ধলেশ্বরীর অন্য ধারায় ভ্রমণ কাহিনী তে লোকমান হোসেন পলা

প্রজাপতি পার্ক, এখানে ১০৫ প্রজাতির প্রজাপতিকে চিহ্নিত করাছে

আগরতলা, (ত্রিপুরা): ত্রিপুরা রাজ্যের প্রায় ৭০ শতাংশ এলাকা পাহাড় ও সবুজ বনে ঢাকা। এই বনে রয়েছে নানা ধরনের জীবজন্তু, পাখি পোকামাকড় ইত্যাদি।
এই কীটপতঙ্গের সঙ্গে রয়েছে রং-বেরঙের অজস্র প্রজাতির প্রজাপতি। ত্রিপুরা রাজ্যে এই সব প্রজাপতির নানান প্রজাতিকে বাঁচিয়ে রাখা এবং সাধারণ মানুষসহ ছাত্র-ছাত্রীদেরকে দেখা সুযোগ করে দেওয়া এবং মানুষকে পরিবেশ প্রকৃতির প্রতি আগ্রহী করে তোলার জন্য ত্রিপুরা সরকারের বন দপ্তর একটি প্রজাপতি উদ্যান গড়ে তুলেছে।
রাজ্যের রাজধানী আগরতলা থেকে ১০২ কিলোমিটার দক্ষিণে রাজনগর এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে উদ্যানটি। এই উদ্যানের ওয়াইল্ড লাইফ ওয়ার্ডেন অমলেন্দু দেবনাথ জানান ৫ দশমিক ৫ হেক্টর জায়গাজুড়ে গড়ে উঠেছে এই উদ্যানটি।
এই উদ্যানে এখন পর্যন্ত ১০৫ প্রজাতির প্রজাপতিকে চিহ্নিত করা গেছে এখন পর্যন্ত। তবে, তাদের অভিমত এখানে আর অনেক প্রজাতির প্রজাপতি রয়েছে যেগুলোকে এখন চিহ্নিত করা যায়নি, এদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে।

পাশাপাশি তিনি আর জানান, প্রজাপতিদের খাবার ও বসার উপযোগী বিশেষ ধরনের ফুলের গাছ লাগানো হয়েছে। হোস্টপ্ল্যান্ট হিসেবে বিভিন্ন ধরনের ব্লক তৈরি করা হয়েছে। হোস্টপ্ল্যান্ট হচ্ছে এমন সব গাছ যেগুলোতে প্রজাপতি বসে, বিশ্রাম নেয় এবং বংশ বৃদ্ধির জন্য ডিম পাড়ে। সেসঙ্গে একটি গবেষণাগার রয়েছে যেখানে প্রজাপতির রিয়ারিং করা হয় অর্থাৎ ডিম, লার্ভা, পিউপা এবং পূর্ণাঙ্গ প্রজাপতির জীবনের এই চারটি ধাপের বৃত্তান্ত দেখা যায়।

পার্কের বিভিন্ন জায়গা থেকে ডিম সংগ্রহ করে একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রাসহ অনুষাঙ্গিক অন্যান্য বিষয় বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ফলে ডিম থেকে চারটি পর্যায় অতিক্রম করে পূর্ণাঙ্গ রূপ নিয়ে প্রকৃতিতে ফিরে যেতে পারে। আবার পর্যটক বিশেষ করে ছাত্র-ছাত্রীরা প্রজাপতির জীবনচক্র দেখতে ও খুব সহজে বুঝতে পারেন। প্রজাপতির আকৃতির ওয়াকিং ট্রেল অর্থাৎ হাটার জায়গা রয়েছে। এখন নতুন করে একটি এনক্লোজার তৈরি করার কাজ চলছে। এটি তৈরি হয়ে গেলে এখানে সারা বছর প্রচুর পরিমানে প্রজাপতি দেখা যাবে। এনক্লোজার হচ্ছে সুড়ঙ্গের মত যেখানে এমন পরিবেশ তৈরি করা হবে যাতে এর আশেপাশে সব সময় প্রজাপতি থাকে এবং পর্যটকরা এদের দেখতে পারেন। এমনিতে প্রজাপতি বেঁধে সারা বছর ডিম পাড়ে। বিভিন্ন মানুষ খুব আগ্রহ সহকারে এই প্রজাপতি উদ্যানটিতে ঘুরে বেড়ান বলেও জানান অমলেন্দু দেবনাথ।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।