সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে মলয় দাস (পর্ব – ৬)

পরিযায়ীর কথা।।পরিযায়ী

অন্ধকার যতো গাঢ় হতে থাকে অষ্পট হতে থাকে আলো পরিযায়ী মন ততো ডুব দেয় স্বপ্ন পুকুরে,রত্নখচিত স্মৃতিরা উঠে আসে তেমনি এক স্মৃতিমেদুরতার গল্প বলবে পরিযায়ী তার শৈশবের।।প্রায় এক বিঘা জমির এক প্রান্তে বেড়ার বাড়ি;বারান্দায় দুটি তক্তোপোশ মাঝে পড়ার টেবিল,ভিতরের ঘরে বড়ো তক্তোপোশ লোকজন এলে মাটিতে লম্বা বিছানা সেই ঘর পেড়িয়ে ঠাকুর ঘর আর বড়ো ঠাকুমার তক্তোপোষ সেই ঘর পেড়িয়ে রান্না ও খাবার ঘর।রান্না ঘরের পাশ দিয়ে আম গাছ তার সাম্রাজ্য বিস্তার করে মহীরূহ রুপ নিয়ে স্বাদের রাজত্ব করে গেছে সেই স্বাদের তৃপ্তি আজও কেউ কেড়ে নিতে পারে নি!গ্রীষ্মের সন্ধ্যায় হ‍্যারিকেনের আলোয় পড়াশুনা চলতো,বাড়ির বয়ষ্করা এদিক ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে সারাদিনের ক্লান্তি মুছতো।শৈশবের অপার বিষ্ময়ে ছোট ঠাকুমার কাছে রামায়ন,মহাভারত,রুপকথার গল্প শুনতো, ঠাকুমার পরস্তাবের রাত্রি তালপাতার পাখার হাওয়ায় যেন আরব‍্যরজনীরা ভীর করে আসতো।।আজ শহরতলির ইট কাঠের জঙ্গলে পরিযায়ী না খুঁজে পায় সেই শৈশব,না পায় সেই জ‍্যোৎস্নামাখা আরব‍্যরজনীর গল্প,না পায় সেই তালপাতা পাখার হাওয়া,তখনো তো পৃথিবী দূষিত হয়নি নি পরিবেশ না সম্পর্ক,এ সি র ঠান্ডা ও সেই তৃষ্ণা মেটাতে অক্ষম।।সেই আরব‍্যরজনীর চরিত্ররা আজ আর নেই আজ আর ঠাকুমাদের স্নেহ ভরা স্পর্শ কেড়ে নিয়েছে মোবাইল,কম্পিউটার আর উচ্চাশার ইঁদুরে দৌড়,দৌড়,দৌড়।।আবেগ আজ শরশয‍্যায় স্বেচ্ছা মৃত্যুর অপেক্ষায়।।পরিযায়ী হেঁটে চলে আর পরস্তাবের গল্প এঁকে চলে অন‍্য পরিযায়ীর সন্ধানে।।
পরিযায়ীর কথা আপাতত শেষ আবার কখনো জীবনের অন্য গল্পের উপাখ‍্যান নিয়ে হাজির হবে পরিযায়ী ততোদিন অপেক্ষা সূর্যোদয়ের জন্য।।ধন‍্যবাদ
Spread the love

You may also like...

error: Content is protected !!