ক্যাফে ধারাবাহিক গল্পে মনোরঞ্জন ঘোষাল (পর্ব – ৩)

টলি ট্যাব আবিষ্কার
পরের দিন সকালে তাকে উত্তর দিলাম। আমি ওখানে যাব। তবে তার জন্য আমাকে একটা সপ্তাহ সময় দিতে হবে। বাড়িতে বিশেষ কাজে ফিরে আসার জন্য।
ও জিজ্ঞেস করল – “ঠিক সাত দিনই লাগবে?”
আমি বললাম- কাজটি এক দিনের বা বড় জোর দু দিনের। কাজ সেরে জিনিস পত্র গুছিয়ে আসতে যা সময় লাগবে সেই কটা দিন তো দিতেই হবে।
আমার কথায় ও রাজি হয়ে গেল। আমি তৎপরতার সঙ্গে বাড়ি ফিরে এলাম। আর ও কটা দিন আমার অপেক্ষায় ওখানেই থেকে গেল। কথা হল আমি ফিরে গেলে দু জনে এক সঙ্গে সেই দ্বীপের উদ্দেশ্য রওনা দেব।
আমি আমার কাজ গুছিয়ে। প্রয়োজনীয় যন্ত্র সামগ্রীতে নিজেকে সজ্জিত করে বেরিয়ে পড়লাম লণ্ডনের উদ্দেশ্যে। যাবার পথে ডেনিয়লকে আমার যাবার খবর দিয়ে দিলাম। যাতে সে নিজে প্রস্তুত হয়ে থাকে। আমি যাওয়া মাত্রই যেন সেই দ্বীপের উদ্দেশ্যে রওনা দিতে পারি।
১লা অগাস্ট। লণ্ডনের সময় সকাল দশটা। দুজনে জাহাজে চড়ে বসলাম। গন্তব্য সেই দ্বীপ। যার ঠিকানা আমি এখনও জানি না।
ডেনিয়লের এই জাহাজটি ছোট হলেও খুব দ্রুত গামী। য়ুরোপের পাশ ঘেঁসে অতলান্তিক সাগরের বুকে ভেসে চলেছে এখন।
হঠাৎ সেটি বাম দিকে বাঁক নিয়ে ভূ মধ্য সাগরে প্রবেশ করল। ভূ মধ্য সাগরের তীরবর্তী মনোরম সবুজালি শোভা আমার দেখতে ভারী ভাল লাগে। আমি বাইনো কুলারে সেই শোভা দেখে চলেছি।
দূরের গাছ পালা গুলো হঠাৎ যেন কাছে সরে এল। তার কিছুটা পর থেকেই শুরু হল যেন মরুভূমি।
বুঝলাম আমাদের জাহাজটি এখন সুয়েজ খালে প্রবেশ করেছে। বই পড়ে জেনে ছিলাম যে। এই খালটি প্রাকৃতিক নয়। কৃত্রিম। মানুষে তৈরী করেছে। যান চলা চলের সুবিধার জন্য।
তার পর জাহাজ এসে পড়ল আরব সাগরে। বাঁ দিকে আমার দেশ ভারতের গা ঘেঁষে জাহাজ এগিয়ে চলেছে দক্ষিণ মুখি হয়ে।
তখন আর চুপ থাকতে পারলাম না। ডেনিয়লকে বলে ফেললাম যে। তুমি যখন এই পথেই যাবে আমার দেশের পাশে দিয়ে। তখন আমাকে মিছি মিছি অত দূরে টেনে নিয়ে যাবার দরকার কী ছিল? আমি এখানের কোথাও থেকে জাহাজে উঠে পড়তে পারতাম। শুধু শুধু সময় আর জ্বালানি নষ্ট হল।
সে বলল- “মনের মধ্যে ঐ চিন্তার বশবর্তী হয়ে আমি বলে উঠতে পারে নি তোমাকে। তার জন্য দুঃখিত!” তবে সময় নষ্ট হলেও জ্বালানি সমস্যাটা অতটাও বড় নয়। আমি ভূলে গিয়ে ছিলাম যে ওকে এই জাহাজ বানানোর জন্য আমি একটি বিশেষ পরমাণু রিএক্টর দিয়েছিলাম। যেটি যা খুশি পরমাণু জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করতে পারে। এই মনে কর এক খামচা মাটি। কিংবা এক আঁচলা সমুদ্রের জল। যা খুশি দিলেই হবে। তবে সেটি বস্তু হওয়া চাই। তবে মন চিন্তা এগুলি বস্তু নয় তাই এদের ওটিতে জ্বালিয়ে ফেলা যাবে না।