বেরিয়ে যাওয়া সত্য টাকে কেউ আগে পিছে রং লাগিয়ে বেফাঁস উক্তি বলে চালিয়ে দিয়ে সরল মাঝির সাথে রুটিরুজির সন্ধানে উজান ভাটি গাঙের জলপথে দারিদ্রতা কে দুর্নীতিবাজ সাজিয়ে, অশুভ শক্তির আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে ক্ষমতাধর স্বার্থপরের দল শেষমেশ নতুন কোনো যুদ্ধ না বাঁধায়!
এক শ্রেণীর মানুষ যেখানে আজ অবধি জানেই না, ওর ভাগ্য কি? বাঁচামরা নির্ধারণ করছে কারা! সময়টা যাদের দখলে, তারা তাদের চতুরতা দিয়ে এ সমাজে কিভাবে বোকা কে আরও বোকা বানায়!
কবির চেতনা তৃণমূল!
তাই নীতির চর্চা বাদ দিয়ে, পা চাটা প্রজন্ম তৈরিতে ব্যস্ত আছে যারা, থাকুক!
সব ঘাটের জল ঘোলা করে, নিজ উপলব্ধি সঞ্চার হলে পরে! উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সতীত্বটা অন্ততঃ চতুর অভিনয়, তিক্ত মোহ কেটে! শ্রদ্ধায় বিবেকের আদালতে জবানবন্দি দেয়া এ মূর্খ কবির ব্যাঙ্গাত্মক কবিতার সামনে মাথা নিচু করুক!
একবার চিন্তায় নিয়ে, সদ্য ফুটন্ত কোন গোলাপ যেন জামাই আদরে জড়িয়ে নামমাত্র মূল্যে বিক্রি হয়ে না যায়! নজরদারি টা আপাতত সবার সেখানেই রাখুক!
জানি টনক নড়বে ঠিক তখনই!
যখন বলার জন্য আপন বলতেই কেউ আর থাকবেনা!
শত ভুলে আমাদের পথ বাতলে দেয়ার কন্ঠ হবে রোধ,
চারপাশে তাকালে দেখবে অসহিষ্ণুতার বাতাবরণ, পৈশাচিকতার মেলায় ভিন্ন স্বাদের উৎসবের আমেজ, মানবতার অপমৃত্যু নিয়ে ভর্ৎসনা! ঘরে বাইরে টিকে থাকার লড়াইয়ে একটাই উপায় অবশিষ্ট থাকবে, তা হলো বোধহীন বিবেকের একমাত্র সান্তনা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, প্রতিশোধ আর প্রতিশোধ!
খুব একটা সময় বাকি নেই! পাঠক শূন্য হবে কবিতার ময়দান! অপমৃত্যুর ঘটনাকে পুঁজি করে ফায়দা লোটার চেষ্টা হবে তুরুপের তাস! মিছিল হবে আমার ভাই মরলো কেন জবাব চাই! দিতে হবে! আচ্ছা বলো তো! এর প্রকৃত জবাব কার কাছে মিলবে!
যেখানে কবির সত্য কলম দিয়ে কিছু লেখা বিকৃত করে প্রতিনিয়ত শর্তসাপেক্ষে পুস্তক বন্দি হয়! হয়রানিতে
দূরত্ব কমিয়ে যে কলম কবিতার সঙ্গে পাঠকের মধ্যে মিলন ঘটাতে সংকল্প সেতু নির্মাণের লক্ষ্যে খরস্রোতা পাপী হৃদয়ের নাব্যতা মাপতে, নতুন নতুন কথার কৌশল নিচ্ছে!
কবিতা সম পৃথিবী হোক! অবহেলিত জনগোষ্ঠীর স্বপ্ন আংশিক হলেও বাস্তবে ফিরে আসুক! কবির রকমারি ভাবনা গুলো স্বর্গের সুঘ্রাণ নিয়ে ঘর, পাড়া মহল্লার অলিতে গলিতে আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠুক!
যদিও তা চাইছে না কিছু উপরতলায় বসা অসুস্থ সুখ বিলাসী নরপিশাচ! তারা যে অসহায়ের কাঁধে পা রেখে বিত্ত বৈভবের রোষানলে পড়ে, সৃষ্টি মাঝে চালাচ্ছে ধংসের অপপ্রয়াস!

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।