।। ত্রিতাপহারিণী ২০২০।। T3 শারদ সংখ্যায় মণিমালা চ্যাটার্জী
বন্ধন ও মুক্তি
চিন্তার নেই ভয়,নেই কোনো বন্ধন।
মুক্ত বিহঙ্গের মত তার দুই অদম্য ডানার উড়ান,
পার করে নিয়ে যায় তাকে এক আকাশ দুঃখ পারাবার,
মনের গোপন কুঠুরি ছেড়ে সহস্র আলোকবর্ষ পার করে,
রাতের অাঁধারে পাড়ি দেয় স্বপ্নের দেশে,
একবুক আলোর প্রত্যাশায়,হয়তো পৗেঁছয় সূর্যের খুব কাছে,
প্রতীক্ষা রাত্রি ভোরের, অপেক্ষা আলোকময় সূর্যের।
দিনের আলোয় শুরু হয় আকাশ পথে প্রত্যাবর্তন তার,
সূর্যের পাশ দিয়ে,পৃথিবীর ঘরে ঘরে,
তার ঝলসানো ডানার পোড়া পালকের গন্ধ ছড়িয়ে ,
তবুও আবার সে খামখেয়ালি মন নিয়ে, অন্য কোনো দিন,
ঝলসানো ডানার ঝরা পালক দিয়ে লিখবে তার অভিযান।
কিন্তু প্রেমের আছে ভয়,আছে বিশ্বময় বন্ধন,
মুক্তি নেই, আছে হৃদয়ের গভীর আকাঙ্ক্ষার সুখী গৃহকোণ ,
তার প্রাণপণ বাহুবন্ধনে আছে অনন্ত প্রাচীর,
ভয়কে জয় করার চিরন্তন বিপ্লবের মৌন পাহাড়,
সাগরের বেলাভূমির বালুরাশিতে, তুষার শুভ্র বরফের প্রসারতায়,
ভালবাসা এঁকে যায় তার পদচিহ্ন,
জীবনের জয়গান গেয়ে।
প্রেম বাঁধা পড়ে প্রকৃতির মোহময় দুর্বার টানে,
স্বর্গের সুষমা নিয়ে ভালবাসা নেমে আসে ভূমির আকর্ষণে,
তার সর্বংসহা,সর্বগ্রাসী অনুভূতির চিরনবীন অনুরাগে,
হৃদয়ের গোপন চোরা গলির লুকোনো ভাবনারা মুক্তি পায়,
ভালোবাসার বন্ধনের আশ্বাসে,বাসা বাঁধে ,দূরে অন্য কোন ছায়া পথে।
পুনর্জাগরণ
নিস্তব্ধ সকলের রাত্রি,আমার রাত বাঙ্ময়।
হৃদয়ের অন্তঃস্থলে,উপলব্ধ,অনুভূত
এক সর্বব্যাপী সত্তার উপস্থিতি,শান্তিময়।
অপ্রকাশিত কান্না,নির্যাতিত মনন প্রশমিত।
মস্তিষ্কের প্রতিটি কোষ ধ্বনিত হয় অবরুদ্ধ গুঞ্জনে,
“তুমি কথা কও” ;অবচেতনে হৃদয় আমার।
তোমার পৃথিবী অতন্দ্র চিরাশাশ্বত জাগরণে;
স্বপ্নালোকে মোনালিসা,ম্যাডোনা তোমার আবিষ্কার।
আমার দৃষ্টি ভেদ করে তামসি রাত্রির ক্লান্তি,
নিরাশ তারা সূর্যের নিষ্প্রভ আলোয়,
কারো নিরুচ্চার,অস্বচ্ছ,রহস্যময় উপস্থিতি,
সবই কি ব্যাঙ্গাত্মক, নাকি মূকাভিনয়?
“তুমি দেখো”! অনেকে শায়িত,সম্মানিত , প্রসন্নময়।
প্রতীক্ষায়,তোমার স্পর্শ দত্ত শুভেচ্ছার,
না! পশ্চাদাপসারণ অবাঞ্ছিত, তোমার জ্ঞান প্রশ্নময়।
হৃদয়ে উচ্ছ্বসিত প্রবাহ কি তরল প্লাজমার?
তোমার সময় প্রবহমান,অক্লান্ত,অস্তিত্ব বিতর্কিত,
তোমার আত্মা শাশ্বত, স্রোতসন্ধানী,মিতব্যয়ী।
তুমি শৈলশিরা হিমাদ্রী, সূর্যের মতো ভাস্বর প্রজ্জ্বলিত,
তোমার আত্মার পুনর্জাগরণ হক অমিত শক্তিদায়ী।