কর্ণফুলির গল্প বলা সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে মনিরুল ইসলাম (পর্ব – ৬)
by
·
Published
· Updated
হেরফের
-আচ্ছা সাজান তােমার ছেলে যখন অন্যায় করেছে তখন তােমাদের তাে সাজা নিতেই হবে।তােমার কথা ভেবে আমরা সিদ্ধান্ত নিলান পাচ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে এবং নবাবের হাতধরে তােমার ছেলেকে ক্ষমা চাইতে হবে।
-বড়ােমিঞা, আমার-
-কোনও কথা নয়। শালিসের সিদ্ধান্ত তােমাকে মানতেই হবে।
সবাই চুপচাপ দাঁড়িয়ে ভয়ে কেউ কোনও কথা বলছে না। দর্শকের মধ্যে থেকে মাস্টার বলে
উঠল–
-বড়াে মিঞা আমার কিছু বলার ছিল।
-ও মাস্টার কখন এলে, এসো এসো এখানে এসো। বলো তুমি কি বলবে?
-না মানে আমি বলতে চাই ফরিয়াদি যখন বলার সুযােগ পেল তখন আসামীকেও কিছু বলতে দেওয়া হোক।
-না না, একবার যখন সিন্ধান্ত হয়ে গেছে তখন আর নতুন করে আলােচনা করার দরকার নেই
মেম্বার বলে উঠল ।
-বড়ােমিঞা –
-না মাষ্টার আর কোনও কথা নয়। মেম্বার সাহেব আমরা দীর্ঘকাল ধরে শালিস করে
আসছি। কখনও কেউ আমাদের সিদ্ধান্তের উপর কথা বলেনি। কিন্তু আজ যখন মাস্টার আসামীকে বলতে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছে তখন আমরা নিশ্চয়ই আসামীকে সেই সুযােগ দেব। সবাই কি
বল ?
-সবাই একবাক্যে বলে উঠল হা হা ঠিক ঠিক।
-মাষ্টার তুমি সামনে এসাে। সকলের পক্ষ থেকে আমি তােমাকে অনুমতি দিচ্ছি আসামীকে ডেকেতার কাছ থেকে শােন।
-মাস্টার সামনে এসে বসল। রিন্টুকে ডাকল। রিন্টুও সামনে এসে দাঁড়ালাে। নবাবের দিকে
তাকিয়ে বলল তােমার স্ত্রী-মেয়ে এসেছে, থাকলে তাদেরও সামনের দিকে ডাকো।
-মেয়ে আসেনি বউ এসেছে।
-আচ্ছা তাতেই হবে। বড়াে মিঞা আমি আসামীকে জিজ্ঞাসা করার আগে ফরিয়াদিকে ক’টি
কথা জিজ্ঞাসা করার অনুমতি চাইছি।
-তােমাকে অনুমতি দেওয়া হল, তুমি জিজ্ঞাসা করাে।
-নবাব আলি তােমার মেয়ে যে মােরাইল ব্যবহার করে সেটি কোন্ দোকান থেকে কেনা
হয়েছিল?তার বিল আছে কি? আর সাইকেল, ঘড়ি কোথা থেকে কিনেছিল ?
নবাব আলি ও তার স্ত্রী দুজনে দুজনের মুখ চাওয়া চাওয়ি করতে লাগল। উপস্থিত লােকজন সকলে কানাঘুসাে করতে লাগল।
-বড়াে মিঞা নবাব আলি গরিব মানুষ। কবে কোন জিনিসটা কিনেছে তার বিল রাখা ওর
পক্ষে সম্ভব ? আর আমরাও বা ক’জনে সেটা পারি বলল মেম্বার।
-মেম্বার সাহেব এর প্রতিটি বিল আমার কাছে আছে। আর সেগুলাে সব রিন্টুর নামে।
-মাস্টার হেরফেরটা বুঝতে পারলাম না, গুছিয়ে বল।