ধলেশ্বরীর অন্য ধারায় ভ্রমণ কাহিনী তে লোকমান হোসেন পলা

নীলাচলে সুর্যাস্তের দৃশ্য মনে স্বর্গীয় অনুভূতি আনে

নীলাচল পাহাড়ি এলাকাটি নীলাচলে সুর্যাস্তের দৃশ্য আমাদের মনে স্বর্গীয় অনুভূতি আনেঅনেকেই স্বর্গভূমি বলে থাকেন।

নীলাচল পর্যটন কেন্দ্রটি বান্দরবান সদর থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরবর্তীতে এটি অবস্থিত। আর ভূমি হতে প্রায় ২ হাজার ফুট উঁচুতে টাইগার পাড়ায় যে পাহাড়টি রয়েছে তার উপরে অবস্থিত। এখানে রয়েছে এমন খোলা নীল আকাশ ,সবুজে ঘেরা পাহাড় এবং মেঘের অপরূপ মিতালী। এর সৌন্দর্য অতুলনীয়। সকালবেলার মেঘের খেলার খেলা এবং বিকেলে সূর্য অস্তের দুটি মনমুগ্ধকর দৃশ্য নীলাচল এর সৌন্দর্যকে পূর্ণতা রূপ দান করে।

নীলাচল থেকে বান্দরবান শহরের পুরো সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।

মেঘমুক্ত আকাশে কক্সবাজারর সমুদ্রসৈকতের অপুর্ব দৃশ্য নীলাচল থেকে পর্যটকেরা উপভোগ করতে পারেন। বিশেষকরে নীলাচলে সুর্যাস্তের দৃশ্য আমাদের মনে স্বর্গীয় অনুভূতি আনে। এই জায়গায় বর্ষা, শরৎ কি হেমন্ত— তিন ঋতুতে ছোঁয়া যায় মেঘ।

শহর ছেড়ে চট্টগ্রামের পথে প্রায় তিন কিলোমিটার চলার পরেই হাতের বাঁ দিকে ছোট একটি সড়ক এঁকেবেঁকে চলে গেছে নীলাচলে। এ পথে প্রায় দুই কিলোমিটার পাহাড় বেয়ে তাই পৌঁছুতে হয়। মাঝে পথের দুই পাশে ছোট একটি পাড়ায় দেখা যাবে ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর মানুষের বসবাস।

নীলাচলে সম্প্রতি নতুন কয়েকটি জায়গা তৈরি করা হয়েছে পর্যটকদের জন্য। এখানকার টিকেট ঘরের পাশে ‘ঝুলন্ত নীলা’ থেকে শুরু করে ক্রমশ নীচের দিকে আরও কয়েকটি বিশ্রামাগার তৈরি করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ‘নীহারিকা’ এবং ‘ভ্যালেন্টাইন’ পয়েন্ট। পাহাড়ের ঢালে ঢালে সাজানো হয়েছে এ জায়গাগুলো। একটি থেকে আরেকটি একেবারেই আলাদা। একেক জায়গা থেকে সামনের পাহাড়ের দৃশ্যও একেক রকম। তবে মূল নীলাচলের সৌন্দর্য অনেক বেশি। এখান থেকে পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায় আরও ভালোভাবে।

নীলাচলের বাড়তি আকর্ষণ হল এখানকার রিসোর্ট। নাম নীলাচল স্কেপ রিসোর্ট। সাধারণ পর্যটকদের জন্য এ জায়গায় সূর্যাস্ত পর্যন্ত অনুমতি আছে। তবে রিসোর্টের অতিথিদের জন্য সর্বক্ষণই খোলা এ জায়গা।

প্রবেশমূল্য
নীলাচল পর্যটন কমপ্লেক্সে জনপ্রতি প্রবেশ মূল্য ৩০ টাকা। নীলাচলে যেতে সড়কের টোল পরিশোধ করতে হয়। অটো রিকশা ৩০ টাকা, জিপ ৬০ টাকা। পর্যটকরা সকাল থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত নীলাচলে অবস্থান করতে পারবেন।

কিভাবে যাবেন
প্রথমে আপনাকে বান্দরবান শহরে যেতে হবে। ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন বান্দরবানের উদ্দেশ্যে কয়েকটি পরিবহন কোম্পানির গাড়ি ছেড়ে যায়। যেমন শ্যামলি, হানিফ, ইউনিক, এস আলম, ডলফিন- এর যেকোনো একটি বাসে চড়ে আপনি বান্দরবানের যেতে পারেন। রাত ১০ টায় অথবা সাড়ে ১১টার দিকে কলাবাগান, সায়েদাবাদ বা ফকিরাপুল থেকে এসব বাস বান্দরবানের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

চট্টগ্রাম থেকে বান্দরবান যেতে পারেন। বদ্দারহাট থেকে বান্দারবানের উদ্দেশে পূবালী ও পূর্বানী পরিবহনের বাস যায়। এসব বাসে জনপ্রতি ২২০টাকা ভাড়া রাখা হয়।

এরপর বান্দরবান বাস ষ্টেশন থেকে নীলাচল পর্যটন কমপ্লেক্স যেতে অবস্থানের সময়ানুযায়ী অটো রিকশার ভাড়া পড়বে ৫শ’ থেকে ১ হাজার টাকা। আর চাঁদের গাড়ি কিংবা জিপ গাড়ির ভাড়া পড়বে ১ হাজার ২শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা।

পরিবহন ভাড়া
ট্রেনে ঢাকা হতে চট্টগ্রামঃ এসি- ৩৬৫-৪৮০ টাকা। নন এসি-১৫০-১৬৫ টাকা।

বাসে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামঃ এসি- ৫৮০-৭৯০ টাকা। নন এসি-২০০-২৫০ টাকা।

ঢাকা থেকে বাসে সরাসরি চট্টগ্রামঃ ৩৫০ টাকা

চট্টগ্রাম হতে বান্দরবনঃ ৭০ টাকা।

কোথায় থাকবেন
আপনি চাইলে নীলাচল স্কেপ রিসোর্টে থাকতে পারেন। নীলাচল স্কেপ রিসোর্টে তিনটি কটেজে ছয়টি কক্ষ আছে। প্রতিটি কক্ষের ভাড়া ৩ হাজার টাকা। এছাড়া রিসোর্টের অতিথিদের জন্য ভালো মানের খাবারের ব্যবস্থা করে থাকেন কর্তৃপক্ষ। যোগাযোগঃ ০১৭৭৭৭৬৫৭৮৯।

এছাড়া বান্দরবানে অসংখ্য রিসোর্ট, হোটেল, মোটল এবং রেস্টহাউজ রয়েছে। যেখানে ৬০০ থেকে ৩ হাজার টাকায় রাত্রিযাপন করতে পারবেন।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।