T3 || কবিতা দিবস || বিশেষ সংখ্যায় মৌমিতা চ্যাটার্জী

প্রকৃতি ও প্রেম
কেউ খুব কৌতুহলে প্রশ্ন রেখেছিল,
“প্রেম ব্যতীত কী আর ভাবনাই আসে না?”
নিরুত্তর আমি…অন্তর্জগতের সূক্ষ গলি বেয়ে, মান অভিমানের নীল আঁচল উড়িয়ে, যুবতী ঘাস থেকে জরাগ্রস্থ হিজল, বট- সর্বত্র হাতড়ে, বুকে তুলে নিলাম এক আদিম উপলব্ধি,
“যে পৃথিবীর কোনায় কোনায় প্রেম,তাকে অস্বীকার করি কি করে?
শুনেছি ধ্বংসের ভীড়ে না কী প্রেম অর্থহীন!
আমি তো প্রেম খুঁজে পাই প্রতিটি অনু-পরমানুর ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর কণায়।
নিদাঘের খরতাপ, বর্ষার রিমঝিম, শরতের সোনাঝরা রোদেলা সকাল, হৈমন্তী সাঁঝবেলা, শীতের উত্তুরে হাওয়ার খুনসুটি,
চৈতালী বিকেলের সূর্যাস্ত, সবাই প্রেমজ উপহারের ডালি সাজিয়ে নিয়ে আসে আমার বিশ্বস্ত চৌকাঠে।
ঝরাপাতার মর্মর, নববিকশিত আরাঁধার মুকুল, বউ কথা কও, নদীর ছলকে ওঠা ঢেউয়েরা, ঐ দূরদেশী রাখালিয়া বাঁশীর সুর।
ওরা আমাকে বড় ভালোবাসে।
ওরা জানে, নির্জনতার আবহে দাঁড়িয়েও আমি প্রেমের কাঙাল কিনা!
প্রেমেই সৃষ্টি, সৃষ্টিতেই নিহিত প্রেমের অক্ষত বাণী।
সতী-হারা ধূর্জটির প্রলয় নৃত্য- সেও তো বিরহপীড়িত হৃদয়ের বিধ্বংসী
‘প্রেমেরই’ নিদর্শন!
ব্রহ্মাণ্ডকে মনসিজ যে পঞ্চশরের বেষ্টনে বেঁধেছে, স্বয়ং ভোলানাথ যার মায়ায় আবদ্ধ,
তার কি নিঃশেষ আছে?
প্রেম, অবিনশ্বর,চিরন্তন।
প্রেমও যে, তার পিপাসিত প্রণয় কাতর হৃদয়ের প্রতীক্ষারত।
আমি আদ্যোপান্ত প্রেম পাগলিনী।
প্রেম আমার অন্তরের অরূপরতন,
তাকে বাদ দিলে,
অনিবার্য আমারই নিত্যতার অপসারন।